Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আগাম বৃষ্টি-বন্যার আশংকায় সুনামগঞ্জ হ্ওারের ধান দ্রুত কাটতে প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০২০, ৫:২২ পিএম

আগাম বৃষ্টি ও বন্যার আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ভারত আবহাওয়া অধিদপ্তর। পূর্বাভাস অনুযায়ী হাওরের বোরো ধান দ্রুত কাটার আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে হ্ওার বাওর সমৃদ্ধ সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন। সোমবার (১৩ এপ্রিল) জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ভারত আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ১৭-২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে মেঘালয় ও বরাক অববাহিকায় ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার এবং ত্রিপুরা অববাহিকায় ১০০ থেকে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রয়েছে সম্ভাবনা। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার হাওর অঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কোন কোন স্থানে নদীর পানি সমতল বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এ অবস্থায় সুনামগঞ্জ জেলার হাওরের বোরো ধান দ্রুত কাটার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ বাস্তবায়নের সাথে মাঠ পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট পিআইসিসহ সকলকে নিজ অধিক্ষেত্রে অবস্থানপূর্বক বাঁধের নিবিড় মনিটরিং জোরদার নিশ্চিত করার জন্য বলা হচ্ছে। বিশেষ করে যেসব ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজার পয়েন্ট রয়েছে সেসব স্থানে সংশ্লিষ্ট পিআইসিদের উপস্থিতি ও সার্বক্ষণিক মনিটরিং নিশ্চিত করতে হবে। বাঁধের কোন ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিলে বা ভেঙে গেলে তাৎক্ষণিক মেরামত করতে হবে। প্রয়োজনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানোর নির্দেশনা দেয়া হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
স্থানীয় কৃষক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, হাওরাঞ্চলে বিরাজমান সীমাবদ্ধতার মধ্যে ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষকরা। করোনাভাইরাসজনিত কারণে সৃষ্ট শ্রমিক সংকট ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা না দিলে এক মাসের মধ্যে হাওরের সব ঘরে তোলা সম্ভব। গত শনিবার জেলার বিভিন্ন হাওরে ধান কাটা হয়েছে প্রায় ৫০ হেক্টর জমির । আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটার ধুম পড়ে যাবে।
কৃষি বিভাগের তথ্যানুয়ায়ী, চলতি মৌসুমে জেলায় ২ লাখ ১৯ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ধানের পরিমাণ । এবার জেলায় ১২ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সদর উপজেলার কাংলার হাওরে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হাওরে নিচু এলাকায় আবাদ করা দেশি ও ব্রি-২৮ জাতের ধান বিক্ষিপ্তভাবে কাটতে শুরু করেছেন কৃষকরা। হাওরজুড়ে আধাপাকা ধানের মেলা। হাওরের পাড়ে ধান মাড়াই ও শুকানোর জন্য কিষান-কিষানিরা ব্যস্ত খলা তৈরির কাজে। তবে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের শ্রমিকরা ধান কাটতে সর্তকতা বজায় রাখছে। এছাড়া বাড়তি মজুরির দাবী উঠছে। এতে বিপাকে পড়ছেন কৃষকরা। যদি তাদের এহেন ঝাপ বুঝে কোপ মারার মানসিক মনোভাব দুর করতে প্রশাসন ও পরিষদের পক্ষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ধান কাটলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকবে বল্ওে অভয় দেয়া হচ্ছে। সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. সফর উদ্দিন জানান, হাওরে বোরা ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। শনিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাটা শুরু হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ