Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

চিকিৎসকের কথা শুনে অবাক হলেন প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০২০, ১:০৮ পিএম

করোনা পরীক্ষার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ পিসিআর ল্যাব ও এন-৯৫ মাস্ক চাইলেন নারায়ণগঞ্জের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মো. শামসুদ্দোহা। ওই জেলায় কোনো গবেষণাগার নেই শুনে অবাক হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারণ জানতে চান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির কাছে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নারায়ণগঞ্জ জেলার সঙ্গে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি অবাক হচ্ছি, সেখানে কোনো গবেষণাগার নেই।
ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে জেলার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ও খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মো. শামসুদ্দোহা বলেন, যেহেতু নারায়ণগঞ্জে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, এটা শিল্পনগরী এবং বন্দরনগরী। প্রচুর বিদেশফেরত লোক নারায়গঞ্জে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে, যাদের তালিকা আমাদের হাতে পুরোপুরি নেই। সেই নিরিখে আমি অবশ্যই দাবি জানাব যে, একটা পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য। যেহেতু আমাদের একটা করোনা হাসপাতাল আছে। স্যাম্পলগুলো কালেক্ট করে আমাদের ঢাকায় পাঠাতে হচ্ছে এবং রিপোর্ট পেতে দুই দিন লেগে যাচ্ছে। আমাদের যদি পিসিআর ল্যাব থাকে, আমি সকালে স্যাম্পল কালেক্ট করে সন্ধ্যার মধ্যে রিপোর্ট পেয়ে যাব। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাতে চাই, একটি পূর্ণাঙ্গ পিসিআর ল্যাব অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থাপনের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
তিনি বলেন, ‘এন-৯৫ মাস্ক আমার হাসপাতালে আমি একটাও পাইনি অথচ আমি কিন্তু করোনা চিকিৎসায় থেমে থাকি নাই। মাস্ক ছাড়াই কিন্তু খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতাল করোনা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে। সেই কারণেই কিনা আমার হাসপাতালে ১৬ জন চিকিৎসক-কর্মকর্তা করোনা আক্রান্ত।
তার এ কথা বলার পপ্রপ্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, যেহেতু ঢাকার পরেই আমাদের নারায়ণগঞ্জেই আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, ঢাকায় টেস্ট করতে হয়। দ্বিতীয়ত হচ্ছে মাস্ক, যেটা এটা আসলেই তো আমাদেও নেই। এটার কী সমাধান আমাদেরকে একটু বলেন।

তখন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখনও চেষ্টা করছি ওখানে ল্যাব সেটআপ করা যায় কিনা। আগে ল্যাব সেটআপ করে তারপর পিসিআর মেশিন আমরা দেয়ার ব্যবস্থা করব। পিসিআর মেশিন আমাদের আছে, কিন্তু ল্যাব নেই। আমরা চেষ্টা করেছিলাম মাতুয়াইলে আমাদেও যে শিশু হাসপাতাল আছে সেটার ল্যাব ব্যবহার করা যায় কি-না। কিন্তু সেটা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ফলে আমরা আগে ল্যাব সেটআপ করে পরে পিসিআর মেশিন দব। একটু সময় লাগবে। আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়লে আমরা সেই ব্যবস্থা করব।
তিনি বলেন, ‘এন-৯৫ যে মাস্ক এটা আমেরিকার একটা কোম্পানি বানায়, এটা সারা পৃথিবীতে সরটেজ (ঘাটতি) এবং নাই। এন-৯৫ এর সমমানের যেসব মাস্ক আছে সেগুলো আমরা নেয়ার চেষ্টা করছি। এ সপ্তাহের মধ্যে অ্যাভেইলেবল হয়ে যাবে। প্রয়োজনের তুলনায় তো আমাদের সব জায়গায় সরটেজ। কিছু দেয়া হয়েছে আবার দিয়ে দেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন বলেন, নারায়ণগঞ্জে কি কোনো ইনস্টিটিউশন নাই? কিচ্ছু নাই যেখানে একটা ল্যাব স্থাপন করা যায়? যে কোনো একটা রিসার্চ সেন্টার লাগবে। কিন্তু আমি খুব অবাক হচ্ছি যে, নারায়ণগঞ্জে কি কোথাও কোনো রিসার্চ সেন্টার নাই? তার মানে নারায়ণগঞ্জ সারাজীবন ঢাকার ওপর নির্ভর করে চলে আসছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে আমরা যখন চাহিদার কথাটা শুনেছি আমরা খুবই চেষ্টা করছি ওখানে একটা পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা যায় কি-না। অসুবিধাটা হচ্ছে বাংলাদেশে তো পিসিআর মেশিন অ্যাভেইলেবল না। যদি থাকত তাহলে করা যেত। আমরা চেষ্টা করছি যতদ্রুত সম্ভব স্থাপন করার। আমাদেরকে যখন যে চাহিদা দেয় আমরা কিন্তু পূরণের চেষ্টা করি। এন-৯৫ মাস্কের সরবরাহ কিন্তু বন্ধ হয়ে গেছে, আমেরিকা বন্ধ করে দিয়েছে। সমমানের মাস্কের যদি সঙ্কট থাকে আমরা তা পূরণ করার চেষ্টা করব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,ওখানে যতদ্রুত সম্ভব পরীক্ষাটা আপনারা করানোর চেষ্টা করেন। নারায়ণগঞ্জ থেকে এখন তো আসা-যাওয়া খুব কাছে হয়ে গেছে। যতদ্রুত এটা করা যায়। দরকার হলে কিছু লোককে ভাগ কওে দেন যাতে নারায়ণগঞ্জেরটা আগে কওে দেয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ