Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যারাকে গাদাগাদি কমাতে পুলিশ থাকছে হোটেলে

করোনা ঝুঁকি এড়াতে বিশেষ উদ্যোগ

সাখাওয়াত হোসেন | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫১ পিএম

রাজধানীসহ সারাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। ইতোমধ্যে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে থানা পুলিশ সদস্যরাও আক্রান্ত হয়েছেন। তবে করোনা ঝুঁকি কমাতে পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দেশের প্রতিটি থানায় পুলিশ সদস্যদের সংশ্লিষ্ট থানার পার্শবর্তী আবাসিক হোটেলগুলোতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতে হোটেল কর্তৃপক্ষও পুলিশকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছেন এবং করছেন। গতকাল সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

পুলিশ জানায়, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে ডিউটি করতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য অনেক দিন ধরে বাড়িতে যেতে পারছেন না। থানা ব্যারাক কিংবা পুলিশ ব্যারাকে গিয়েও গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। ফলে করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে পুলিশ সদস্যদের নিজ নিজ থানার আশপাশের আবাসিক হোটেলগুলোতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হোটেলের একেকটি রুম নিয়ে থাকছেন একেকজন সদস্য।

ডিএমপি থেকে জানা যায়, রাজধানীতে ৫০টি থানার পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসের এই সাধারণ ছুটির মধ্যেও নিরবচ্ছিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন। এর পাশাপাশি পুলিশ লাইন্স ও পিওএম সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন। এদের অনেকেই কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০দিন ধরে বাসায় ফেরেননি। করোনা পরিস্থিতির কারণেই পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বাসায় ফিরতে পারছেন না তারা। আবার থানা কোয়ার্টার বা পুলিশ লাইন্সেও থাকতে হচ্ছে গাদাগাদি করে, যেখানে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার সুযোগ নেই। এ অবস্থায় কোনো একজন পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে ওই ব্যারাক বা থানার সব সদস্যই এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবেন। সেক্ষেত্রে গোটা এলাকাই নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকবে।

এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ পেতে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম একটি বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যেসব পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালনের পর সামাজিক দূরত্ব মেনে শোয়ার বা বিশ্রামের জায়গা পাচ্ছেন না, তারা থানার আশপাশের আবাসিক হোটেলগুলোতে রুম নিয়ে থাকতে পারবেন। পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। যেসব হোটেলে ‘গেস্ট’ নেই, সেসব হোটেলের একেকটি রুম নিয়ে একেকজন থাকতে পারবেন।

জানা যায়, এরই মধ্যে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের একজন অতিরিক্ত উপকমিশনার, আরেকজন কনস্টেবল। ওই টিমের বাকি সদস্যদের হোম কোয়ারেনটাইনে পাঠানো হয়েছে।

তেজগাঁও থানার ওসি শামীম অর রশিদ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, নির্দেশনা পাওয়ার পর থেকে পুলিশকে থানার আশপাশের আবাসিক হোটেলে রাখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৫ ব্যাচকে হোটেলগুলোতে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এভাবে চলবে।

ডিএমপির গণমাধ্যম শাখার ডিসি মাসুদুর রহমান বলেন, করোনায় যেন সব পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন এবং বিশ্রাম নিতে পারেন, সে জন্য কমিশনার একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। হোটেল কর্তৃৃপক্ষকে এর বিনিময়ে কোনো টাকা দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে মাসুদুর রহমান বলেন, ডিএমপি অ্যাক্টে আপৎকালীন সময়ে এসব শূন্য হোটেল কক্ষ ব্যবহার করতে পারবে পুলিশ। কাজেই কোনো টাকা দিতে হবে না।

পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যে কেউ করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। এরপরও পুলিশকেই সব কাজে এগিয়ে আসতে হবে। সে কারণে সুরক্ষামূলক কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে পুলিশ সদস্যদের। সেই অনুযায়ী কাজ করছে পুলিশ।

মতিঝিল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনির হোসেন মোল্লা বলেন, মতিঝিল এলাকার প্রায় ২৫টি হোটেলের রুম বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি মতিঝিল থানা পুলিশের জন্য, বাকি ১৫টি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের সদস্যদের জন্য। একেকজন একটি কক্ষে অবস্থান করবেন। তাদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে পুলিশ লাইন্স থেকে। হোটেল কর্তৃপক্ষও পুলিশের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। পুলিশ বললেই হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ