Inqilab Logo

বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

চ্যালেঞ্জে পড়তে পারে ঘরে অবস্থান ও চলাচলের নির্দেশ

প্রজ্ঞাপন সংশোধনের আহ্বান এইচআরপিবি’র

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

নাগরিক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে জনপ্রশাসনের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছেন ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পীস ফর বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। গতকাল রোববার সংস্থার পক্ষে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানান। 

বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত ১০ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিব (বিধি শাখা) একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন। প্রজ্ঞাপনে রুলস অব বিজনেস’র জনপ্রশাসন চ্যাপ্টারের ৩৭ নম্বর ক্রমিক সূত্রে যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে তাতে প্রথমত: ঘরে অবস্থান, সন্ধ্যা ৬টার পর বের না হওয়া, হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যাতায়াত নিষিদ্ধ সংক্রান্ত নির্দেশনা এবং দ্বিতীয়ত: ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা, কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থানের জন্য নির্দেশনা রয়েছে।
জনপ্রশাসন চ্যাপ্টার-৩৭ নম্বর ক্রমিকে অফিস সময় ও সরকারি ছুটি নির্ধারণের ক্ষমতা দেয়া রয়েছে। সে অনুসারে জনপ্রশাসন দ্বিতীয় নির্দেশনা জারি করতে পারে। প্রথমত: নির্দেশনাগুলো জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য প্রয়োগ করতে পারলেও অন্য নাগরিকদের ওপর প্রয়োগ করলে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে।
কারণ সংবিধানের আর্টিকেল ৩১ অনুসারে সকল নির্দেশনাই একমাত্র অনুসারেই হতে হবে। সাধারণ নাগরিকরা জনপ্রশাসনের সার্ভিস রুলসের আওতায় নন। এ কারণে জনপ্রশাসনের জারি করা প্রথম নির্দেশনার যেকোনো একটি কোনো নাগরিক ভঙ্গ করলে কোনো শাস্তির সুযোগ না থাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মানুষের ঘরে থাকা ও চলাচল নিয়ন্ত্রণ অন্যতম উপায় হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু বিভিন্ন আইনি দুর্বলতার কারণে সেটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না।
অন্যদিকে রুলস অব বিসনেজ-১৯৯৬ এর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চ্যাপ্টারে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে ১৪ নম্বর ক্রমিকে সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ করা এমনকি ‘ কোয়ারেন্টিন’ এবং ‘আইসোলেশন’র ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে সংক্রামক রোগ ( প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ) আইন- সংসদে পাস করা হয়। আইনের ৩ ধারায় উক্ত আইনকে সকল আইনের ওপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এমনকি ৫ ধারায় স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালককে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণে কর্মকৌশল প্রণয়ন এবং গণজমায়েত, বাজার, স্টেশন ইত্যাদি বন্ধে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। আইনানুসারে তিনি অন্য অফিসারদেরকে এসব ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারবেন।
এই আইনের ২৪-২৬ ধারায় বিভিন্ন মেয়াদে ২-৬ মাসের শাস্তি এবং ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধানও রয়েছে। আইনের ৬ ধারায় সুনির্দিষ্ট উপায়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন ও তাদের সুপারিশে যেকোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় বলে উল্লেখ আছে। সংক্রামক আইনের ৫(২) ধারায় স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালককে দায়িত্ব পালন ও কার্যসম্পাদনের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাকে মহামারী ঘোষণার পর করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করে নিয়ন্ত্রণ করার অব্যাহত প্রচেষ্টা চলছে। কিন্তু আইনি দুর্বলতার কারণে ঘরে থাকা ও চলাচল নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি সম্ভব হচ্ছে না। সুতরাং সরকারের কাছে অনুরোধ গত ১০ এপ্রিল জনপ্রশাসনের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের আইনি দুর্বলতা সংশোধনীর মাধ্যমে দূর করে করোনা প্রতিরোধে কার্যকর ঘোষণা ‘সংক্রামক আইন’ অনুসারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নির্দেশনা জারির ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
প্রসঙ্গত : সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন-২০১৮’র অকার্যকরিতা নিয়ে গতকাল রোববার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বিধি প্রণয়ন না করা, ঘরে অবস্থান এবং জন চলাচলের ওপর কার্যকর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে না পারাসহ করোনা সংক্রামণ রোধে গৃহিত পদক্ষেপের নানা আইনি দুর্বলতা উল্লেখ করা হয়।



 

Show all comments
  • Mohammad Abul Mamun ১৩ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৬ এএম says : 0
    অর্থের অভাবে ত্রানের আশায় পথের ধারে বসে আছে কিতাব আলী ও তার পরিবার। দেশব্যাপী লক ডাউনের ফলে কিতাব আলীর মত অনেক কর্মহীন অসহায় মানুষ আজ তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে দিশেহারা। আল্লাহ তুমি সহায় হও।
    Total Reply(0) Reply
  • Jalilur Rahman ১৩ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৭ এএম says : 0
    এই করোনা কারো জন্য এসেছে সর্বনাশা হয়ে আর চুর ডাকাতদের জন্য এসেছে মহোৎসব হয়ে
    Total Reply(0) Reply
  • মুঃ আজম ১৩ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৮ এএম says : 0
    এই মহামারী করোনা ভাইরাসে ও কোন কোন মানুষ রুপি জানোয়ারদের মন নরম হয়নি গত ৬এপ্রিল২০২০। আমাদের এলাকায় এক জগন্যতম ঘটনার জন্ম দেয়। ৭০বছরের এক জানোয়ার ৭বছরের একমেয়ে কে একা পেয়ে বিলের মাঝে দর্শন করে মেয়েটির শরিলের বিভিন্ন অংশে কামড়ের দাগ আছে মেয়েটি কোন রখম পালিয়ে এসে মাকে ঘঠনার বর্ননা দেন। শিশু মেয়েটির মায়ের কান্নায় এলাকার মানুষ ঐ নরপশুর বিচার চাই। তারপরদিন ৭/৭/২০। থানায় না জানিয়ে এলাকায় মেম্বারের উপস্থিতিতে সালিশ হয় যে ঐ নরপশু আর এলাকায় আসতে পারবে না এমন কি ওনি মারাগেলে ও তাহার দাফন এই এলাকায় হবে না। এক পর্যায়ে উক্ত বিচারে এলাকার বেশিভাগ মানুষ অসন্তুষ্ট । সবার বক্তব্য ঐ লোক যেখানে ঘঠনা হয়ছে এখানের লোক নই । সেই ঘরজামায় ঐলোক না আসলেও কি আসলেও কি ঐ ব্যক্তি একিই ঘঠনা বার বার গটাচ্ছে পরিস্থিতি খুব ভয়াবহ রুপ নিচ্ছে। এমত অবস্থায় আমি থানায় ফোন দিলে ঘন্টাকানেক পরে পুলিশ আসে পুলিশ এসে। ঘঠনা স্থল না গিয়ে একটা বাজারে এসে আমাকে ফোন দেন। আমি গিয়ে দেখি ওখানে মেম্বার আর ভিক ঠিমের উপস্থিতি আমি ঘঠনা খুলে বলব সেই সুযোগ আমাকে দেই না আমাকে লাঠিপেটা করে আরো বলে আমি নাকি ভুল তর্থ দিছি এখানে এধরনের কোন ঘঠনায় ঘঠেনি পরে জানতে পারছি পুলিশ টাকা খেয়ে চলেগেছে এলাকার যুবক মুরব্বি সবাই বলতেছে পুলিশ আসলে আমরা সবাই সাক্ষ দিব যে এখানে ৭০বছরের বৃদ্ধা লম্পট কতৃক ৭বছরের মেয়ে দর্শিত হয়েছে। ঘঠনার স্থান সাতকানিয়া থানা খাগরিয়া ইউনিয়ন আমিরখীল গ্রাম। চট্রগ্রাম
    Total Reply(0) Reply
  • কুদ্দুস তালুকদার ১৩ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৯ এএম says : 0
    লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক ইত্যাদি করনা ভাইরাস ঠেকালে, বিভিন্ন দেশের রাজা, বাদশা, রাজপরিবার, প্রধানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট, সামরিক বাহিনী, নৌবাহিনী, স্বাস্থ্য মন্ত্রী ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি তারা কিভাবে করোনায় আক্রান্ত হলো? তারা কি কম সতর্ক ছিল?
    Total Reply(0) Reply
  • Mushfiqur Rahman ১৩ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৯ এএম says : 0
    আজকের এই খারাপ পরিস্থিতিতে চুরি, ছিনতাই আরো অন্য খারাপ কিছু থেকে বাঁচার জন্য প্রথমত নিজদেরকে খুব সাবধান হতে হবে। আর পাশাপাশি আইনশৃংখলা বাহিনীর যথেষ্ট সাপোর্ট থাকতে হবে। আর এখন চুরি, ছিনতাই বেশি হবে কারণ মানুষের আর্নিং সোর্সগুলো অফ হয়ে আছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Kamal Pasha Jafree ১৩ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৯ এএম says : 0
    করোনায় আক্রান্ত দিন দিন বাড়ছে,গত কয়েক দিনের পরিসংখ্যা যেমন বলে, এই ভাবে চলতে থাকলে শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে,তা একমাত্র আল্লাহ পাক ভালো, জানে,সবাই ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন,নিরাপদে থাকুন, আল্লাহর কাছে বেশি বেশি প্রার্থনা করুন, আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন,,, আমিন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ