বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। জরুরি অবস্থা, লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব তৈরি কোন কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছেন প্রাণঘাতি এই ভাইরাস। চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছে (গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত) ২৯ লাখ ৪০ হাজার। আর আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ২ লাখ ৩ হাজার ৬৮৮ জন। আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ আর মৃতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ছাড়িয়েছে। এরপরই সংক্রমণে এগিয়ে রয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। তার মধ্যে স্পেন, ইতালি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্যের অবস্থা ভয়াবহ। জার্মানি, তুরস্ক, বেলজিয়াম, রাশিয়ায় সংক্রমণ বেশি হলেও মৃতের সংখ্যা কিছুটা কম।

এসব দেশে স্থানীয় অধিবাসীদের পাশাপাশি মৃত্যু হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশীদেরও। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস, প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটি ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী গতকাল পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় ৪০০ জন বাংলাদেশী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এই দেশটিতে গতকাল বিকেল পর্যন্ত ২০৫জন বাংলাদেশী করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৫জন বাংলাদেশী নিউইয়র্কেই মারা গেছেন। এছাড়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন কয়েকশত বাংলাদেশী। বিদেশে থাকা বাংলাদেশী নাগরিকদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী বাংলাদেশীরাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি এবং ভয়ের মধ্যে রয়েছেন।

যদিও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর প্রায় সাড়ে ৬লাখ প্রবাসী বাংলাদেশ বাংলাদেশে ফিরে আসেন। কিন্তু এখনো বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। অন্যান্যদের সাথে সাথে তাই করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর এই সারি থেকে বাদ পড়ছেন না প্রবাসী বাংলাদেশীরাও। চিকিৎসক, শিল্পী, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, গৃহিণীসহ অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশী রয়েছেন যুক্তরাজ্যে। এই দেশটি সেখানে প্রবাসীদের মৃত্যুর সংখ্যা সরকারিভাবে প্রকাশ না করলেও স্থানীয় বাংলাদেশী ও বাংলাদেশী গণমাধ্যম কর্মীদের তথ্য অনুযায়ি অন্তত: ১২০-১২৫ জন বাংলাদেশী মৃত্যুবরণ করেছেন।

এছাড়াও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সৌদি আরবে ৩৫, কানাডায় ৭ জন, ইতালিতে ৮, স্পেনে ৫, ফ্রান্সে ৫ জন, কাতারে ৪, ওমানে ১, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১, লিবিয়ায় ১, সুইডেনে ১, গাম্বিয়ায় ১, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১, ও কেনিয়ায় ১ বাংলাদেশীর মৃত্যু হয়েছে। সিঙ্গাপুরে প্রথম বাংলাদেশী প্রবাসীরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। সেখানে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন হাজার বাংলাদেশী নাগরিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে কোনো বাংলাদেশীর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।