Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

করোনার উপসর্গ ১২ জনের মৃত্যু

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

করোনার উপসর্গ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে শিশু ও বৃদ্ধসহ ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন-
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি থাকা ৬ মাসের একটি শিশু মারা গেছে। গত শুক্রবার দিনগত রাত ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন ডা. শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, শিশুটি জ্বর, সর্দি-কাশি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিল। আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি থাকা শিশুটির রাতে মৃত্যু হয়। তার করোনা ভাইরাস ছিল কিনা তা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শিশুটিকে বিকেল ৩টায় শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পরে বিকেল ৫টায় তাকে আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তার বাড়ি মহানগরীর খালিশপুর ক্রিসেন্ট গেট এলাকায়। স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, শহরের মাসদাইর এলাকায় জ্বর-সর্দি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে রুম্মন বাবু (৩২) নামে এক শারীরিক প্রতিবন্ধি যুবক মারা গেছে। গতকাল শুক্রবার রাত ৭ টার দিকে সে মারা যায়। রুম্মন বাবু মাসদাইর এলাকার এনএস টাওয়ারের আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে। গত তিন চার দিন ধরে সে জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। এদিকে রাত ৭ টার দিকে ওই যুবক মারা গেলেও তার মরদেহ দাফনের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে খবর পেয়ে কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ওই যুবকের লাশ ভবন থেকে নামিয়ে আনেন এবং দাফনের উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জ্বর, ঠান্ডা, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে জলিল প্রধান (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার ভোর ৫টার দিকে রূপসী প্রধান বাড়ি এলাকায় ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। জলিল প্রধান ওই এলাকার মৃত কুদরত আলীর ছেলে।

ল²ীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, রামগঞ্জ ও কমলনগরে করোনা উপসর্গ নিয়ে দুই জনের মৃত্যুর ঘটনায় ৯বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। রামগঞ্জ উপজেলার শেফালীপাড়া যুগি বাড়ির জামাল হোসেন (৪০) শনিবার ভোর ৩ টায় মারা যায় হয়েছে। তিনি ৪/৫ দিন যাবত সর্দি, জ্বর, কাশি, ডায়েরিয়া, গলা ব্যথা ভোগে ভুগছে বলে জানিয়েছেন রামগঞ্জ সরকারি হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদ গিয়াস উদ্দন মানিক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান বলেন, নিহতের বাড়ি সহ ৬ বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। ইসলামী ফাউন্ডশন রামগঞ্জ শাখার প্রশিক্ষন প্রাপ্ত ইমামরা লাশ দাফন করেছে। অপর ঘটনায় কমলনগর উপজেলায় চরফলকন গ্রামে শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ৫৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ওই গ্রামের নিহতের বাড়িরসহ ৩টি বাড়ি লকডাউনে রাখা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনা উপসর্গ নিয়ে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। টানা ১০ দিন জ্বর, কফ ও শ্বাস কষ্টের সাথে লড়াই করে শহরের কাউতলীর মুনা বেগম (৩৫) মারা গেছে। গতকাল শনিবার সকাল ৭টায় নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার স্বামী বশির আহমেদ জানান, গত ৩১ মার্চ প্রচন্ড জ্বর নিয়ে সে ব্রাক্ষনবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। সে সময় তাকে ঢাকায় প্রেরন করে কর্তব্যরত চিকিৎসক। সে ঢাকা যেতে না চাওয়ায় বাড়িতেই চিকিৎসা চলতে থাকে। তার জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট ছিল। অন্যদিকে, জেলার নবীনগর উপজেলায় জ্বর ও সর্দি কাশি নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ইব্রাহিমপুর গ্রামের জাহানারা (৮০) মারা গেছে। সে ঐ গ্রামের ফুল মিয়ার স্ত্রী। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
ভোলা জেলা সংবাদদাতা জানান, ভোলার লালমোহনে করোনা উপসর্গ নিয়ে আবুসর্দার নামে এক ব্যক্তি মারা গেছে। গত শুক্রবার দুপুরে উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের কাশ্মির এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

কালকিনি (মাদারীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কালকিনির রমজানপুর এলাকার চর আইড়কান্দি গ্রামে এক দুবাই প্রবাসীর স্ত্রী (৫০)র গত শুক্রবার রাত ১১টায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলবিধান মোহাম্মদ ছানাউল্লাহ। তবে তার কিছুদিন আগে টিউমারের অপারেশন হওয়া সহ সে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিল।
কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মৃত্তিকাপাড়ায় জ্বর-সর্দি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে আশরাফুল ইসলাম (৪৫) নামে এক আনসার সদস্য এবং দৌলতপুর উপজেলায় এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। তবে এ দুজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষার পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানা গেছে। শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার মৃত্তিকাপাড়াস্থ জ্বর-সর্দি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে আশরাফুল ইসলাম (৪৫) তার নিজ বাড়িতে মারা যান। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি তার কর্মস্থল যশোর থেকে নিজ গ্রামে আসেন। তিনি একই এলাকার মৃত কিতাব উদ্দিনের ছেলে।

এদিকে, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউপির পল্লীতে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক দিনমজুরের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বোয়ালিয়া ইউনিয়নের গোয়ালগ্রাম কারিগর পাড়া গ্রামের দবির উদ্দিনের ছেলে জিয়ার উদ্দিন (৩০) দিনমজুরের কাজ করতো। কয়েকদিন ধরে তিনি জ্বর, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

মধুখালী (ফরিদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ফরিদপুরের মধুখালীতে পেট ব্যাথা ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাস্তার পাশে গোটা দিন কাতরানোর পরেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে তার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি কেউ। খবর পেয়ে প্রশাসনের লোকজন হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়। ঘটরাটি ঘটেছে উপজেলার মাঝিবাড়ী নামক স্থানে মৃত ব্যক্তির নাম আবদুস সামাদ মন্ডল (৪৮)। সে ঝিনাইদাহ জেলা সদরের খাজুরা গ্রামের সিটি কলেজ এলাকার মৃত আফজাল মন্ডলের ছেলে। তিনি পেশায় কৃষি শ্রমিক ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ