বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান আজ বুধবার সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় হাওরে কৃষক ও শ্রমিকদের ধান কাটায় উৎসাহ দিতে এবং বোরো ধান কাটার অগ্রগতি দেখতে পরিদর্শন করেন।
এ সময় কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, এমপি বলেন, এ সময়টা বোরো ধান কাটার মৌসুম। আমাদের সারা বছরের মোট চাল উৎপাদনের অর্ধেকের বেশি যোগান দেয় বোরো ধান। সেজন্য, শুধু হাওর নয়, সারা দেশের ফসল সুষ্ঠুভাবে ঘরে তোলা জরুরি। এটি করতে পারলে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা অনেকাংশে নিশ্চিত হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, করোনার বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যেও হাওরের বোরো ধান কাটার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকদের আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকরা এসে ধান কাটছেন। পাশাপাশি হাওরের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ধান কাটা যন্ত্রপাতি দেয়া হয়েছে। প্রতিকূল পরিবেশে হাওরের কৃষক যাতে সহজে যন্ত্রপাতি কিনতে পাওে সেজন্য যন্ত্রের দামের ৩০% দেয় কৃষক এবং ৭০% দেয় সরকার । একই সাথে, দেশের অন্য এলাকা থেকে হাওরের আগাম বোরো ধান কাটার জন্য কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার নিয়ে আসা হয়েছে। এর ফলে ইতোমধ্যে হাওরের ৬৭% বোরো ধান কৃষক ঘরে তুলতে পেরেছে।
ইতোমধ্যে সারাদেশে ধান কাটা সহজতর করতে ২০০ কোটি টাকার মাধ্যমে প্রায় ১৩০০টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ৯৩৪টি রিপার, ২২টি রাইস ট্রান্সপ্লানটারসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের কাছে সম্প্রতি পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। এসময় কৃষিমন্ত্রী ও পরিকল্পনা মন্ত্রী নতুন ২টি হারভেস্টার কৃষকদের মাঝে বিতরণ করে ২য় ধাপে প্রাপ্ত ১৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, নতুন ২টি হারভেস্টার কৃষকদের উৎসাহ দিতে প্রদান করা হলো। সরকার ধান কাটার জন্য জরুরিভিত্তিতে যন্ত্রপাতি দিয়েছে। এসব যন্ত্রপাতির মান খুব ভাল এবং দ্রুত ধান কাটা যায়। কৃষকেরা এগুলো পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত। পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকদের আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ধানকাটা চলছে। আমরা আশা করছি কৃষকেরা সময়মতো ধান ঘরে তুলতে পারবে।
পরিদর্শনের সময় সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবর রহমান মানিক, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান, সিলেট ও সুনামগঞ্জ সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য শামিমা শাহরিয়ার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো.শাহজাহান কবীর, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বিপিএম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন, সুনামগঞ্জ পৌর মেয়র নাদের বখত এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মাদ সফর উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। খাদ্য সংকট বা দুর্ভিক্ষের আশঙ্কাও করছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে বার বার কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দিচ্ছেন। কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল ফলানোর আহবান জানাচ্ছেন। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে হাওরাঞ্চলের কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া- এই সাতটি জেলায় এবছর শুধু হাওরে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে (২৮ এপ্রিল) পর্যন্ত কর্তন হয়েছে ২.৯৯ লাখ হেক্টর জমির ধান যা শতকরা ৬৭ ভাগ। সিলেটে ৭০%, মৌলভীবাজারে ৭৭%, হবিগঞ্জে ৬৫%, সুনামগঞ্জে ৭০%, নেত্রকোনায় ৭৮%, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৭৩% এবং কিশোরগঞ্জে ৫৪% বোরো ধান কর্তন হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।