Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অকার্যকর লকডাউন

করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের অবরোধ বিক্ষোভ : আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নীরবতায় প্রশ্ন জনসাধারণের

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে গার্মেন্টস শ্রমিকরা। গতকাল বুধবার রাজধানীর মিরপুর, উত্তরা, পল্লবী ও প্রগতি সরণি এলাকা এবং সাভারের বিভিন্ন স্থানে কারাখানার শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে। হাজার হাজার শ্রমিক করোনা সংক্রমণের সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব না মেনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় অবস্থান করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল নীরব। এতে করে ওই সব এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্কে সৃষ্টি হয়। 

সচেতন মহলের মতে, এভাবে দিনের পর দিন গার্মেন্টস শ্রমিকদের তান্ডবে ঢাকাসহ সারাদেশই করোনার ঝুঁকিতে পড়বে। ইতোমধ্যে বগুড়া, নওগাঁ, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, কিশোরগঞ্জসহ দেশের কয়েকটি জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে ঢাকা ফেরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের মাধ্যমে। দেশের বিভাগ, জেলা, থানাগুলোতে ঢাকাফেরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেয়া হলেও বেশিরভাগ এলাকায় তা তারা মানছে না। এতে করে স্থানীয় বাসিন্দারা চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
রাজধানীর বাড্ডা এলাকার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা লকডাউন ঘরবন্দি, আর গার্মেন্টস শ্রমিকরা রাস্তায় অবরোধ করছে। এই লকডাউনের মানে কি? পুলিশ, সেনাবাহিনী কি করছে? তারা বাধা দিচ্ছেন না কেন? এ প্রসঙ্গে নাগরিক টিভির প্রধান নির্বাহী ডা. আবদুন নূর তুষার বলেন, কোনো এলাকায় ৭০ শতাংশ লকডাউন কার্যকর না হলে সেই লকডাউন কোনো কাজে আসবে না। তার মানে হলো, ঢাকার দেড় কোটিসহ সারাদেশের ১৭ কোটি মানুষের ঘরবন্দি থাকার উপকারিতা নিমিষেই বিনষ্ট করে দিচ্ছে এই গার্মেন্টস শ্রমিকরা।
করোনা প্রকোপ ঠেকাতে সারাদেশের কোটি কোটি মানুষের সামাজিক ও শারিরিক দূরত্ব রক্ষা করতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে সশস্ত্র ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একই সাথে প্রশাসনের কর্মকর্তারাও মানুষকে ঘরে রাখার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দলেবলে রাস্তায় নেমে সবকিছু মøান করে দিচ্ছে কয়েক লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক। তাদের আত্মঘাতী আচরণে কোটি কোটি মানুষের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
দেশের কোটি কোটি মানুষের কাছে এখন নতুন আতঙ্কের নাম গার্মেন্টস শ্রমিক। গোটা বিশ্ব যেখানে করোনার ভয়ে কাঁপছে সেখানে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেপরোয়া আচরণ পুরো জাতির জন্যই অভিশাপ ডেকে আনতে পারে। এজন্য আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে সচেষ্ট হতে হবে। কি কারণে তারা গার্মেন্টস শ্রমিকদের এমন আচরণকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন সেই প্রশ্ন অনেকেরই।
এ প্রসঙ্গে মিরপুর জোনের একজন কর্মকর্তা বলেন, আসলে তাদেরকে সরানোর জন্য চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। পরে বাধ্য হয়ে তাদেরকে বেতনের আশ্বাস দিয়ে সরানো হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, অনেকটা মানবিক কারণেও গার্মেন্টস শ্রমিকদের গায়ে হাত তোলা হচ্ছে না। অথচ দিল্লিতে একই রকম ঘটনায় পুলিশ লাঠিপেটা করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করেছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বেশকিছু এলাকায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ, মিরপুর, বাসাবো, নতুন করে গাজীপুর, ময়মনসিংহ এবং কেরানীগঞ্জে আরও বেশি সংক্রমিত হচ্ছে। আমাদেরকে সেখানে লকডাউন আরও বেশি কঠিন করতে হবে। সংক্রমণিত এলাকাগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ এলাকাতেই রয়েছে শত শত গার্মেন্টস কারখানা। এতে বোঝা যায়, গার্মেন্টস শ্রমিকরাই এখন করোনার সংক্রমণ ঘটাচ্ছে।



 

Show all comments
  • ম নাছিরউদ্দীন শাহ ১৬ এপ্রিল, ২০২০, ৯:০২ এএম says : 0
    .................এখন কঠিন কঠোরভাবে শৃংখলার জন্য শাসন জরুরী। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী আপনি একমাত্র প্রধান নির্বাহী দেশের মানুষের জীবন বাচান। আমাদের আশা ভরশার শেষ ঠিকানা আপনি। মহান আল্লাহর পবিত্র দরবারে পবিত্র রমজানের রহমত বরকত মাগফেরাতে উছিলায় আল্লাহ্ আমাদের সাহায্য করুক। আল্লাহ্ আপনি আমাদের দেশের মানুষ কে হেফাজত করুন। আমিন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ