Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাড়ছে করোনা রোগী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫১ পিএম

প্রতিদিনই বাড়ছে দেশজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে বিভিন্ন স্থানে নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে ১১৬ জনের আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। যশোরের শার্শায় নারী চিকিৎসক আক্রান্ত হন। এছাড়া গতকাল নারায়ণগঞ্জে আরো ৭৮ জন ও নড়াইলে চার চিকিৎসকসহ ৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। 

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে করোনার উপসর্গ নিয়ে তিনটি হাসপাতালে ১৩ জন চিকিৎসাধীন। গত মঙ্গলবার থেকে গতকার বুধবার ভোর পর্যন্ত তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তারা করোনায় আক্রান্ত কি না তা পরীক্ষা করতে নমুনা সংগ্রহ করা হবে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ১৩ জনের মধ্যে সাতজনকে মিশন হাসপাতালে, তিনজনকে সংক্রমণ ব্যাধি হাসপাতালে এবং তিনজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। যাদেরর শুধু জ্বর-সর্দি রয়েছে তাদের মিশন হাসপাতালে রাখা হয়েছে। এদিকে করোনা পরীক্ষার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৭ জন চিকিৎসক ও নার্সের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বুধবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে তাদের নমুনার পরীক্ষা চলছে।
যশোর ব্যুরো জানায়, টানা প্রায় একমাসে অনেকটাই করোনামুক্ত ছিল যশোর জেলা। কিন্তু গতকাল বুধবার ১দিনের খোদা সবাইকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। ১দিনেই একজন স্বাস্থ্যকর্মীসহ ৪জনের নমুনা পরীক্ষায় রিপোর্ট হয়েছে পজেটিভ। এই নিয়ে জেলায় দু’জন স্বাস্থ্যকর্মীসহ ৫ জনের আক্রান্ত হলো। এতে জেলায় করোনার বিস্তার ঘটলো। যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু মোঃ শাহীন জানান, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনোম সেন্টারে পঞ্চম দিনের পরীক্ষায় যশোর সদরে ১ জন, চৌগাছায় ২ জন, শার্শায় ১ জনের রিপোর্ট এসেছে পজেটিভ। এর মধ্যে শার্শার একজন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন।
সিলেট ব্যুরো জানান, সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবে আরও দু’জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ পজিটিভ শনাক্ত করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার নতুন করে ৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে এ ২ জনের কোভিড-১৯ পজিটিভ ধরা পড়ে। এ নিয়ে সিলেট জুড়ে ২০ জন করোনা পজিটিভ সনাক্ত করা হলো। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপ-পরিচালক হিমাংশু লাল রায় এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এদিন ল্যাবে ৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। এতে ২ জনের ফলাফল পজিটিভ আসে। অবশ্য তারা সিলেটের নয়, বিভাগের অন্য জেলার। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটে সহকারি পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, সনাক্ত হওয়া দু’জন রোগীই হবিগঞ্জের জানতে পেরেছি।
নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, নারায়ণগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত জেলায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির প্রতিনিধি ডা. জাহিদুল ইসলাম। জাহিদুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় কেউ সুস্থ হয়নি। তবে ২০৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, যার মধ্যে প্রাপ্ত ফলাফলে ৭৮ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। আর এখন পর্যন্ত জেলায় মোট ১ হাজার ৪০৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে যার মধ্যে ৫৩৪ জনের ফলাফলে পজিটিভ এসেছে।
জেলায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা ৫৩৪ জন।
নড়াইল জেলা সংবাদদাতা জানান, জেলার লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চার চিকিৎসক ও একজন স্টাফ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, গতকাল সকালে লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চার চিকিৎসকসহ ১জন স্টাফের করোনা পজিটিভ এসেছে। এখন তাদের চিকিৎসা চলছে। তিনি আরও বলেন, নড়াইল জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট ৬৬টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে ৬৩টি রিপোর্ট পেয়েছি। সর্বমোট এ জেলায় ৬ জনের পজিটিভ এবং ৫৭টি নেগেটিভ এসেছে। তিনটি রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি।
মুন্সীগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, মুন্সীগঞ্জে নতুন করে আরো ৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সদরে পল্লীবিদুৎ সমিতির জিএমসহ ৪ জন ও শ্রীনগরে ২ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাড়ালো ৫৭। ইতোপূর্বে উপসর্গ নিয়ে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির এক কর্মী মারা যায়। তথ্য গোপন করে তার লাশ দাফন হয়। করোনায় এক পুলিশ অফিসার আক্রান্ত হওয়ায় এখানে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। সতর্ক না হওয়ায় সদর, সিরাজদিখান ও শ্রীনগরে একই পরিবারের একাধিক সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।
ভোলা জেলা সংবাদদাতা জানান, ভোলা থেকে পটুয়াখালী যাওয়া এক নারী ও তার স্বামী করোনায় আক্রান্ত প্রমাণ হওয়ায় ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের মালের হাট বাজার সংলগ্ন পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের আবু সাইয়েদ তালুকদারের বাড়িসহ ৩ বাড়ি ও আবু সাইয়েদ তালুকদারের জামাই বাড়ি বাপ্তা হওয়ায় সেই জায়গায় আরও ৩ বাড়িসহ মোট ৬ বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রশাসন। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টায় এ লকডাউন ঘোষণা করেন।
মাগুরা জেলা সংবাদদাতা জানান, মাগুরায় প্রথম কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, যিনি ছয় দিন আগে ঢাকার আশুলিয়া থেকে এসেছেন। ৩০ বছর বয়সী এই পোশাকশ্রমিকের আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ না খাকলেও আশুলিয়া থেকে আসায় তাকে পরীক্ষা করা হয়। মাগুরার সিভিল সার্জন প্রদীপ কুমার সাহা জানান, এই ব্যক্তির বাড়ি সদর উপজেলার আঠারখাদা ইউনিয়নের মৃগিডাঙ্গা গ্রামে। গতকার বুধবার মাগুরায় এই প্রথম কোভিড-১৯ পজিটিভ এসেছে। সিভিল সার্জন বলেন, এই পোশাকশ্রমিকের কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। আশুলিয়া থেকে আসার কারণে পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়। এজন্য নমুনা সংগ্রহ করে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল।
শরীয়তপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, শরীয়তপুরে নমুনা পরীক্ষায় আরও তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ওই তিনজনের রিপোর্টের বরাতে শরীয়তপুরের সিভিলসার্জন এস এম আবদুল্লাহ আল মুরাদ গতকাল বুধবার সকালে এ তথ্য জানান। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১১ জনে দাঁড়াল, যার মধ্যে মারা গেছেন একজন।
নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ডামুড্যা উপজেলায় দুইজন ও নড়িয়া উপজেলায় একজন রয়েছেন জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, শনাক্তদের প্রত্যেককে ‘হোম আইসোলেশনে’ রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তারা সবাই ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছেন।”
পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানান, পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক নারী উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ২০ এপ্রিল ঐ উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দ্বিতীয় পর্যায়ে নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছিলো। দ্বিতীয় বারের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ এসেছে। গত ২১ এপ্রিল রাত ১১ টায় রিপোর্ট দুমকিতে এসে পৌঁছায়। তিনি দুমকিতে করোনায় হয়ে মারা যাওয়া দুলাল চৌকিদারকে প্রাথমিকভাবে প্রাইভেট চেম্বারে চিকিৎসা প্রদান করা উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তার স্ত্রী। পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও জানান, আক্রান্ত ওই নারী উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুস্থ আছেন। তাঁকে আইসোলেশনে পাঠানো হবে।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলে দুইদিন পর আরও একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট ১২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলো। গতকাল বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইলের সিভিলসার্জন ডা. ওয়াহিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ২০ এপ্রিল টাঙ্গাইল থেকে ৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে একজনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। আক্রান্ত ব্যক্তি সখীপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের লাঙ্গুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৪ ঘন্টায় তিনজন চিকিৎসকসহ ১৩জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এনিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ জন। গতকাল বুধবার দুপুরে সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। সিভিল সার্জন মো. একরাম উল্লাহ জানান, গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকা থেকে আসা পিসিআর রিপোর্টে ১৩ জনের পজিটিভ এসেছে। এদের মধ্যে জেলার বিজয়নগরে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের ২জন চিকিৎসকসহ ৭জন, আখাউড়া উপজেলায় ৫জন ও নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ