Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সত্যালোকের সন্ধানে - ইসলামে আত্মিক ইবাদতের গুরুত্ব

প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
আত্মসংযম : ব্যক্তি জীবনে এবং সমাজ জীবনের সর্বত্রই এমন কিছু নাজুক মুহূর্ত আসে যখন কোন বৃহৎ কামিয়াবী অথবা বিফলতার দ্বারা মানুষ অধীর হয়ে পড়ে। এ সময়ে ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে কাজ করা খুবই কঠিন। কিন্তু আত্মসংযমের এটাই আসল সময় এবং এর দ্বারাই ব্যক্তি ও সমাজে দেখা দেয় হৃদ্যতা, সহমর্মিতা ও একতার সুদৃঢ় বন্ধন।
পৃথিবীতে খুশী ও আনন্দ, সুখ ও দুঃখ হচ্ছে আপেক্ষিক। তাই উভয় অবস্থায়ই মানুষের উচিত আত্মসংযম অবলম্বন করা এবং নিজেকে বশে রাখার প্রবণতা গ্রহণ করা। অর্থাৎ নিজেকে এমনভাবে সংযত রাখা যে, খুশী ও আনন্দের ফলে যেন মনেপ্রাণে অহঙ্কার ও অহমিকার ভাব পয়দা না হয়। অপরদিকে দুঃখ ও বেদনার সময়ও যেন অধীর, উদাস ও বিষণœ না হয়। এই উভয় অবস্থায় সীমার ভিতরে থাকার একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে দৃঢ়তা ও আত্মসংযম। মানব জীবনের বহুমুখী প্রবৃত্তিকে সুসংহত করার এটাই একমাত্র পথ। আল-কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, “যদি আমি নিজের পক্ষ হতে মানুষকে কোন রহমত ও মেহেরবানী দান করি এবং পরে তা উঠিয়ে নেই, তাহলে সে নিরাশ ও অকৃতজ্ঞ হয়ে যায়। আর যদি নেয়ামতের আস্বাদ গ্রহণ করাই কোনও মুসীবতের পরে, তখন বলে সকল অমঙ্গল আমা হতে দূর হয়ে গেছে। অবশ্যই তখন সে খুশী ও আনন্দে নিমগ্ন হয়। কিন্তু যারা নফসের উপর ক্ষমতাবান এবং পুণ্য কর্মে যতœশীল তাদের জন্যই রয়েছে ক্ষমা এবং বৃহত্তর বিনিময়। (সূরা হুদ : রুকু-২)
দায়িত্ব পালনে দৃঢ় থাকা :
গোলযোগপূর্ণ ঘটনাবলী ও বিপদপূর্ণ অবস্থায় ধৈর্য সহিষ্ণুতার সাথে কাজ করার এক ধাপ উপরে যে আত্মসংযমের মর্যাদা তা নতুন করে বলার অবকাশ নেই। আত্মসংযমী মানুষ জীবনভর যে কোন অবস্থায় সুদৃঢ়ভাবে নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য নিষ্ঠার সাথে পালন করতে পারে। ধর্মীয় ফরায়েজ ও হুকুম-আহকাম পালন করা সবসময়ই মানুষের কাছে কঠিন বলে মনে হয়। এমতাবস্থায় জীবনভর ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার সাথে এ সকল কাজ আদায় করাই হচ্ছে প্রকৃত ধৈর্য ও আত্মসংযম। মোটকথা, সকল কাজে আল্লাহর হুকুমের ফরমাবরদারী ও আনুগত্য প্রকাশে মনেপ্রাণে লেগে থাকা একটি বড় পরীক্ষা। এ জন্যই আল-কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, “তিনি নভোম-ল-ভূম-ল ও তন্মধ্যস্থ সব কিছুর প্রতিপালক সুতরাং তাঁরই ইবাদত-বন্দেগী কর এবং ধৈর্যসহ আনুগত্য প্রকাশ কর।” (সূরা মারইয়াম : রুকু-৪)
অপর এক আয়াতে নামাজ আদায় করা এবং স্বীয় পরিবার-পরিজনদেরকে এর জন্য তাকীদ করার প্রসঙ্গে আল-কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, “তোমার পরিবার-পরিজনদেরকে নামাজ আদায় করার নির্দেশ দাও এবং নিজেরাও এর উপর কায়েম থাক।” (সূরা ত্বাহা : রুকু-৮)। মোটকথা, সারাজীবন এই দায়িত্ব পালন করার মনোবৃত্তি গ্রহণ করতে হবে। নি¤œল্লিখিত আয়াতসমূহে সম্ভবত সবর শব্দটি এই অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। আর যে সকল লোক আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়ার দিনকে ভয় করে, আল্লাহপাক তাদেরকে এই খোশখবরী দান করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে, “সুতরাং আল্লাহপাক তাদেরকে ঐ দিনের বিপদ হতে উদ্ধার করেছেন এবং তাদেরকে সুঠাম, সুধীর ও আনন্দের সাথে সম্পৃক্ত করেছেন এবং তাদের ধৈর্যধারণ করার জন্য জান্নাত ও রেশমী পোশাক প্রদান করেছেন।” (সূরা দাহর : রুকু-১)। ঐ সকল লোক যারা আল্লাহর দরবারে তাওবাহ করে ঈমান আনে, নেক কাজ করে, প্রতারণার কাজে অংশগ্রহণ না করে, নিরর্থক ও বেহুদা কাজে যোগদান না করে এবং নৈতিক পবিত্রতা অর্জনে সচেষ্ট এবং আল্লাহর নির্দেশসমূহ শ্রবণ করে পূর্ণ আনুগত্যসহ তা পালন করে এবং নিজের ও নিজের সন্তান-সন্ততির মঙ্গলের জন্য নেক দোয়া করে, মহান আল্লাহপাক তাদেরকে ফজলে ও করমের খোশখবরী দান করেন। আল-কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, “ঐ সকল লোকদের ধৈর্যের বিনিময়ে আল্লাহপাক জান্নাতের প্রকোষ্ঠ দান করবেন।” (সূরা ফুরকান)। এই দুটি আয়াতে ধৈর্যের মর্ম এই যে, নেক কাজসমূহ অনুকূল ও প্রতিকূল উভয় অবস্থায় সানন্দ চিত্তে জীবনভর আদায় করা। পক্ষান্তরে খারাপ কাজসমূহ চিত্তাকর্ষক ও আরাম-আয়েশে পরিপূর্ণ হলেও তা পরিহার করা। রাতে দুগ্ধ ফেননিভ কোমল বিছানা পরিত্যাগ করে আল্লাহর দরবারে সিজদাবনত হওয়া, স্বপ্নপূর্ণ নিদ্রা ত্যাগ করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা, নাজ ও নেয়ামতের প্রাচুর্য থাকা সত্ত্বেও রোজা পালন করা, দুঃখ ও বেদনার ভয় থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনকালে সত্য কথা বলা এবং সত্য-মত ও পথকে কবুল করা এবং সত্যের পথে সকল প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে মনের আনন্দে অগ্রসর হওয়া, সুদ ও অসদোপায়ে অর্থ উপার্জন পরিত্যাগ করা, রূপ ও সৌন্দর্যের অশুভ পায়তারাকে বর্জন করা ইত্যাদিই হচ্ছে সত্যিকার ধৈর্যের পরিচায়ক।
মোটকথা, শরীয়তের হুকুমসমূহ পালন করা তারপর জীবনভর এর উপর অবিচল থাকার মাঝে বহু স্তর ও শ্রেণী রয়েছে। যার সবকটিই কঠিন ও বাহ্যত বন্ধুর। এজন্য আল-কোরআনে এহেন ধৈর্যের বিনিময় ফল ও সুদূরপ্রসারী বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
উপরোক্ত আয়াতসমূহের বিশ্লেষণের প্রাক্কালে এই হাদীসটির কথাও স্মরণে উদিত হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, “জান্নাত নাখোশীর কাজসমূহ এবং দোযখ নফসানী আরাম-আয়াশের কাজসমূহ দ্বারা আচ্ছাদিত হয়ে পড়েছে।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
অর্থাৎ ঐ সকল পুণ্যের কাজ সম্পাদন করা যার বিনিময়ে জান্নাত রয়েছে তা খুবই কঠিন। অপরদিকে যে সকল কাজ দ্বারা দোযখের শাস্তি অবধারিত সেগুলো বাস্তব জীবনে খুবই আরামদায়ক মনে হয়। এই সমস্ত অনুকূল ও প্রতিকূল সুখ ও দুঃখপূর্ণ কার্যাবলী এবং নির্দেশসমূহের প্রতি ভীতিপ্রদ দৃষ্টিতে অবলোকন না করে, পূর্ণ সাহস ও ধৈর্যের আশ্রয় গ্রহণ করাই সফলতার চাবিকাঠি। কারণের মত ধন-সম্পদের প্রাচুর্য, রুজি ও রোজগারের অজ¯্র প্রবাহ অবলোকন করে যদি কাহারো মনে দাগ না কাটে, দেহ-মন এর জন্য লালায়িত না হয়, রসনায় পানির প্রসবণ সূচিত না হয়, সে অবস্থায়ই হবে পরিত্রাণের একমাত্র উপায়! বস্তুত হারাম মালের আধিক্য লাভের লালসা পরিহার করে হালাল সম্পদের তালাশে ধৈর্যসহ বিপদ-আপদের ছোবল সহ্য করা, এমনকি এর উপর অবিচল থাকা খুবই সাহসিকতার কাজ। এহেন সাহসিকতাপূর্ণ কাজের দ্বারা অবশ্যই শ্রেষ্ঠ বিনিময় লাভ করা যাবে এবং ধৈর্যশীলবান অবশ্যই পুরস্কৃত হবে এটাই আল্লাহর বিধান।
হযরত মূসা (আ.)-এর আমলে কারণের অঢেল সম্পদ প্রত্যক্ষ করে বহু লোক লোভী হয়ে পড়েছিল। কিন্তু যারা লালসাহীন চিত্তবৃত্তির অধিকারী ছিল, তারা এ সকল বিত্তবিভব অবলোকন করেও এর প্রতি লোভাতুর দৃষ্টিতে কখনো তাকায়নি। তারা মনে করত ধ্বংসশীল এই সম্পদ পরিহার করে চিরস্থায়ী আখেরাতের সম্পদ অর্জন করাই শ্রেয়। এ প্রসঙ্গে আল-কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, “যারা দুনিয়ার জীবনে সুখের প্রত্যাশী ছিল, তারা বলত, আহা! আমাদেরও যদি কারণের সমান সম্পদ হত? সে তো খুবই সৌভাগ্যশালী। আর যারা প্রকৃত জ্ঞানের অধিকারী ছিল, তারা বলতো, তোমাদের জন্য পরিতাপ! যারা আল্লাহর বিনিময় লাভ করেছে, ঈমান এনেছে, নেক আমল করেছে, তারাই সফলকাম। এই সফলতা ধৈর্যশীলদের জন্যই নির্দিষ্ট।” (সূরা কাসাস : রুকু-৮) এই বিনিময়ই সর্বোত্তম। কেননা এই বিনিময় চিরস্থায়ী ও অবিনশ্বর। আল-কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, “যা তোমাদের কাছে আছে, তা ফুরিয়ে যাবে এবং যা আল্লাহর নিকট রয়েছে তা চিরস্থায়ী। অবশ্য আমি এই সৌভাগ্য তাদেরকেই প্রদান করব, যারা ধৈর্য অবলম্বন করেছে, তাদের কাজের বিনিময় যে বিনিময় তারা লাভ করবে, তা খুবই উত্তম।” (সূরা নহল : রুকু-১৩)।
অপর এক স্থানে ইরশাদ হয়েছে, “তোমরা নামাজ আদায় কর, কেননা পুণ্য কর্মসমূহ পাপকে দূরীভূত করে দেয়, এই পয়গামের মাঝে নসীহত কবুলকারীদের জন্য রয়েছে উত্তম উপদেশ।” এরপর পুনর্বার ইরশাদ হয়েছে, “ধৈর্য অবলম্বন কর, কেননা পুণ্য কর্মশীলদের বিনিময় আল্লাহপাক কখনো বিনষ্ট করে না।” (সূরা হুদ : রুকু-১০)
ধৈর্যের পুরস্কার
ধৈর্যের বিনিময়ের কোন সীমা-পরিসীমা নেই। আল- কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, “ধৈর্যশীলদেরকে তাদের বিনিময় অসংখ্য পরিমাণে প্রদান করা হবে।” (সূরা যুমার : রুকু-২) যে সকল পুণ্যকর্ম প্রশংসনীয় গুণাবলী এবং উন্নত চরিত্রের বিনিময় দুনিয়া এবং আখেরাতে সবচেয়ে বেশি এর মাঝে ধৈর্য ও সবর অন্তর্ভুক্ত আছে। আল-কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, “অবশ্যই মুসলমান নারী ও পুরুষ বিশ্বাসী নর ও নারী, ইবাদত গুজার নর ও নারী, সত্যবাদী নর ও নারী ধৈর্যশীল নর ও নারী, দানশীল নর ও নারী, রোজাদার নর ও নারী, লজ্জাস্থান হেফাজতকারী নর ও নারী এবং আল্লাহপাককে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারীর জন্য আল্লাহপাক বিনিময় নির্ধারণ করেছেন, শ্রেষ্ঠতম বিনিময়।” (সূরা আহযাব : রুকু-৫)
এই আয়াতের দ্বারা বুঝা যায়, ধৈর্যের মর্তবা বড় বড় নেক কাজের সমতুল্য। এর দ্বারা মানুষের অতীত জীবনের ত্রুটি ও ভুলসমূহ দূরীভূত হয়ে যায় এবং দীন ও দুনিয়ার বড় বড় বিনিময় হতেও তা শ্রেষ্ঠ। অপর এক আয়াতে ঘোষণা করা হয়েছে, “যারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! অবশ্যই আমরা ঈমান এনেছি, আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন, দোযখের আজাব হতে আমাদেরকে রক্ষা করুন। যারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, ইবাদত গুজার, দানশীল এবং প্রত্যুষে ক্ষমা প্রার্থনাকারী।” (তারাই এহেন প্রার্থনা করে)
এই আয়াতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ্য করা যায়। তাহলো এই সৌভাগ্যশালী শ্রেণীর কাজের প্রারম্ভ হয়েছে প্রার্থনা দ্বারা এবং এর শেষও হচ্ছে দোয়ারই মাধ্যমে। এর মধ্যবর্তী স্থলে রয়েছে চারটি গুণের সমাবেশ। যাদের মাঝে প্রথম শ্রেণীর ধৈর্য কষ্টবরণ করা এবং সাহসিকতার সাথে অগ্রসর হওয়ার প্রবণতা রয়েছে, তারা প্রথম বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সততা ও সত্যবাদীতার। তৃতীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আল্লাহর আনুগত্য ও ইবাদত-বন্দেগীর এবং চতুর্থ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আল্লাহর পথে সাধ্যানুরূপ দান-খয়রাত করা।
বিপত্তারণের উপায়
ধৈর্য এবং দোয়া হচ্ছে বিপদ জয় করার চাবিকাঠি। কোন কোন আয়াতে এ সকল গুণাবলীকে শুধু দু’টি শব্দের দ্বারা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। অর্থাৎ দোয়া এবং ধৈর্য। এই হচ্ছে মুশকিল জয়ের উত্তম কুঞ্জী। যারা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পয়গাম কবুল করত না এর মূলে ছিল দুটি কারণ। (১) তাদের অন্তরে প্রভাব প্রতিক্রিয়া গ্রহণের উপাদান ছিল না। (২) পয়গামে হক কবুল করার সাথে তাদেরকে যে সকল আর্থিক ও দৈহিক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হত, তারা আয়েশী জীবনে অব্যস্ত ছিল বলে, সে সকল অসুবিধা বরদাশত করার মত সঙ্গতি তাদের ছিল না। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রূহানী চিকিৎসা এ সকল রোগের প্রতিষেধক রূপে এ পন্থা অবলম্বন করেছিল, “ তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর।” (সূরা বাকারাহ : রুকু-৫)
দোয়ার দ্বারা তাদের অন্তরে প্রতিক্রিয়া এবং স্বভাবে কোমলতা পয়দা হয়। ধৈর্যের স্বভাব দ্বারা সত্য গ্রহণের মুশকিলাত দূর হয়ে যায়। হিজরতের পর যখন কুরাইশরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে তরবারী উত্তোলন করল এবং মুসলমানদেরকে ঈমান ও ইখলাসের পাল্লায় পরিমাপ করার সময় আসল, তখন এই আয়াত নাজিল হয়। “হে বিশ্বাসীগণ! ধৈর্য এবং সালাতের সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর, অবশ্যই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। যারা আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণ করেছে তাদেরকে মৃত বলো না বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝতে পারছ না এবং অবশ্যই আমি তোমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা, সম্পদহানী, স্বাস্থ্যহানী, ফল ও ফসলেরহানী দ্বারা পরীক্ষা করব এবং ধৈর্যশীলদের জন্য রয়েছে খোশ-খবরী। যারা মুসীবতে নিপতিত হলে বলে অবশ্যই আমরা আল্লাহর নিমিত্ত এবং অবশ্যই আমরা তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তন করব; তাদেরই জন্য রয়েছে তাদের প্রতিপালকের নিকট হতে রহমত ও মঙ্গলময় অনুকম্পা এবং তারাই সঠিক পথ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।” (সূরা বাকারাহ : রুকু-১৯)
এই আয়াতের বলে দেয়া হয়েছে যে, মুসলমানগণ কেমন করে জীবন ধারণ করবে এবং জান ও মালের উপর বিপদাপদ আপতিত হলে, তা বরদাশত করবে এবং ধৈর্য ও আত্মসংযমের সাহায্যে ও দৃঢ় কদমে জীবন পরিচালনা করবে এবং মনে করবে আমরা আল্লাহর বান্দাহ, পরিশেষে তারই কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। এ জন্য সত্য পথে মৃত্যুবরণ করা ও ধন-সম্পদ ব্যয় করা থেকে কখনো পিছ পা হওয়া উচিত নয়। যদি এ পথে মৃত্যুও এসেও যায়, তাহলে এটা হবে অবিনশ্বর জীবনের খোশ-খবরী মাত্র।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ