পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের মহামারীতে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই সীমিত পরিসরে কারখানা চালু করেছে তৈরি পোশাক শিল্পের দুই খাতের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। এরমধ্যে ঢাকা ও আশপাশের বেশ কিছু কারখানা চালু করেছে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএর সহ সভাপতি ফয়সাল সামাদ। এসব কারখানায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে শ্রমিকদের প্রবেশ করানো হয়েছে। তবে কি পরিমাণে কারখানা চালু করা হয়েছে তা জানাতে পারেনি তিনি। এদিকে কারখানা খোলার খবরে গত শনিবার থেকেই অনেক শ্রমিক কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কেউ হেঁটে, আবার কেউ অতিরিক্ত ভাড়ায় রিকশা ও ভ্যানে গাজীপুর ও সাভারের বিভিন্ন কারখানায় প্রবেশ করেন।
এর আগে শনিবার রাতে কারখানা চালুর বিষয়ে নির্দেশনা দেয় বিজিএমইএ। এতে বলা হয়, লকডাউন পরিস্থিতিতে যেসব শ্রমিক সংশ্লিষ্ট কারখানার আশপাশে অবস্থান করছেন তাদেরকে দিয়েই কারখানা চালু করতে হবে। এই মুহুর্তে দূরে থাকা শ্রমিকদের যেন না ডেকে আনা হয় সেই নির্দেশনাও দেয়া হয়।
জানা যায়, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় গত ২৬ মার্চ থেকে ধীরে ধীরে বন্ধ হতে থাকে পোশাক কারখানাগুলো। তার এক মাসের মাথায় জরুরি রপ্তানি আদেশ পালন করতে কীভাবে স্বল্প পরিসরে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কারখানা চালু করা যায় সেই আলোচনা শুরু হয়। মালিকপক্ষের পাশাপাশি খাত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যবসায়ী মহল ও সরকারের পক্ষ থেকেও এই প্রস্তাবে সায় দেওয়া হয়। সামাজিক দূরত্ব রক্ষার এই সময়ে সতর্কতার সঙ্গে কীভাবে কারখানা চালু করা যায় তার একটি প্রটোকল তৈরি করে মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এই পরিস্থিতিতে গত শনিবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে ৮টি অঞ্চলভিত্তিক পোশাক কারখানা চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এ সিদ্ধান্তের পর গতকাল রোববার মিরপুরসহ রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় সীমিত পরিসরে পোশাক কারখানা খুলতে দেখা গেছে। এসব কারখানায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে শ্রমিকদের প্রবেশ করানো হয়েছে।
মিরপুরের কালশীর ২২ তলা এলাকার একটি গার্মেন্টসের অ্যাসিসট্যান্ট ম্যানেজার (অ্যাডমিন) জানান, এই কারখানায় শ্রমিক প্রায় ৩ হাজার ২০০ জন। তাদের অর্ধেকও আসেননি। আশপাশে যারা ছিলেন তাদের দিয়ে কাজ চলছে। যেহেতু লোক কম, তাই ৬ ফিট দূরে দূরে বসানো হচ্ছে। শ্রমিক নেতারা বলছেন, ঢাকার ভেতরে তেমন একটা কারখানা খোলা হয়নি। তবে আশুলিয়া ও গাজীপুরের অনেক কারখানা খোলা হয়েছে। এর আগে গত শনিবার সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ময়মনসিংহ পাটগুদাম ব্রিজ মোড় এলাকায় দেখা যায় ঢাকামুখী গার্মেন্টস কর্মীদের। তবে দিনের বেলা তাদের বাড়ির দিকে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। গার্মেন্টস শ্রমিকরা ফিরে না গিয়ে চর কালিবাড়ি এলাকায় রাস্তার পাশে অবস্থান করতে থাকেন। গত শনিবার রাতে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী কয়েকজন পোশাক শ্রমিক জানান, আমাদের ফোন করে বলা হয়েছে রোববার সকাল ৭টার মধ্যে গার্মেন্টস খুলবে। সকাল ৭টার আগেই কাজে যোগদান করতে হবে। আমরা যদি সঠিক সময়ে না যাই চাকরি চলে যাবে। তাই রাতেই বাচ্চা কোলে নিয়ে টঙ্গীর পথে রওনা দিচ্ছি।
জানতে চাইলে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, রোববার সকাল থেকে গাজীপুর ও আশুলিয়া এলাকার গার্মেন্টস খুলেছে। বিজিএমইএর সহ সভাপতি ফয়সাল সামাদ বলেন, আমরা তাড়াহুড়ো করে কোনো কিছু করছি না; সবকিছু আস্তেধীরে করা হচ্ছে। আমরা মালিকদের বলে দিয়েছি দূর দূরান্ত থেকে কোনো শ্রমিক নিয়ে আসা যাবে না। কেবলমাত্র যারা কারখানার আশপাশে রয়েছে তাদেরকে দিয়েই কাজ শুরু করতে হবে। খুবই ছোট পরিসরে, ৩০ শতাংশের বেশি উপস্থিতি করানো যাবে না। অনুপস্থিতির জন্য কারও চাকরিও যাবে না।
নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, পুরো গার্মেন্টস রোববারই খোলেনি। এর পরে ২ মে থেকে কারখানাগুলো পুরোপুরি খুলবে। দূর দূরান্তে অবস্থানকারী শ্রমিকদের এই মুহূর্তে আসতে নিষেধ করেছি আমরা। কতটি কারখানা চালু হয়েছে সেটা দিন শেষে বলা যাবে।
এদিকে শনিবার রাতে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক কারখানা খোলার বিষয়টি অবহিত করে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশ ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালু করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনের সদস্যভুক্ত কারখানাগুলো পর্যায়ক্রমে খোলা হচ্ছে। শুরুতে রোববার ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের কিছু কারখানা, ২৮ থেকে ৩০ এপ্রিল আশুলিয়া, সাভার, ধামরাই ও মানিকগঞ্জের কারখানা, ৩০ এপ্রিল রূপগঞ্জ, নরসিংদী, কাঁচপুর এলাকা, ২ ও ৩ মে গাজীপুর ও ময়মনসিংহ এলাকার কারখানা চালু করা হবে। কারখানা খোলার ক্ষেত্রে শুরুতে উৎপাদন ক্ষমতার ৩০ শতাংশ চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা বাড়ানো হবে। এই চিঠি পাওয়ার পর শ্রম মন্ত্রণালয়ও তাৎক্ষণিক একটি চিটি ইস্যু করেছে। এতে সব ধরনের স্বাস্থ্য বিধি মেনে কারখানা চালু করার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।
বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে রাজধানীতে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ : এদিকে রাজধানীর মালিবাগে বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে পোশাক শ্রমিকরা। গতকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে মালিবাগ চৌধুরীপাড়া আবুল হোটেলের সামনে তাহসিন ফ্যাশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা এ সড়ক অবরোধ করে। উজ্জ্বল নামে কারখানার এক শ্রমিক বলেন, দুই মাসের বেতন ভাতা বকেয়া থাকলেও মালিক টাকা পরিশোধ না করে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। এদিকে করোনার কারণে বকেয়া বেতন পরিশোধ না করায় শ্রমিকদের মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।