Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা মোকাবেলায় ডাক্তার নার্সদের মতো টেকনোলজিস্ট নিয়োগের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০২০, ৮:১১ পিএম

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ডাক্তার নার্সদের মতো মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের দাবি জানিয়েছে বেকার অ্যান্ড প্রাইভেট সার্ভিসেস মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন। রোববার (২৬ এপ্রিল) স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ দারটি দফতরে তারা লিখিত ভাবে এ দাবি জানান।

দাবিতে তারা উল্লেখ করেন, দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকেই করোনা শনাক্তে রোগীদের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আসছে সরকারি হাসপাতালে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা। প্রাথমিক পর্যায়ে স্বল্প পরিসরে করোনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্ভব হলেও বর্তমানে রোগীর সংখ্যা এবং পরীক্ষাকেন্দ্র বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদেরকে দিয়ে সুষ্ঠুভাবে এ কাজ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এছাড়া করোনা রোগীদের পরীক্ষায় নিয়োজিত বেশ কয়েকজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং অনেকে কোয়ারেন্টাইনে আছেন। সরকারি পর্যায়ে কর্মরত সীমিত সংখ্যক মেডিকেল টেকনোলজিস্ট দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী ১ জন চিকিৎসকের বিপরীতে ৫ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট থাকার কথা থাকলেও দেশে চিকিৎসক আছেন প্রায় ৭০ হাজার, অন্যদিকে মেডিকেল টেকনোলজিস্টের পদ সর্বসাকুল্যে ৯ হাজার। এর মধ্যেও বিশাল সংখ্যক পদ শূন্য অবস্থায় রয়েছে। অপরদিকে দীর্ঘদিন যাবৎ নিয়োগ না হওয়ায় প্রায় ৩০ হাজার মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট বেকার অবস্থায় দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছে। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা করোনা সনাক্তকরণসহ অন্যান্য রোগের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পরে চিকিৎসক চিকিৎসা এবং নার্স সেবা প্রদান করে থাকেন। কাজেই ডাক্তার ও নার্স নিয়োগের পাশাপাশি মেডিকেল টেকনোলজিষ্টদের নিয়োগ প্রদান করা অত্যাবশকীয়।

এমতাবস্থায় আমরা ৩ বছর মেয়াদি ১৫ হাজার ডিপ্লোমা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাবরেটরি)-সহ অন্যান্য বিভাগের আরোও ১৫ হাজার মোট ৩০ হাজার মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক করোনা মোকাবেলার যুদ্ধে জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রস্তুত আছি।

সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জরুরী অবস্থা বিবেচনায় প্রেসিডেন্টের নির্দেশে সরকার দেশের স্বার্থে যেভাবে ডাক্তার ও নার্সদের নিয়োগ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন সেই একই প্রক্রিয়ায় ৩০ হাজার বেকার মেডিকেল টেকনোলজিস্টদেরকে নিয়োগ প্রদানের দাবি জানান।

সম্প্রতি দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ক্রমাগতভাবে বাড়তে থাকায় প্রান্তিক পর্যায় থেকে নমুনা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের (সিএইচসিপি) দিয়ে নমুনা সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এদের দিয়ে নমুনা সংগ্রহে প্রত্যাশিত ফল না পাওয়ার শঙ্কা আছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, করোনা রোগীর নমুনা সংগ্রহ অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া। করোনা রোগীর নাক এবং গলার ভেতর থেকে নমুনা সংগ্রহকারীদের এনাটমি ও ফিজিওলজি বিষয়ে জ্ঞান থাকা আবশ্যক।

নমুনা সংগ্রহকারীদের এই জ্ঞান না থাকলে রোগীর ক্ষতি হতে পারে এবং নমুনা সংগ্রহকারী নিজেও করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। এছাড়া এদের একাডেমিক সনদ এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ল্যাবরেটরি কাজের কোনো প্রশিক্ষণও নেই। এতে নমুনা পরীক্ষার ফল ভুল আসতে পারে। রোগটি আরও বেশি এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে মনে করেন।

এ প্রসঙ্গে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, রোগীদের নমুনা সংগ্রহ অত্যন্ত জটিল কাজ। এক্ষেত্রে যাদের এ ধরনের কাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই তাদের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করলে তাতে সঠিক ফল পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

বেকার অ্যান্ড প্রাইভেট সার্ভিসেস মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে পাশ করা ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাবরেটরি)-সহ অন্যান্য বিভাগের মোট ৩০ হাজার মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক করোনা মোকাবিলায় জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রস্তুত আছি। আমার চাই জরুরী অবস্থা বিবেচনায় প্রেসিডেন্টের নির্দেশে সরকার দেশের স্বার্থে যেভাবে ডাক্তার ও নার্সদের নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে একই ভাবে আমাদের নিয়োগ দেয়া হোক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ