Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাড়া-মহল্লায় ভিড় নামি-দামিতে কম

রেস্টুরেন্টে ইফতার কেনায় ক্রেতা ছুটি থাকায় প্রস্তুতি নিতে পারেনি অনেকে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০৩ এএম

করোনাভাইরাসের কারণে রমজানের শুরুতে ইফতার বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। গতকাল মঙ্গলবার থেকে সেটি শিথিল করে দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। বিকেল ৪টা পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব মেনে ইফতার বিক্রির করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এবারের রোজায় প্রথম দিনের মতো ইফতার বিক্রি শুরু হওয়ার পর পরই রাজধানীর পাড়া-মহল্লার ইফতারের দোকানগুলোতে ছিল প্রচন্ড ভিড়। কোথাও কোথায় দীর্ঘ লাইন দিয়ে ইফতার কিনেছেন ক্রেতারা। তবে নামি-দামি রেস্তোরাগুলোতে ক্রেতা সংখ্যা অনেক কম ছিল বলে জানিয়েছে বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো। এদিকে সাধারণ ছুটির মধ্যেই হঠাৎ করে ইফতার বিক্রির জন্য রোস্তোরা খুলে দেয়ার নির্দেশনা পেলেও অনেক রেস্টুরেন্টই চালু করতে পারেনি। জানা গেছে, কারিগর, শ্রমিকরা ছুটিতে থাকায় প্রস্তুতি এখনো সারতে পারেনি তারা। দু’একদিনের মধ্যেই অধিকাংশ রেস্তোরায় ইফতার বিক্রি শুরু করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে রেস্তোরা মালিক সমিতি।

হোটেল রেস্টুরেন্টে ইফতার বিক্রি শুরু হলে রেস্টুরেন্ট থেকে সুস্বাদু ইফতার সামগ্রী কিনতে বিকেলে অনেকেই ভিড় করতে শুরু করেন। প্রথম দিন পাড়া-মহল্লার রেস্টুরেন্টগুলোতে ইফতার বিক্রির সময় সামাজিক দূরত্ব অমান্য করেই ইফতার কিনেছেন ক্রেতারা। তবে এদিন খুব কম সংখ্যক রেস্তোরাঁ কিংবা দোকানকে ইফতার বিক্রি করতে দেখা গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতাও অনেক কম। বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি বলছে, বুধবার থেকে একটি গাইডলাইন তৈরি করে পাঠানো হবে সব জায়গায়। এদিন থেকে আরও বেশি রেস্তোরাঁ খুলবে এবং ইফতার বিক্রির ব্যবস্থা করতে পারবে।

কলাবাগানের মামা হালিম মঙ্গলবার খুলেছে নির্দেশনা আসার পর। দোকানের সামনে নির্দিষ্ট দূরত্বে দাগ কেটে দেওয়া হয়েছে ক্রেতাদের জন্য। ক্রেতারা যেন নির্দিষ্ট দাগে দাঁড়িয়ে হালিম কিনতে পারে। মামা হালিমের ব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা দোকানের সামনে তিন ফুট দূরত্ব রেখে ঘর কেটে দিয়েছি। এছাড়া কাস্টমারদের সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে বলা হচ্ছে। আমরা রমজান মাসে আজকেই দোকান খুলেছি, তবে কাস্টমার অনেক কম।’

ধানমন্ডির ওয়েসিস ফাস্ট ফুড দোকানের ভেতরে নির্দিষ্ট দূরত্বে দাগ কেটে রাখা হয়েছে ক্রেতাদের জন্য। দোকানের বাইরের অংশে বিল্ডিংয়ের ভেতরেই বিক্রি হচ্ছে ইফতার সামগ্রী। সেখানেও ঘর আঁকা আছে। এছাড়া বিক্রয় প্রতিনিধিরা একটু পর পর ক্রেতাদের সামাজিক দূরত্ব মেনে দাঁড়ানোর জন্য বলছেন।
ধানমন্ডি দুই নম্বর রোডের স্টার কাবাবও খোলা আছে প্রথম রোজা থেকে। দুপুর থেকে সীমিত ইফতার বিক্রি করে থাকে তারা। মঙ্গলবার স্টার কাবাবের সামনে দেখা যায়, নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন ক্রেতারা। স্টার কাবাবের নিরাপত্তা কর্মীরা একজন একজন করে ক্রেতাকে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন। এখানে রেস্টুরেন্টের বাইরেও ফুটপাতে ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।

স্টার কাবাবের ম্যানেজার নুরুদ্দিন জানান, প্রথম রোজা থেকে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে শুধু ইফতার বিক্রি করছি। ক্রেতারা শুধু পার্সেল নিতে পারবেন। এখানে বসে খাওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে আমাদের নিরাপত্তা কর্মীরা আছেন, তারা বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।
সাত মসজিদ রোডের অল্প কয়েকটি রেস্তোরাঁ খোলা থাকতে দেখা গেছে। এর মধ্যে আছে লায়লাতি, সুলতান্স ডাইন এবং দ্য ফরেস্ট লাউঞ্জ। সুলতান্স ডাইন ঝিগাতলায় একটি বিল্ডিংয়ের দোতলায় অবস্থিত। এ কারণে নিচের গেট থেকে পার্সেল সংগ্রহের ব্যবস্থা করেছে তারা। লায়লাতি তাদের দোকানের সামনে দড়ি টানিয়ে জায়গা করে দিয়েছে ক্রেতাদের দাঁড়ানোর জন্য। সেখানে লেখা আছে দূরত্ব বজায় রাখুন। লায়লাতির ব্যবস্থাপক জানান, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে আমরা খাবার বিক্রি করছি। খুব সীমিত সংখ্যক খাবারের ব্যবস্থা করেছি। দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত আমরা বিক্রি করবো।

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি বলছে, মঙ্গলবার অনেকে রেস্তোরাঁ চালু করতে না পারলেও বুধবার থেকে অনেকেই খুলবে। সংগঠনটির সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, আমরা গতকালই মাত্র নির্দেশনা পেলাম। আজকে অনেকেই রেস্টুরেন্ট খুলতে পারেননি। তবে আগামীকাল থেকে খুলবে অনেক এলাকায়। তাদের স্বাস্থ্যবিধিসহ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে আমরা একটি গাইডলাইন পাঠাবো। সেটি মেনেই তারা ইফতার বিক্রি করবেন এবং শুধু পার্সেলের ব্যবস্থা রাখা হবে। আমাদের এখন রেস্তোরাঁগুলোতে লোকবল কম, তাছাড়া ক্রেতাও তো সেরকম নেই। তাই আশা করি, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা যাবে। আমরা এই বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছি।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ