পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আবার সেই পুরনো চিত্র। লকডাউন ভেঙ্গে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকার দিকে আসছে হাজার হাজার গার্মেন্টস শ্রমিক। পথিমধ্যে পুলিশের বাধায় তারা বলছেন, মালিকপক্ষ থেকে তাদেরকে আসতে বলা হয়েছে। কেউ কেউ মোবাইল ফোনে এ সংক্রান্ত মেসেজও দেখাচ্ছেন। একদিকে গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ থেকে বলা হচ্ছে, কারখানা খোলার কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি, অন্যদিকে শ্রমিকদের আজ রোববার (২৬ এপ্রিল) থেকে কারখানায় আসার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বেশ কয়েকজন কারখানা মালিক। এমন পরিস্থিতিতে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছেন বিভিন্ন অঞ্চলের শ্রমিকরা। এরইমধ্যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় ফিরতে শুরু করছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। প্রশ্ন হলো- বার বার কেন একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটবে। ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ গার্মেন্টস ও হোসিয়ারি ফ্যাক্টরী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে যে হু হু করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এটা কারো অজানা নয়। তাহলে আবার কেন এই আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত? আবার কেন একই বিভ্রান্তি?
অনেকেই বলছেন, গার্মেন্টস কারখানা খুলতে হলে স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মেনে তারপর খুলতে হবে। তা না হলে এই শ্রমিকদের কারণে করোনার সংক্রমণ আরও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। তাদের কারণে ঝুঁকিতে পড়বে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোর কয়েক কোটি মানুষ। এ প্রসঙ্গে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. জাহিদ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানতে না পারলে কোনও কারখানা খুলতে দেওয়া উচিত না। কারণ, করোনাভাইরাস ছড়ানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ গার্মেন্টস শ্রমিকরা। জাতীয় স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন জাতীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ড. রশীদ ই মাহবুব বলেন, স্বাস্থ্যবিধি যদি মানতে না পারেন, তাহলে কারখানা খোলা উচিত হবে না।
এদিকে গার্মেন্টস খোলার কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে গ্রাম থেকে শ্রমিকদের ফিরিয়ে না আনার অনুরোধ করেছে বিজিএমইএ। সংগঠনটির ওয়েবসাইটে সংগঠনের সদস্যদের উদ্দেশে দেওয়া বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অর্থনীতি চলমান রাখতে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পোশাক কারখানা খোলা রাখার নির্দেশনা দেবে বিজিএমইএ। সেই নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত যেসব শ্রমিক গ্রামে আছেন, তাদের ঢাকায় আসতে না বলার জন্য অনুরোধ করা হলো। পর্যায়ক্রমে এলাকাভিত্তিক পোশাক কারখানা খোলার নির্দেশনা দেওয়া হবে জানিয়ে বিজিএমইএ বলছে, শুরুতে কারখানা সীমিত আকারে খোলা রাখা যাবে। ফলে প্রথম ধাপে কারখানার আশপাশে যেসব শ্রমিক আছেন, তাদেরই কাজে যোগদান করতে বলা যাবে। মানবিক দৃষ্টিকোণ বিবেচনায় কোনও শ্রমিক ছাঁটাই না করার অনুরোধ করেছে পোশাক মালিকদের সংগঠনটি। এছাড়া বিরূপ পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের ঢাকায় নিয়ে আসা হলে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে কোনও সহায়তা করা হবে না।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, সরকার পোশাক কারখানা বন্ধ করতে বলেনি। সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে পোশাক কারখানা খোলা রাখতে বলেছে। সে কারণে আমরা মনে করছি, একসঙ্গে সব চালাতে গেলে সমস্যা হবে, তাই আমরা ভাগ ভাগ করে কারখানা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি বলেন, আগামী ৪ মে থেকে দেশের সব কারখানা খোলা থাকবে। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে এসব কারখানা চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, আমরা যান চলাচল স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত গ্রাম-গঞ্জের কোনও শ্রমিক আনতেও নিষেধ করেছি। এ ব্যাপারে বিজিএমইএ মালিকদের চিঠি দেবে। সালাম মুর্শেদী আরও বলেন, ঢাকার বাইরের শ্রমিককে না আনার ব্যাপারে কঠোরভাবে বলা আছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতিমালা মেনে আমরা কারখানা খুলতে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, রবিবার থেকে শুধু ঢাকা শহরে ভেতরের ৮টি স্থানের কারখানাগুলো চালু হবে। ঢাকার ভেতরকার শ্রমিক দিয়েই এই কারখানা চালানো যাবে। এছাড়া ২৮ তারিখ থেকে খোলা হবে আশুলিয়া থেকে মানিকগঞ্জ পর্যন্ত সব কারখানা। নারায়ণগঞ্জসহ কাঁচপুর, রূপগঞ্জ এলাকার কারখানা চালু হবে ৩০ তারিখ থেকে। ২, ৩, ৪ মে টঙ্গী থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত কারখানা চালু হবে।
এদিকে শ্রমিকরা জানান, তাদের অফিস করতে বলা হয়েছে, কারণ আজ রবিবার খুলছে কারখানা। তাই বাধ্য হয়ে অঘোষিত লকডাউনের মধ্যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় ফিরতে শুরু করছেন পোশাক শ্রমিকরা। আবার অনেকে দ্বিধার মধ্যেও আছেন ঢাকায় ফিরবেন কীভাবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা বেশিরভাগ শ্রমিকের। আবার গত ৪ এপ্রিলের মতো ঢাকায় গিয়ে বিপাকে পড়বেন কিনা, এই চিন্তায় পড়েছেন বেশিরভাগ শ্রমিক। এসব বিষয়ে গার্মেন্টস মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও জবাব পাওয়া যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।