পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনা বিশ্বব্যাপী একটি লকডাউনে পুরো বিশ্বকে বন্দি করে রেখেছে। এটি বিশ্বের সমস্ত নাগরিকের জন্য মসজিদ ও গীর্জার মতো সব ধর্মীয় উপসনালয়গুলোর পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। করোনার প্রকোপে কাবা শরীফ বন্ধ, ওমরাহ স্থগিত এবং রোমের সেন্ট পিটার্সের বেসিলিকাও একইভাবে বন্ধ।
করোনা প্রমাণ করেছে যে, মহামারী কোনো নির্দিষ্ট জাতি বা ধর্মের পক্ষে পক্ষপাতিত্ব করে না। এই মহামারীর মধ্যেই শুরু হতে যাচ্ছে প্রবিত্র রমজান মাস।
মুসলমানরা প্রথমবারের মতো মসজিদে ইফতার, তারাবিহ বা তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে জড়ো হতে পারবে না। ঈদের জামাতের ক্ষেত্রেও একই বিধিনিষেধ প্রযোজ্য। কিন্তু এই লকডাউন ইসলামের চর্চাকে হ্রাস করে দেবে?
জামাতে তারাবীহ নামাজ না পড়লে কি রোযা গ্রহণযোগ্য নয়? এবং এই সময়ে ওমরাহ না করলে কি মুুমিন মুসলিম থাকা যাবে না? এ বিষয়ে অসংখ্য আলেম-ওলামা হাদীস শাস্ত্রবিদ এবং অন্যান্য ইসলাম বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতিতে জানা গেছে যে, এসব বিষয় ইসলামের অনুশীলনকে খর্ব করে না। এদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন, মহান আল্লাহ মানবজাতির কল্যাণের জন্য পুরো বিশ্বের ভারসাম্য পুনঃস্থাপন করছেন। তিনি ইসলামকে তার সরলতা এবং মূল পথ ফিরিয়ে দিচ্ছেন। কিছু আলেম যুক্তি দিয়েছেন যে, মহানবী (সা.) ও তার সাহাবায়ে কেরামের সময়ে জামাতে তারাবিহ নামাজ আদায় করা হত না। তারা এশা নামাজ আদায় করে বাড়ি ফিরে যেতেন এবং নিজ নিজ বাড়িতে একা বা তাদের পরিবারের সাথে অন্যান্য ইবাদত (তারাবিহ বা তাহাজ্জুদ) করতেন।
ইসলামের প্রাথমিক যুগে ইফতারে এখনকার মতো ভোজসভায় পরিণত করার মতো খাবারের আধিক্য ছিল না। ইসলাম সরলতাকে উৎসাহ দেয় এবং এটি ভাগ করে নিতে উৎসাহিত করে। লকডাউন সত্তে¡ও দান-খয়রাতের জাঁকজমক না করে অসচ্ছল মুসলিমদের সহায়তা করা যেতে পারে।
দেহ-মন অনেক সময় লকডাউনের বিধিনিষেধে বিদ্রোহ করে। তবে ইসলাম লকডাউনকে আপত্তিকর বলে মনে করে না।
এটি হাদীসে অনুমোদিত, যাতে বলা হয়েছে, ‘যারা নিজের সুরক্ষার জন্য এবং অন্যকে রক্ষার জন্য ঘরে বসে থাকে, তারা আল্লাহর সুরক্ষার অধীনে থাকে’ (মুসনাদ আহমাদ, ছহীহ)।
মসজিদে জড়ো হওয়ার পরিবর্তে ঘরে বসে সালাত আদায়ের বিষয়ে নবী (সা.) বলেছেন, ‘কবরস্থান ও পায়খানা ব্যতীত সমগ্র পৃথিবীকে মসজিদ করা হয়েছে’ (তিরমিযি, আল-সালাহ, ২৯১)।
মহানবী (সা.)-এর অনুশীলন ও বাণীতে মহামারী বা মহামারীর সময়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য পর্যাপ্ত বিধান রয়েছে যা মানুষকে ঘরে থাকতে, যেখানে বসবাস করে সেখানে থাকতে, সংক্রমিত স্থান ত্যাগ করার এবং সেস্থানে প্রবেশের জন্য অনুমতি না দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞান এবং আধুনিক চিকিৎসার আগেই ইসালামে এই দিকনির্দেশনা দেয়া আছে।
হাদীস অনুসরণ করে বিজ্ঞজনেরা বলছেন, আসন্ন রমজানে কোনও ক্ষতি নেই। সুতরাং প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতিকে আল্লাহর ইচ্ছা হিসাবে গ্রহণ করা, যা আমাদের ঈমানের পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।