পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়ার সাথে সাথে চিকিৎসকদের একটি বড় অংশ সব ধরণের চিকিৎসা সেবা থেকে নিজেদের বিরত রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর বেসরকারি কিছু হাসপাতাল ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকলেও চিকিৎসক পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে শুধু রিসেপশনিস্ট আর নার্সদের দেখা মিলছে। এর মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন দেশের কিছু চিকিৎসক। আর এমনই বাস্তবতায় চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হন রাজধানীর ইমপালস হসপিটালের একজন নারী চিকিৎসক। আক্রান্ত হওয়ার পর গাইনি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রার ওই চিকিৎসকের দায়িত্ব না নিয়ে বরং তাকে মানসিকভাবে হয়রানি করছে প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি হসপিটালটি তার মার্চ মাসের বেতন আটকে দেয়। একই সঙ্গে হসপিটালের পক্ষ থেকে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে বলা হয়, ওই নারী চিকিৎসক হসপিটালে সেবা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হননি। তার স্বামীর মাধ্যমে সে আক্রান্ত হয়েছেন। এর দায় হসপিটাল নেবে না। এখানেই শেষ নয়; ওই চিকিৎসকের বিভাগের সহকর্মীদেরও বেতন আটকে দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র মতে, হাসপাতালের সকল চিকিৎসক বেতন পেলেও এখনও বেতন পাননি গাইনি বিভাগের ওই চিকিৎসকরা। একই সঙ্গে ওই চিকিৎসকের পর ইমপালস হসপিটালের আরও ৩ জন চিকিৎসক ও ২ জন স্টাফের করোনা পজিটিভ আসে। আর এখন বিষয়টি ভুল ভোঝাবুঝি হিসেবে দাবি করছেন হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা।
হাসপাতাল থেকে ফোনে ওই চিকিৎসক গত মঙ্গলবার ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের গাইনি বিভাগে একজন রোগীর কোভিড-১৯ এর লক্ষণ দেখতে পাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছিলাম, রোগীও চাচ্ছিল এই হাসপাতাল থেকে চলে যেতে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছুটি দেয়নি। এই অবস্থায় আমরা কাজ করি। তিনি বলেন, গত ৮ এপ্রিল সর্বশেষ ডিউটি করার পর ১০ তারিখে তার হাসপাতালে আসার কথা থাকলেও এরমধ্যে তিনি করোনার উপসর্গ জ্বর, কাশিতে ভুগতে শুরু করেন। এর মধ্যে একই বিভাগের ১২ জন চিকিৎসক, পাঁচজন নার্সসহ অনেকে নিজ উদ্যোগে কোভিড-১৯ টেস্ট করাই। সেখানেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনো সহযোগিতা করেনি। ১২ এপ্রিল আমার পরীক্ষার প্রতিবেদনে কোভিড-১৯ পজিটিভ আসে।
করোনায় আক্রান্ত ওই নারী চিকিৎসক বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনে ইমপালস হসপিটাল কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ফেইসবুকে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, আমি হাসপাতাল থেকে আক্রান্ত হয়েছি, কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার কোনো খবরতো নেয়নি। উল্টো প্রশাসন থেকে প্রচার করা হচ্ছে, আমার স্বামীর কাছ থেকে আক্রান্ত হয়েছি। প্রকৃতপক্ষে আমি আক্রান্ত হওয়ার পর আমার স্বামীরও টেস্ট করানো হয়েছে, উনি আক্রান্ত নন। একই সঙ্গে আমার কোনো দায়িত্ব তারা নিতে রাজি নয় বলেই আমার সঙ্গে তারা এই ধরনের আচরণ করেছে।
চিকিৎসকের দায়িত্ব না নেওয়া এবং মার্চ মাসের বেতন না দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইমপালস হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার ডা. খাদিজা জুমা বলেন, প্রথমে ভেবেছিলাম যেহেতু আমাদের কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী আসেনি তাহলে চিকিৎসক কিভাবে আক্রান্ত হবে। তবে পরবর্তীতে আরো চিকিৎসক ও স্টাফ আক্রান্ত হওয়ায় বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। আগের বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি ছিল বলে দাবি করেন তিনি। সবার বেতন হলেও গাইনি বিভাগের বেতন না হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আপনাকে একজন মুখে অভিযোগ করেছে আর সেটা আমাদেরকে বলছেন। হাসপাতালের কিছু চিকিৎসকদের বেতন বাকী রয়েছে। এখনও দুই তিন মাস পার হয়নি। বেতন দিয়ে দিবো বলেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ইমপালস হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রফেসর ডা. জহির আল আমিনকে কয়েকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এর আগে ঢাকার আরেক বেসরকারি হাসপাতাল আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের আইসিইউতে একজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী মারা যান। ওই হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসকদের সুরক্ষা উপকরণ দেওয়ার দাবি নিয়ে দ্বন্দের জেরে তিনজন চিকিৎসককে বরখাস্ত করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।