পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে চিকিৎসক-নার্সসহ এখন পর্যন্ত প্রায় এক হাজার জন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছে। এরমেধ্যে ৩৮৭ জন চিকিৎসক, ৩০৫ জন নার্স ও ২৪৯ জন অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী। এই তথ্য চিকিৎসক-নার্সদের সংগঠনগুলোর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মানসম্পন্ন সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাব, লক্ষণবিহীন রোগীদের সেবা প্রদান, আবাসন ও খাদ্যের সুব্যবস্থা না থাকা ইত্যাদি কারণে স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্তের হার বেশি। এভাবে চলতে থাকলে চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীতে বাংলাদেশ ও গভীর সঙ্কটের সম্মুখীন। করোনা যুদ্ধের সম্মুখ সারির যোদ্ধা চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ সেবাদানকারীগণ আশঙ্কাজনক ভাবে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। চিকিৎসক ও চিকিৎসা সেবা দানকারী ব্যক্তিগণ এই হারে আক্রান্ত হতে থাকলে আগামীতে চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।
তিনি বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিএমএ সরকারের প্রতি তিনটি প্রস্তাবনা দ্রুত বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছে- ১. দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড হাসপাতালে নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্সসহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য সঠিক মানের পিপিই, এন-৯৫ বা এর সমমানের মাস্ক প্রদান করা জরুরী। ২. নন কোভিড হাসপাতালের প্রবেশদ্বারে ট্রায়াজ সিস্টেম চালু করে সেখানে কর্মরত সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপযুক্ত পিপিই, এন-৯৫ বা সমমানের মাস্ক প্রদান নিশ্চিত করা সময়ের দাবি। ৩. সকল সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসন, প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ হাসপাতালে যাতায়াতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।
এদিকে ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস্ সেফটি রাইটস এন্ড রেসপন্সিবিলিটিস্ (এফডিএসআর) জানায় সারা দেশে ৩৮৭ জন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১৭ জন চিকিৎসক। সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ডা. শাহেদ ইমরান ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকা ৩১৭ জন, বরিশাল ৯ জন, চট্টগ্রাম ১৫ জন, সিলেট ৫ জন, খুলনা ১০ জন, রংপুর ৩ জন, ময়মনসিংহ ২৮ জন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অপরদিকে বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন (বিএনএ) ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাজসপাতালের নার্সেস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান জুয়েল ইনকিলাবকে বলেন, ৩০৫ জন নার্স এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক্সরে বিভাগের দুইজন টেকনোলজিস্টসহ মোট ৫ জন করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়েছেণ। এতে এক্সরে বিভাগের কার্যক্রম বন্ধের পথে। আক্রান্ত একজন টেকনোলজিস্ট জানিয়েছেন করোনা আক্রান্ত কিন্তু কোন লক্ষণ নেই এমন রোগীদের সেবা দিতে গিয়েই তারা আক্রান্ত হয়েছেন। এতে ওই বিভাগ সব অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকসহ সেবাকর্মীরা আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের একজন চিকিৎসক, তিন জন নার্স, একজন ওয়ার্ড মাস্টার এবং পরিচালকের দফতরে কর্মরত একজন অফিস সহকারী ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া আরও অনেক স্বাস্থকর্মী কোয়ারেন্টিনে আছেন। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি হৃদরোগ হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ৭ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। যাদের মধ্যে দুজন কেবিনে ছিলেন এবং বাকীরা ওয়ার্ডে ও কোরনারী কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসা নিয়েছেন। এসব রোগীদের মধ্যেও করোনার কোন লক্ষন প্রকাশ পায়নি। কিন্তু তিন জন রোগীর শরীরে গুরুত্বপূর্ন শল্য চিকিৎসা করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে অন্যান্য পরীক্ষার সঙ্গে করোনা পরীক্ষা করে পজেটিভ পাওয়া যায়। এরপর কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু ইতিমধ্যে হাসপাতালের অন্যান্য রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীদেও মধ্যে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে।
গতকাল শেরপুর জেলার সদর হাসপাতালের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও তিন স্বাস্থ্যকর্মীর করোনাভাইরাস তুনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত তিন স্বাস্থ্যকর্মীই করোনার নমুনা সংগ্রহ দলে কাজ করতেন। নতুন শনাক্ত হওয়া তিন স্বাস্থ্যকর্মীর একজন জেলা সদর হাসপাতালের এবং দুজন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান। আর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জেলা সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান।
বাংলাদেশ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব সেলিম মোল্লা বলেন, এ পর্যন্ত ২৫ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। লক্ষণহীন রোগী এবং পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় তারা আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনি বলেন, এভাবে টেকনোলজিস্ট আক্রান্ত হতে থাকলে করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ যেমন বাধাগ্রস্থ হবে তেমনি হাসপাতালগুলোর ল্যাবরেটরি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়বে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে তিনি আরও টেকনোলজিস্ট নিয়োগ এবং তাদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা প্রদানের দাবি জানান।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।