Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১ আশ্বিন ১৪৩১, ২২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

চিকিৎসক আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে

মানসম্মত পিপিই- মাস্ক সঙ্কট, রোগীদের লক্ষণ গোপন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

বৈশ্বিক মহামারী করোনার থাবায় দিন দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এসব রোগীর চিকিৎসা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রথম সারির এই যোদ্ধা চিকিৎসকরা। করোনাভাইরাসে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ৬৪ জন চিকিৎসক যোদ্ধার আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে দেশের চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ ডক্টরস ফাউন্ডেশন (বিডিএফ)। একই সঙ্গে চিকিৎসা সেবার সঙ্গে জড়িত প্রায় ১২০ জন মানুষ কোভিড-১৯ এ সংক্রমিত হয়েছেন। বিডিএফ’র চিফ এডমিনিস্ট্রেটর নিরুপম দাস এই তথ্য জানান। তিনি বলেছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য থেকে আক্রান্ত চিকিৎসাকর্মীদের এই সংখ্যাটি তারা পেয়েছেন।

গতকাল সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত করোনা রোগীদের অন্যতম চিকিৎসা কেন্দ্র ঢাকার কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের একজন চিকিৎসক করোনাভাইরাসে আক্রন্ত হয়েছেন বলে হাসপাতালটির সূত্রে জানা গেছে। বিডিএফ’র চেয়ারম্যান ডা. মো. শাহেদ রাফি পাবেল ইনকিলাবকে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায়ই বেশি চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে রাজধানীর ইমপালস হসপিটালে ৩ জন, ইনসাফ বারাকা কিডনি হসপিটালে ২, ময়মনসিংহে ২, গাজীপুরে ২, ঢাকা মেডিকেল, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, যশোর ও সাভারে ১ জন করে চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সর্বশেষ কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালে ১ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, প্রতিদিনই আক্রান্ত চিকিৎসকদের সংখ্যা বাড়ছে। করোনায় চিকিৎসকরাই সবচাইতে বেশি ঝুঁকিতে আছেন। কোভিড-১৯ আক্রান্ত চিকিৎসকদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মঈন উদ্দিন। এছাড়া আরও এক চিকিৎসক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন বলেও জানান ডা. পাবেল।

এদিকে রাজধানীর ইমপালস হসপিটালে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত চিকিৎসকের দায়িত্ব না নিয়ে বরং তাকে মানসিকভাবে হয়রানি করছে প্রতিষ্ঠানটি। হসপিটালটি গাইনি বিভাগের ওই নারী চিকিৎসকের মার্চ মাসের বেতন আটেকে দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি ওই চিকিৎসকের পাশে দাড়নোয় সহকর্মীদেরও বেতন আটকে দেয় প্রতিষ্ঠানটি। সূত্র মতে, হাসপাতালের সকল চিকিৎসকের বেতন হলেও এখনও বেতন হয়নি গাইনি বিভাগের চিকিৎসকদের।

চিকিৎসকার বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন কেন জানতে চাইলে বিডিএফ’র চেয়ারম্যান বলেন, চিকিৎসকদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান নির্দেশিত পিপিই ও এন-৯৫ মাস্কের সঙ্কট। একই সঙ্গে অনেক রোগী করোনার লক্ষণ গোপন করে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তার সংস্পর্শে এসে চিকিৎসকরা আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়া একটি হাসপাতালে একজন আক্রান্ত হওয়ার পর তার সংষ্পর্শে থাকা অন্য চিকিৎসকদের কোয়ারেন্টিন না করে দায়িত্ব পালন করানো এবং পরীক্ষা না করোনোর কারণে চিকিৎসকরা আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে ডা. মো. শাহেদ রাফি পাবেল বলেন, ঢাকা মেডিকেলের গাইনী বিভাগে প্রথম একজন চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ার পর অন্য চিকিৎসকদের কোয়ারেন্টিন করার কথা আমরা বলেছি। কিন্তু হাসপাতাল তা করেনি। বরং তাদের দিয়ে পরবর্তীতে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। এর ফল হিসেবে আরও দুই জন চিকিৎসক এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ