পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শান্ত মনোহর সবুজ নির্মল পরিবেশ-প্রতিবেশ-প্রকৃতি। করোনাকারণে ঘরবন্দি মানুষ। নেই প্রকৃতির উপর অত্যাচার। নেই দূষণ কোলাহল। আর কাকতালীয় হলেও এমন সময়ে গ্রীষ্ম ঋতুটা রুদ্ধ-রুক্ষ হয়ে আগুন ঝরাচ্ছে না। বৈশাখের গেল নয়টি দিবস-রজনির মতিগতি তাই বলছে। অনেকটা শান্ত-শীতলতার পরশ বুলানো এ এক অচেনা বৈশাখ।
গতকাল আবহাওয়াবিদ মো. আফতাবউদ্দিন দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, মৌসুমের এ সময়ের ‘স্বাভাবিক’ তাপমাত্রার তুলনায় বর্তমানে সারাদেশে স্থানভেদে এক থেকে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম রয়েছে। সহনীয় আবহাওয়ার ধারা মোটামুটি বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মেঘলা আকাশ। ঝিরিঝিরি বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি পড়ছে। সহনীয় তাপমাত্রার আভাস মিলছে, প্রশান্তির আবহাওয়া বিরাজমান থাকতে পারে মাহে রমজানে। স্বস্তিতে হচ্ছে রোজার শুরু। বৈশাখী খরার দহন নেই আপাতত। হালকা হোক। অসময়ের বৃষ্টি। মাটি থাকছে আর্দ্র-ভেজা।
এই সুবাদে সারা বাংলাদেশ ফলমূল, ফসল, শাক-সবজিতে ভরপুর হয়ে উঠতে পারে। যদি শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডব না থাকে তাহলে আম-লিচু, কাঁঠাল দেবে বাম্পার ফলন। তাছাড়া বৃষ্টি ও ভেজা মাটির ঘাটতি আরেকটু মিটলেই চা বিশারদগণ আশাবাদী, সিলেট, চট্টগ্রাম, পঞ্চগড়ের চায়ের রাজ্যর বাগানগুলোও থাকবে সজীব সতেজ। বাড়বে চা উৎপাদন। করোনাকারণে মহামারী দুর্যোগের দিকটা ছাড়াও দেশের জনগণের ‘জনস্বাস্থ্য’ ও স্বাভাবিক ‘সুস্থতা’র জন্য বর্তমান সহনীয় তাপমাত্রার এই আবহাওয়া বেশ উপযোগী বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপ্যাল অধ্যাপক ডা. নাসিরউদ্দিন মাহমুদ ইনকিলাবকে বলেন, বৈশাখী খরতপ্ত আবহাওয়ায় হিটস্ট্রোক, ডায়রিয়া, আমাশয়, শ্বাসকষ্ট, টনসিল ও বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। বিশেষ করে শ্বাসকষ্টের রোগীদের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি বৃদ্ধির কারণ ঘটাতে পারে।
বর্তমানে মেঘলা আকাশ, মাঝেমধ্যে হালকা বর্ষণ ও শীতল বাতাস থাকায় বৈশাখী তাপমাত্রা বলতে গেলে আরামপ্রদ বা সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। যা মৌসুমী রোগব্যাধি এবং পুরনো রোগীদের স্বাস্থ্যগত বিবেচনায় ইতিবাচক আবহাওয়া-প্রকৃতি। অনুকূল আবহাওয়া অব্যাহত মাহে রমজানে থাকলে রোগ-ব্যাধির প্রকোপ ও দুর্ভোগ কম থাকতে পারে।
বৈশাখী আবহাওয়ায় আপাতত সহনীয় তাপমাত্রা বিরাজমান থাকা প্রসঙ্গে আবহাওয়াবিদ মো. আফতাবউদ্দিন জানান, যেদিক থেকে বাংলাদেশের উপর তাপপ্রবাহ আসে, সেদিকে অর্থাৎ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার অঞ্চলে এখন মেঘ-বৃষ্টিম বাদল রয়েছে। আর এদিকেও তার ইতিবাচক প্রভাব বলয় সক্রিয়। যেমন- পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশের প্রভাবে এবং বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি, ঊর্ধ্বাকাশের শীতল জেটবায়ু নেমে আসার মতোর একটা আবহ বিরাজ করছে বাংলাদেশের ভেতরে।
এরফলে আকাশ মেঘলা থেকে মেঘাচ্ছন্ন থাকছে। অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। কোথাও কোথাও হচ্ছে শিলাবৃষ্টিও। এতে করে বৈশাখের তাপমাত্রার পারদ এখন স্বাভাবিকের চেয়ে নিচে অবস্থান করছে। এ অবস্থাটা এ মাসের শেষ দিক পর্যন্ত বজায় থাকতে পারে। ২৬/২৭ এপ্রিলের দিকে তাও দেশের পশ্চিমাঞ্চলের একাংশে তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। চরম ভাবাপন্ন বৈশাখী আবহাওয়ার চেয়ে সহনীয় তাপমাত্রার আভাস রয়েছে আপাতত।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, খরতাপ আর পানির সঙ্কট নিয়ে সবজি চাষিরা চিন্তিত ছিলেন। এখন মেঘলা আকাশ ও মাঝেমধ্যে বৃষ্টিপাতের ফলে শাক-সবজি ক্ষেতে পানির ঘাটতি কমবে অনেকটা।
দেশের অর্থকরী ঐতিহ্যবাহী চা শিল্পখাতে সহনীয় আবহাওয়া-প্রকৃতির সুফল প্রসঙ্গে ইস্পাহানী টি এস্টেটস-এর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, চায়ের জন্য পাতা প্রয়োজন। আর সেই পরিপুষ্ট সতেজ পাতা পেতে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত চাই। তাহলেই মাটি ও শিকড় ভেজা থাকবে। গাছ খাদ্য তৈরি করে পাতায় পাতায় পাঠাবে। স¤প্রতি বৃষ্টিপাত কম থাকায় গেল মাসে ৪৬ ভাগ উৎপাদন কম হয়েছে। এখন যদি মাঝেমধ্যে দৈনিক ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি হারে চা বাগান অঞ্চলে বৃষ্টি হয় তাহলে মাটি আর্দ্র-ভেজা থাকবে। ফলনও দেবে ভালো।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ৩৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সৈয়দপুরে ১৭.২ ডিগ্রি সে.। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩০.৭ এবং সর্বনিম্ন ২৩ ডিগ্রি সে.। চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ৩১.২ এবং সর্বনিম্ন ২২.৫ ডিগ্রি সে.। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের সবক’টি বিভাগে বৃষ্টিপাত হয়েছে। সর্বোচ্চ বর্ষণ দিনাজপুরে ২৬ মিলিমিটার। সারাদেশে আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত মেঘ-বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টি ও সহনীয় তাপমাত্রার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।