Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্থবির শিক্ষা কার্যক্রম

গণপরিবহন চালুর ২০ দিন পর এসএসসির ফল প্রকাশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত হতে পারে অন্যান্য শ্রেণির সিলেবাস

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০৩ এএম

করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ভাইরাসটির সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সরকারি ছুটির সাথে সাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়েছে। এই ছুটির কারণে এরই মধ্যে পিছিয়ে গেছে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষা। নির্ধারিত সময়ে প্রকাশিত হচ্ছে না এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলও। পিছিয়ে যাবে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তিসহ অন্যান্য কার্যক্রমও। একইভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি না হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি রাখার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ অবস্থায় এইচএসসি পরীক্ষা, এসএসসির ফল প্রকাশ, বিভিন্ন শ্রেণির প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক, ষাণ¥াসিক পরীক্ষা, আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জেএসসি-জেডিসি, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি এবং আগামী এপ্রিলে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে বেশি শঙ্কায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি এপ্রিল মাস থেকেই এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ডগুলো। তবে গত মার্চ মাসে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় শুরু হয়ে যায় সাধারণ ছুটি। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে নির্ধারিত সময়ে এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়নি। কবে নাগাদ শুরু হবে তা নিশ্চিত করতে পারছেনা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা। এখন পর্যন্ত এই পাবলিক পরীক্ষার রুটিনও প্রকাশ করা হয়নি।
করোনা আঘাত করেছে এসএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের ফলাফলেও। গত ফেব্রুয়ারিতে লিখিত ও মার্চের প্রথম সপ্তাহে ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। চলতি মাসের শেষে অথবা মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই এই পরীক্ষার ফল ঘোষণার প্রস্তুতি ছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে এই কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়েছে।

আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ শেষ হয়েছে। ওএমআর সিট প্রধান পরীক্ষকের কাছে রয়েছে। অনেকে আবার ইতোমধ্যে ওএমআর সিট পাঠিয়েও দিয়েছেন। তবে এখনো কিছু বাকি রয়েছে। যেকারণে পরীক্ষার ফলাফল তৈরি করতে পারছে না আন্তঃশিক্ষাবোর্ড। গণপরিবহন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেই পরবর্তী ২০ দিনের মধ্যে এই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান মুু. জিয়াউল হক বলেন, উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়েছে। ওমমআর সিট প্রধান পরীক্ষকের কাছে আছে, তারা সব জমা দিতে পারছে না, কিছু আমাদের কাছে পৌঁছে গেছে। গণপরিবহন ও অফিস খুললে এগুলো আমরা পাবো। তবে এগুলোর খোলার পরও ২০দিন সময় লাগবে। ক্লাস শুরুর বিষয়ে কি পরিকল্পনা আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১ জুলাই থেকে ক্লাস শুরু করার কথা ছিল। এখন যদি জুলাই বা আগস্টের রেজাল্ট দিলে এবং ১ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে ওই দিন থেকেই ক্লাস শুরু হবে।

জিয়াউল হক বলেন, সময় যেটা যাচ্ছে সেটা সমন্বয় করা হবে। তবে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না, পরবর্তীতে সেটা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নাই, পরিস্থিতি সকলকে অনুধাবন করতে হবে। কারণ এটা আমাদের কারো হাতে নাই।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, যদি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়, তাহলে প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক এবং মাধ্যমিকের ষাণ¥সিক পরীক্ষাও নেওয়া যাবে না। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন পড়ালেখা বন্ধ রাখলে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া ছাড়া ভিন্ন পথ খোলা থাকবে না। খোলার পর পাঠদান বাড়ানোর জন্য ঐচ্ছিক ছুটি কমানো এবং সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা হতে পারে।

মুু. জিয়াউল হক বলেন, স্কুলের সাময়িক বা বার্ষিক পরীক্ষা কোনোভাবে সামলে নিতে পারবে স্কুলগুলো। কিন্তু পড়াশোনা না করতে পারলে, স্কুলে পাঠদান না হলে আগামী জেএসসি, ২০২১ সালের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা নিয়েই আশঙ্কা তৈরি হবে। তবে এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করে সিলেবাস কমানোর বিষয় সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, আগামী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা কীভাবে নেওয়া যায় সেটা নিয়ে পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকাতে ব্যহত হচ্ছে উচ্চশিক্ষা কার্যক্রমও। বিশেষ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস হলেও পরীক্ষা গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। ফলে একটি সেমিস্টার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে শিক্ষার্থীরা।



 

Show all comments
  • পারভেজ ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫৮ এএম says : 0
    দেশ ও দেশের মানুষ বাঁচলে আবার সব ঠিক হয়ে যাবে, ইনশা আল্লাহ
    Total Reply(0) Reply
  • কামাল ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ২:০৭ এএম says : 0
    আগে করোনা থেকে মুক্তি পাই, তারপর শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে ভাবা যাবে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ