Inqilab Logo

বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সোনালী ফসলে করোনার থাবা

খ,আ,ম রশিদুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

কিভাবে ফসল কাটবেন বুঝতে পারছেন না কৃষক রহমত আলী। জমিতে পাকা ধানের গন্ধ। ফসলের উৎপাদন হয়েছে ভাল। শ্রমিক মিলছে না। এখন উপায় কি? আরেক কৃষক আমির হোসেন। ৯০ শতক জমি চাষ করেছেন। প্রচুর ধান ফলেছে। কিন্তু ফসল কাটতে পারছেন না। 

শ্রমিক সঙ্কট তাই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোন রকমে ধান কাটা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনি ভাবে জেলার বিভিন্ন স্থানে বোরো ধান পেকে জমিতে পড়ে আছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে ধানকাটর শ্রমিকরা কাজে আসতে পারছেন না। ধানের উৎপাদনে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক। কিন্তু করোনার থাবায় তাদের স্বপ্ন যেন লন্ড ভন্ড। মাঠে মাঠে পাকা ধান যখন কাটার সময় হয়েছে তখনই হানা দিয়েছে প্রাণ ঘাতি করোনা। আর এর প্রভাবে ধান কাটা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। জমিতে পাকা ধান থাকলেও ধান কাটার শ্রমিক মিলছে না। এ নিয়ে চিন্তিত কৃষক। কৃষি বিভাগ বলছে, ধান কাটা শ্রমিক সঙ্কটসহ প্রতিক‚ল পরিস্থিতি থাকলেও কৃষি বিভাগের সাহায্য সহযোগিতায় সকল সমস্যার অবসান হবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, জেলার ধরন্তি হাওর, শাপলা বিল, লইস্কা বিলসহ চারিদিকে সোনালী ফসলের আভা। মাঠজুড়ে সোনালী ফসল। চলমান করোনার প্রভাবে ব্যাপকভাবে শ্রমিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অন্য জেলা থেকে ধান কাটার শ্রমিক আসতে পারছে না। টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া দুঃসাধ্য। কৃষকরা বলছেন, ধান কাটার সময় নরসিংদী, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শ্রমিকরা এসে ধান কাটায় অংশ নিত। কিন্ত করোনা সঙ্কটের কারণে শ্রমিকরা ধান কাটার জন্য আসতে পারছে না। ফলে মাঠের ধান মাঠেই নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ লাখ ১০ হাজার ৮শ’ ৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩২ হাজার হেক্টর হাওড়ের ফসল রয়েছে। জমির ধান থেকে ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৮শ’ ১০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ১৬শ’ কোটি টাকা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. রবিউল হক মজুমদার বলেন, দুর্যোগময় পরিস্থিতি কৃষকের জন্য আসলেই বড় চ্যালেঞ্জ। তবে তিনি শ্রমিক সঙ্কটসহ সমস্যা সমাধানের কথা জানিয়েছেন। তিনি জানান, সরকার এ জন্য ধান কাটার যন্ত্র দিয়েছে ভতুর্কি দিয়ে।
খোঁজ নিযে জানা যায়, গত ২০১৭-১৮-১৯ সালে জেলায় ধানের বাম্পার ফলন হয়। এতে জেলার খাদ্য চাহিদা পূরণ হয়। চলতি বছরও বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। ২০১৭-১৮ সালে ৬ লাখ ৪০ হাজার ২শ’ ৯৭ মে.টন ধান উৎপাদন হয়। ওই সময় চাহিদা ছিল ৫ লাখ ৪৪ হাজার ২০ মে.টন। উদ্ধৃত্ত থাকে ৯৬ হাজার ২শ’ ৭৭ মে.টন। ২০১৮-১৯ সালে চাহিদা ছিল ৬ লাখ ৮ হাজার ৪শ’ ৩৫ মে.টন ধান উৎপাদন হয়। ওই সময় উৎপাদন হয়েছিল ৬ লাখ ৩৬ হাজার ৯শ’ ৭ মে.টন। উদ্ধৃত্ত ছিল ২৮ হাজার ৪শ’ ৭২ মে.টন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ