Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মহাসড়কে লকডাউন নেই!

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ৫:৪০ পিএম

করোনা সর্তকতায় লকডাউন ঘোষনা মহাসড়কে অকার্যকর হয়ে উঠছে। হাইওয়ে পুলিশ কর্তব্যরত থাকার পরও লকডাউনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঔষধ বহনের কার্ভাড ভ্যান ভর্তি নারী, পুরুষ শিশু চলে এসেছে সিলেটে। এরা সকলেই করোনার ‘হটস্পট’ খ্যাত নারায়নগঞ্জের গার্মেন্টসে ছিল কর্মরত। তবে দায়িত্বরত পুলিশ মহাসড়কে কার্ভাড ভ্যানকে রহস্যজনকভাবে ছেড়ে দিলেও, শেষ গন্তব্যে সিলেটের বিশ^নাথের রামপাশা ইউনিয়নের পুরানগাঁও গাছতলা এলাকার স্থানীয় জনতার সচেতনতায় কার্ভাড ভ্যানটি পাকড়াও করতে সমর্থ হয় স্থানীয় বিশ^নাথ পুলিশ। এসআই দেবাশীষ সকাল সাড়ে ১০টায় ঘটনাস্থলে পৌছে খালি কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করলেও পলাতক পাওয়া যায় চালককে। কার্ভাড ভ্যানে একজন হেলপার এসময় দেখা যায়, সে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানায় তারা হবিগঞ্জ, শায়েস্তাগঞ্জ, শেরপুর, দক্ষিণ সুরমা এলাকায় লোকজন নামিয়ে তারপর বিশ^নাথে এসে পৌছে। তাদের কার্ভাড ভ্যানটি লোকে ভর্তি ছিল, রাস্তায় পুলিশকে তার ্ওস্তাদ (চালক) ম্যানেজ করেই এখান পর্যন্ত এসেছে। পরবর্তীতে পুলিশ কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসলেও, হেলপারও কৌশলে সটকে পড়ে বলে জানান, এসআই দারোগা। বিশ^নাথ পুরানগাঁও ১৫জন নারী, পুুরুষ, শিশুকে নামিয়ে দেয়া হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র। পুরানগাও গ্রামের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অধিবাসী জানান, আগত ১৫জনই তাদের গ্রামের। এদের মতো আরো ৮জন গত ১৪ দিনে গ্রামে এসেছে। লকডাউন এড়িয়ে গাড়িটি বিশ^নাথ পর্যন্ত পৌছার ঘটনায় সচেতন মানুষ হতবাক। একই সাথে আগত লোকজনের মাধ্যমে করোনা ঝুঁকির আতংক দেখা দিয়েছে বিশেষ করে পুরানগাঁও। গ্রামের আমজনতার এখন চরম মানসিক অশান্তির মধ্যে রয়েছেন।
বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম মুসা বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ১৩জনকে উদ্ধার পরবর্তীতে নিজ নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত সাপেক্ষে। পুলিশের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীও। কার্ভাড ভ্যানটি পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে, এখনও চালক পলাতক ।
ইনকিলাব স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রবাসী অধ্যূষিত সিলেটের বিশ^নাথের প্রত্যন্ত এলাকার গুটিকয়েক পরিবার কর্মসংস্থানের তাগিদে পরিবার পরিজন নিয়ে বিশেষ করে নারায়নগঞ্জে অবস্থিতি গার্মেন্টসে চাকুরী করে। ইতিপূর্বে লকডাইন এড়িয়ে বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত ভাবে প্রচুর লোকজন এলাকায় চলে এসেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) ভোর রাতে ১৫ জন নারী, পুরুষ, শিশু চলে আসে বিশ^নাথের পুরানগাঁও গাছতলায়। এখানে গোপনে লোকদের নামিয়ে দেয় চালক। তারপর বিশ্রানের জন্য কোথায় অবস্থান নিতে যায় নির্ভাবনায় চালাক। কিন্তু বিধিবাম, গোপনে নিয়ে আসা যাত্রীদের নামিয়ে দিলেও সেহরী খেয়ে ফজরের নামাজে আসা স্থানীয় মুসল্লীদের নজরে পড়ে কাভার্ড ভ্যানটি (মেসার্স রূপা এন্টারপ্রাইজ ঢাকা মেট্রো-ড, ১৪-৬০২৪)। এক পর্যায়ে তারা খবর দেয় বিশ^নাথ থানা পুলিশকে। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার পর বেরিয়ে আসে নারায়গঞ্জ থেকে ঔষধ বহনের আড়ালে লোকজন নিয়ে আসার ঘটনা। স্থানীয় পুরানগাঁও গ্রামের ওয়ার্ড সদস্য শামীম আহমদ বলেন, কাভার্ড ভ্যানে আসা সকলেই তার গ্রামের। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও পুলিশের পরামর্শে আগত সকলকেই হোম কেরায়ারেন্টিন নিশ্চিত করা হয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় খাবারও সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এভাবে লুকিয়ে লকডাউন অমান্য করে চলে আসার মধ্যে দিয়ে প্রমান হয় মহাসড়ক নিরাপদ নয়, সেকারনেই করোনার ঝুঁকি বাড়ছে প্রত্যন্ত এলাকায়। এই লোকজন আসতে না পারলে, তাদের গ্রাম সহ গোটা উপজেলা নিরাপদ থাকাটা অনেকাংশে সহজ ছিল। কিন্তু এখন আতংক সহ ঝুঁকির মুখে স্থানীয় মানুষ। এছাড়া তিনি বলেন, ্ওই কার্ভাড ভ্যানে আসা তার এলাকার লোকজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেলেও রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে আসা মানুষগুলোর হদিস সন্থান জরুরী। অন্যথায় করোনা পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ