Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিত্যপণ্য সরবরাহই চ্যালেঞ্জ

চট্টগ্রাম বন্দরজটে দুই সঙ্কট

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১৮ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫১ পিএম

চট্টগ্রাম বন্দরজটে তৈরি হয়েছে দুইটি জটিল সঙ্কট। এক. সিডিউল অনুসারে একের পর এক আসা জাহাজের জট নিরসনের জন্য বন্দরে কন্টেইনারের জট দ্রæত কমানো। যাতে স্বাভাবিক বন্দর কার্যক্রমে চলমান প্রায় অচলদশা কাটানো যায়।

দুই. বন্দরের সব ইয়ার্ডে কন্টেইনার জটের পাহাড়ে আটকে পড়েছে বিপুল পরিমাণ বিশেষ করে রমজান মাস উপলক্ষে আমদানি খাদ্যশস্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় ও ভোগ্যপণ্য। এ মুহূর্তে বন্দর থেকে দ্রæততম সময়ে খালাস, ডেলিভারি, পরিবহনের মাধ্যমে সরবরাহ অর্থাৎ সারাদেশে নিত্যপণ্যের সাপ্লাই চেইন সচল ও নিশ্চিত রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। সেই সঙ্গে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর সার্বক্ষণিক সচলতার বিষয়টিও সরকারের অগ্রাধিকার বিবেচিত। গতকাল বন্দর কর্তৃপক্ষ, শিপিং-কাস্টমস সার্কেল এবং আমদানিকারক, ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা এই তাগিদ দেন। মাহে রমজানের বাকি মাত্র ৬ দিন। আর, করোনাকারণে পরিবহন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ। এ অবস্থাতেই বন্দরজটের কবলে থাকা খাদ্যসহ নিত্যপণ্য সমগ্র দেশে জরুরিভিত্তিতে কীভাবে সমগ্র দেশে পরিবহন করা যায় এ নিয়ে দৃশ্যমান উদ্যোগ ও অগ্রগতি নেই গতকাল দিনশেষেও।

চট্টগ্রাম বন্দর-শিপিং সূত্রে জানা গেছে, বন্দরের সবকটি ইয়ার্ডে পণ্যভর্তি মোট কন্টেইনার মজুত আছে ৪৮ হাজার ৪৬৮ টিইইউএস। ধারণক্ষমতা ৪৯ হাজার ১৮ ইউনিট কন্টেইনার। গত ২৪ ঘণ্টায় হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩ হাজার ৮৮৬ কন্টেইনার। অথচ ডেলিভারি হয় মাত্র ৫৫৮ কন্টেইনার। বন্দরের জেটি-বার্থে আরও আমদানি পণ্যভর্তি কন্টেইনারবাহী ১১টি জাহাজে খালাস কাজ চলছে। জেটিতে ভিড়ার জন্য বহির্নোঙরে জটে অপেক্ষা করছে আরও ৩৬টি কন্টেইনার-জাহাজ। জেটিতে খোলা সাধারণ কার্গো জাহাজে মালামাল হ্যান্ডলিং করা হচ্ছে ৪টি জাহাজে। তাছাড়া চলতি ও আসছে সপ্তাহে আমদানি পণ্যভর্তি আরো জাহাজ আগমনের সিডিউলে রয়েছে। যার বড় অংশই রোজার নিত্যপণ্য।

বন্দরের কন্টেইনার জটে এখন খালাসের অপেক্ষায় আছে প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন নিত্যপণ্য। আরও পণ্যভর্তি ১২ জাহাজ ভাসছে, মসুরসহ বিভিন্ন ধরনের ডাল, গম, চিনি, ভোজ্যতেল, ছোলা ও সরিষাবাহী। আগামী ২ সপ্তাহে আসবে ১০টি জাহাজ।

চিটাগাং চেম্বারসহ বন্দর ব্যবহারকারীগণ সমন্বিত একটি টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে বন্দরজট থেকে রোজার নিত্যপণ্য সারাদেশে নির্বিঘেœ সরবরাহের জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে। এরজন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ, এনবিআর, কাস্টমস, প্রশাসন এবং ব্যবসায়ীমহল সবার ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ।

চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজজট কাটাতে দ্রæত কন্টেইনার জটের সুরাহা খুঁজছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এরজন্য একাধিক বিকল্পের মধ্যে প্রথম গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে, বন্দরের ২৫ কিলোমিটার ব্যবধানে অবস্থিত ১৯টি বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোতে (অফডক) এখনও যথেষ্ট খালি জায়গা কাজে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার কন্টেইনার বন্দর থেকে সেখানে সরিয়ে মজুত। তাহলে বন্দরে অপেক্ষমান জাহাজগুলো জটমুক্ত করা এবং আরও কন্টেইনার খালাস সম্ভব হবে। এ বিষয়ে অনুমোদন চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এসবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে গতকাল চিঠি দেন বন্দর কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান। অফডক মালিকদের সমিতি বিকডা বন্দরকে জানায়, অফডক সুবিধায় আরও ১৮ হাজার কন্টেইনার মজুত রাখা যাবে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্দর

১৩ জানুয়ারি, ২০২৩
২৪ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ