Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

পরীক্ষা-রোগী দুটোই বাড়ছে

এক দিনেই শনাক্ত রেকর্ড ১৮২ জন, মৃত্যু ৫ ষ কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বাড়তে দেয়া যাবে না : স্বাস্থ্যমন্ত্রী ষ চিকিৎসায় যুক্ত হয়েছে নতুন হাসপাতাল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

দেশে এক দিনেই ১৮২ জনের মধ্যে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এতে দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৮০৩ জনে দাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৯ জন। এই সময়ে আরও তিনজন সুস্থ হয়ে ওঠায় এ পর্যন্ত মোট ৪২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। চিকিৎসাধীন আছেন ৭২২ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৫৭০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যা দিনের হিসেবে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এ পর্যন্ত মোট ১১ হাজার ২২৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গতকাল করোনাভাইরাস সংক্রান্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এসব তথ্য জানান। বুলেটিনে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রস্তুুতির বিভিন্ন বিষয় তথ্য তুলে ধরেন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. নাসিমা সুলতানা।

বুলেটিনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তারা দেশবাসীর সেবায় এগিয়ে এসেছেন। বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ইতিমধ্যে কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ঢাকা শহরের মধ্যে যে হাসপাতালগুলো আমরা নেব, তার মধ্যে ৫০০ শয্যার শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ৭০০ শয্যার আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল- এগুলো সবগুলোই ভালো হাসপাতাল, সেখানে আইসিইউ রয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক জেলায় বেসরকারি হাসপাতাল যেগুলো আছে, তারা এগিয়ে আসছেন। তাদের হাসপাতালগুলোও আমরা তালিকাভুক্ত করে নিচ্ছি। মন্ত্রী জানান, প্রতিটি জেলার মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যারা করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করাতে আগ্রহী, তাদেরও অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভবন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুরাতন বার্ন ইউনিট, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল ও পঙ্গু হাসপাতালের পুরনো একটি অংশকে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নির্ধারিত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। রাজধানীর উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশমৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট, ফুলবাড়িয়া এলাকার রেলওয়ে হাসপাতাল ও নয়াবাজারের মহানগর জেনারেল হাসপাতালও কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিকাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস-বিআইটিএডিতেও করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য সারা দেশে ৭ হাজার ৬৯৩টি আইসোলেশন শয্যা এবং ১১২টি আইসিইউ শয্যা প্রস্তুত রাখা রয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, এ পর্যন্ত নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমণেরে অধিকাংশ ঘটনা ঘটেছে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে। নিষেধাজ্ঞার পরও এ দুটি এলাকা থেকে মানুষ অন্য এলাকায় যাচ্ছে এবং তাদের অনেকের মধ্যে কোভিড-১৯ ধরা পড়ছে। তিনি বলেন, আমি গত রোববার বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজের পরিচালকদের সাথে আলোচনা করেছি। সব জায়গায় দেখা গেছে, জেলাতে যেখানে সংক্রামিত হয়েছে, যারা সংক্রামিত করেছেন সে ব্যক্তিগুলো ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে গিয়েছেন। এ বিষয়ে আমাদের আরও বেশি পদক্ষেপ নিতে হবে। লকডাউন জোরদার করতে হবে, বিশেষ করে ওই এলাকাগুলোতে। কিন্তু এখন লক্ষ্য করা যাচ্ছে, লকডাউনটা মানুষে পুরোপুরি মেনে চলছে না। বাজারে জটলা পাকিয়ে আছে, অনেক লোকজন ঘোরাফেরা করছে। এটি পরিহার করতে হবে। যেখানে ঘোরাফেরা করবে, সেখানেই সংক্রমিত হবে। ইতোমধ্যে আপনারা জানেন, আমাদের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন চলছে। সেটি যেন না বাড়ে, সেদিতে খেয়াল রাখতে হবে।
এই সময় স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর নাসিমা সুলতানা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ আগের দিনের চেয়ে ৩৮ শতাংশ বেশি এবং ১৭ শতাংশ বেশি পরীক্ষা করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টিনে গেছেন আরও ৫ হাজার ৬৮৪ জন। এখন পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ৮৫ হাজার ৪৯৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮৪ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে এবং ২ হাজার ১৮৯ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন মুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪৫ জন এবং এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন মুক্ত হয়েছেন ৬৩ হাজার ২৭৬ জন। আর আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৮৪ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২৯৯ জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে মুক্ত হয়েছেন ১৭ জন।সারাদেশে সকল জেলা উপজেলায় ৪৮৮টি প্রতিষ্ঠানে ২৬ হাজার ৩৫২ জনের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সমন্বিত নিয়ন্ত্রন কক্ষের তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের হট লাইন নম্বরে (১৬২৬৩) ৫৩ হাজার ১৮০টি কল এসেছে, ৩৩৩ নম্বরে কল এসেছে ৩৭ হাজার ৭২২টি এবং আইইডিসিআর এর (১০৬৫৫; ০১৯৪৪৩৩৩২২২) নম্বরে ফোন কল এসছে ৩ হাজার ২০৯ টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ৯৪ হাজার ১১১টি করোনা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত ফোন কল এসেছে। এসব নম্বরে এ পর্যন্ত মোট কল এসছে ২২ লাখ ৩০ হাজার ৭৪০টি। গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৬২৫ জন চিকিৎসক এবং এক হাজার ৩১৪ জন নার্স কোভিড-১৯ চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এই সময়ে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর এবং স্থবন্দরগুলো দিয়ে আরও ২৯৭ জন দেশে প্রবেশ করেছেন।

যেসব প্রতিষ্ঠানের করোনাভাইরাসের পরীক্ষা চলছে সেগুলো হলো- আর্মডফোর্সে ইনস্টিটিউট অব ফ্যাথলজি, বিএসএমএমইউ, ঢাকা শিশু হাসপাতাল, ঢাকা মেডকেল কলেজ, আইসিডিডিআরবি, আইদেশী, আইপিএইচ, আইইডিসিআর, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন, বিআইটিআইড চট্টগ্রাম, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রংপুর মেডিকেল কলেজ, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ, খুলনা মেডিকেল কলেজ এবং শের-এ-বাংলা মেডকেল কলেজ বরিশাল।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ