Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ১ হাজার ৪০ টাকা মন দরে ধান ক্রয় করবে : কৃষিমন্ত্রী

নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০২০, ৭:৩৩ পিএম

আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত ও সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার বিষয়ে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ইতিমধ্যেই সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছে। করোনার কারণে খাদ্য সংকটে পড়তে পারে সারা বিশ^। এর প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশেও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈশ্বিক এই মন্দার হাত থেকে দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করতে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও মজুদ বাড়ানোর আহবান জানিয়েছেন। তিনি এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখার জন্য কৃষকদের নির্দেশ দিয়েছেন। মন্ত্রী আরো বলেন, কৃষকদের উৎপাদিত ফসল বিশেষ করে ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চলতি বোরো মওসুমে সরকার সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ১ হাজার ৪০ টাকা মন দরে ৮ লাখ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি মঙ্গলবার দুপুরে নেত্রকোনা জেলার হাওর উপজেলা মদন এবং খালিয়াজুরী উপজেলার বোরো ধান কাটা পরিদর্শন এবং দু’শতাধিক কৃষি শ্রমিকের হাতে স্যানিটাইজার, সাবান এবং লুঙ্গি প্রদান কালে এসব কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, হাওরাঞ্চলের কৃষকদের একমাত্র ফসল হচ্ছে বোরো ধান। আগাম বন্যা ও পাহাড়ী ঢলের কারণে তাদের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের ফসল সময় মতো ঘরে তুলতে না পারলে একদিকে হাওরাঞ্চলের কৃষকের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থারও ক্ষতি হয়। এজন্য সরকার হাওরের বোরো ফসল রক্ষার জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে একদিকে যেমন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করেছে, অপর দিকে ৭০% ভর্তুকি দিয়ে জরুরী ভিত্তিতে হাওর এলাকায় ধান কাটার জন্য ১২৮টি কম্বাইন হার্ভেষ্টর মেশিন এবং ২৩টি রিপার মেশিন প্রদান করেছে। মন্ত্রী আরো বলেন, একদিকে আগাম বন্যার শঙ্কা অপর দিকে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে বোরো ধান কাটায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছিল। সরকার হাওরাঞ্চলে ধান কাটার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যাপ্ত শ্রমিক পাঠানোর ব্যবস্থা নিয়েছে। শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রত্যয়ন পত্র প্রদান, নিরাপদ যাতায়াত এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ধান কাটার জন্য তাদেরকে পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। ধান কাটা শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে ধান কাটছেন। ইতিমধ্যে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে নেত্রকোনায় ২ জন সহ মোট ৬ জন শ্রমিক মারা গেছে। এই শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। পরে মন্ত্রী হাওরের ধান কাটা দু শতাধিক শ্রমিকের মাঝে লুঙ্গী, গামছা, সাবান ও স্যানিটাইজার বিতরণ করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু এমপি, অসীম কুমার উকিল এমপি, মানু মজুমদার এমপি, হাবিবা রহমান খান শেফালী এমপি, কৃষি সচিব মোঃ নাসিরুজ্জামান, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহা-পরিচালক ড. মোঃ শাহ্জাহান কবির, নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম, পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ হাবিবুর রহমানসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।
নেত্রকোনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত নেত্রকোনা জেলার হাওরাঞ্চলে ৩০ ভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে হাওরাঞ্চলের বেশীর ভাগ এলাকায় ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ