পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শুধুই ব্যতিক্রম চট্টগ্রাম বন্দর। সামাল দিচ্ছে বিশাল বিস্তৃত কর্মকান্ড। বিস্ময় একই সাথে সাহস ও আশা জাগায় বটে। করোনা মহাদুর্যোগে গত ২৬ মার্চ থেকে টানা সাধারণ ছুটি, শাটডাউন, লকডাউন পরিস্থিতিতে গোটা দেশের সবকিছুই যখন অচল স্তব্ধ তখন দেশের হৃৎপিন্ড ‘লাইফ লাইন’ খ্যাত প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম দিন-রাত সার্বক্ষণিক সচল রয়েছে।
দেশের মোট আমদানি-রফতানি তথা বৈদেশিক বাণিজ্যের ৯২ শতাংশই চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে। দেশ জাতি সরকার রাষ্ট্রের সেই হার্ট বন্ধ থাকার কথা ভাবাই যায় না। যদিও ভিন্ন পরিস্থিতিতে সীমিত জনবল নিয়ে সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে বন্দর কর্মযজ্ঞ। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়েও চলছে তার নিবিড় তদারকি।
এ মুহূর্তে পোর্ট লিমিট মহেশখালী-কুতুবদিয়া বহির্নোঙর থেকে বন্দরের জেটি-বার্থ, মুরিং, বিশেষায়িত জেটি, ইয়ার্ড-শেডসমূহ, কর্ণফুলীর সদরঘাট-বাংলাবাজার ঘাট-গুদামগুলো মিলিয়ে সর্বত্র কন্টেইনারবাহী ও খোলা সাধারণ পণ্যসামগ্রীর ওঠানামায় কর্মচঞ্চল। বন্দরজুড়ে স্থাপনাগুলোতে সুশৃঙ্খল কর্মকোলাহল। বন্দর কর্তৃপক্ষ ‘আইএসপিএস কোড’, আইএমও-সহ আন্তর্জাতিক নিয়ম-বিধিমালা, দেশের স্বাস্থ্য নির্দেশিকা অনুসরণ করে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে পূর্ণাঙ্গ সতর্কতা ও প্রস্তুতি, কর্মে নিয়োজিত লোকজনের স্বাস্থ্যপরীক্ষা ইত্যাদি বজায় রেখেই বন্দর কার্যক্রম সচল রেখেছে।
ইতোমধ্যে প্রায় ১০ হাজার দেশি-বিদেশি নাবিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং অনেকগুলো জাহাজের কোয়ারেন্টাইন পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। ঘটেনি আপাতত কোনো অঘটন ব্যত্যয়। চ্যানেলে, সমুদ্রভাগে বহির্নোঙরে দেশি-বিদেশি জাহাজবহরের আলোর ঝলকানিই জানান দিচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ব-মেরিটাইম মানচিত্রে স্বনামখ্যাত ও হাজার বছরের সুপ্রাচীন আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর।
অতীতের মতো এবার করোনায় দেশ-জাতির চরম সঙ্কটকালেও ‘বাতিঘর’ হয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর নামক বাংলাদেশের হৃৎপিন্ডটির সচলতা স্বচক্ষে দেখার তাগিদ ও গুরুত্ব অনুভব করেই গতকাল সরাসরি ঢাকা থেকে ছুটে আসেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি। পরিদর্শনকালে নৌ-পরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শেখ আবুল কালাম আজাদ এবং শীর্ষ কর্মকর্তাগণ।
নৌ-প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতীয় স্বার্থেই সার্বক্ষণিক চট্টগ্রাম বন্দর কার্যক্রম সচল রাখতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমদানি-রফতানি পণ্য প্রবাহে যে জট তৈরি হয়েছে তা নিরসনে প্রচেষ্টা প্রচেষ্টা চলছে। দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর সচল থাকা, এর প্রাণশক্তির পেছনে চট্টগ্রামের সাংবাদিকগণ প্রতিনিয়ত সাহস যুগিয়ে ইতিবাচক ভূমিকা ও অবদান রাখছেন উল্লেখ করে তার প্রশংসা করলেন নৌ-প্রতিমন্ত্রী ও নৌ-পরিবহন সচিব। বন্দর কার্যক্রম পরিদর্শন, বন্দর ভবনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের নৌ-প্রতিমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের লাইফ লাইন। বৈশ্বিক সমস্যা মোকাবিলায় আমরা সচেষ্ট। বন্দরের লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জানান, বহির্নোঙরে ৩৩টি জাহাজ অপেক্ষমাণ আছে। সেগুলোতে ৩৬ হাজার কন্টেইনার আছে। বন্দর থেকে অফডকে কন্টেইনার পাঠিয়ে অপেক্ষমান জাহাজগুলোর কন্টেইনার নামানো এবং জট কমাতে হবে।
নৌ-পরিবহন সচিব বলেন, করোনায় সব কর্মকান্ড বন্ধ হলেও ব্যতিক্রম চট্টগ্রাম বন্দর। অনেক স্টেকহোল্ডার বন্দরের। প্রবৃদ্ধির হার ধরে রাখার মাধ্যম বন্দর। তাই বাধা চিহ্নিত করে তা অপসারণের চেষ্টা করছি। কন্টেইনার জট নিরসনে সব পণ্য অফডকে সরিয়ে নেয়ার জন্য অনুমোদন পেয়েছি। এরফলে ১৮ হাজার কন্টেইনার যাবে অফডকে। আমাদের টার্গেট জট কমানো। বন্দর শ্রমিকদের ধন্যবাদ।
বন্দর সচিব জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে ৪৯ হাজার ২২৭ ইউনিট কন্টেইনার জটে মজুদ রয়েছে। স্বাভাবিক ধারণক্ষমতা ৪৯ হাজার ১৮ ইউনিট। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৭২৫ কন্টেইনার ডেলিভারি হয়েছে। আর আমদানি উঠানামা হয়েছে ৬০০৫ টি কন্টেইনার। ৮টি জাহাজ জেটিতে আমদানি কন্টেইনার খালাসের কাজ করছে। আর বহির্নোঙরে জটে অপেক্ষা করছে আরও ৩৩টি জাহাজ।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এবার সবধরনের আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ১৯টি বেসরকারি ডিপোতে (অফডক) সরিয়ে নেয়ার অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বন্দরজট কমাতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের গতকাল (বৃহস্পতিবার) এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেছে বোর্ড। এরআগে বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া ৩৮ ধরনের পণ্য বেসরকারি ডিপোতে খালাসের সুযোগ ছিল। এখন মজুদের জন্য অফডকে নেয়া যাবে আরও ৬ ধরনেরসহ প্রায় সব বৈধ পণ্যসামগ্রী। যা জটের উন্নতিতে সহায়ক হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।