Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘরে থাকবেন না কবরে সিদ্ধান্ত আপনার

ব্রিফিংয়ে নতুন আইজিপি বেনজীর আহমেদ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে সরকার নির্দেশিত সামাজিক দূরত্ব অর্থাৎ ঘরের থাকার বিষয়টি অনেকেই মেনে চলছেন না। এ অবস্থায় ‘ঘরে থাকবেন, না-কি কবরে থাকবেন’ এই সিদ্ধান্তটা আপনার। গতকাল সোমবার র‌্যাব ডিজি হিসেবে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে বিদায়ী অনলাইন ব্রিফিংয়ে এমন মন্তব্য করেন পুলিশের নবনিযুক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। তিনি আরো বলেন, সরকার নির্দেশিত সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নাগরিক দায়িত্ব। এটি বাস্তবায়নে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বলপ্রয়োগের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নিজেকে, পরিবারকে ও দেশকে রক্ষার স্বার্থে নিজেরা শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করা। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার এ কথা বলা সত্তে¡ও অনেকেই তা লঙ্ঘন করছেন। এখন বলব, আপনি ঘরে থাকবেন, না-কি কবরে যাবেন, এই সিদ্ধান্তটা আপনার। সবাই ঘরে থাকবেন আর কেউ কেউ বাইরে থাকবেন এটা হতে দেয়া হবে না। নূন্যতম প্রয়োজনে বাইরে যাওয়া, আড্ডা দেয়া, অনর্থক ঘোরাঘুরি থেকে সবাইকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানান তিনি।
বেনজীর আহমেদ বলেন, অনেকেই গভীর রাতে কিংবা ভোওে নৌকায় বা নানা উপায়ে যাতায়াতের চেষ্টা করছেন। এগুলো করতে দেয়া হবে না। যে যেখানে আছেন, সেখানেই থাকুন। সে স্থান ত্যাগ করে অন্য কোথাও যাওয়ার চিন্তাও মাথায় আনবেন না। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের হুমকি এখন ধনী-গরিব সবার জন্য সমান। তাই সর্বসাধারণের জন্য অনুরোধ থাকবে এই ক্রাইসিসের মধ্যে নিজের কথা ভাবুন, দেশের কথা ভাবুন, পরিবারের কথা ভাবুন, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন। এই দায়িত্ব কেবল একার নয়, সবার।
ত্রাণ বিতরণে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দিতে পারেন। খোলাবাজার বিক্রির (ওএমএস) চালের ক্ষেত্রেও আমাদের আগে থেকে জানাবেন যেন সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়। এছাড়া, ব্যত্তিগত উদ্যোগে কেউ বা কোনো প্রতিষ্ঠান ত্রাণ দিতে চাইলে পুলিশের সহায়তা নিতে পারেন।
স¤প্রতি দুটি ওষুধের দোকানে ডাকাতির ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা সংকটের ফলে নানা ধরনের সামাজিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক রয়েছে। এখন সার্বক্ষণিক শুধু ওষুধের দোকানগুলো খোলা থাকছে, এ বিষয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনা সংকটের এ সুযোগে বিশ্বজুড়ে উগ্রবাদী গোষ্ঠী আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা পরবর্তী সময়ই, করোনা সংকটের মধ্যেই তারা তৎপর হয়ে উঠতে পারে। জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। তাই বৈশ্বিকভাবে নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত ঝুঁকি থেকেই যায়। করোনা সংকটের মধ্যেও র‌্যাবের হাতে জঙ্গি ধরা বন্ধ নেই। আরও ১০টা কাজ করলেও র‌্যাবের লক্ষ্যে সন্ত্রাসবাদ অগ্রাধিকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ত্রাণে নয়-ছয় করলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি
করোনা সংকটে যারা ত্রাণ নিয়ে নয় ছয় করছে, তাদের প্রতি হুঁশিয়ারি জানিয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, ত্রাণ নিয়ে কোনও প্রকার নয়-ছয় করতে দেবো না। ধরতে পারলে তাৎক্ষণিক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী ত্রাণের অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতির কথা বলেছেন। আবার কেউ কেউ এক সের চাল দিতে গিয়ে ২০ জন মানুষকে একত্রিত করছেন। যাদের সাহায্যের প্রয়োজন, তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দিয়ে আসা যায়। এতে শৃঙ্খলা থাকে। লোকসমাগম করার তো দরকার নেই। এই মহামারি থেকে রক্ষা পেতে ব্যক্তি সচেতনতা, পারিবারিক সচেতনতা, সামাজিক সচেতনতার কোনও বিকল্প নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ