পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ সারাদেশে বাড়তে থাকায় জনগণকে ঘরে থাকার জন্য ছুটির মেয়াদ ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়ে সন্ধ্যা ৬টার পর বাইরে বের হতে নিষেধ করেছে সরকার। নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
গতকাল শুক্রবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আগের ছুটির ধারাবাহিকতায় ১৫ ও ১৬ এপ্রিল এবং ১৯ থেকে ২৩ এপ্রিল সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো। সাধারণ ছুটির সময় আগামী ১৭-১৮ এপ্রিল এবং ২৪-২৫ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি সংযুক্ত থাকবে। বর্ণিত ছুটি অন্যান্য সাধারণ ছুটির মতো বিবেচিত হবে না জানিয়ে প্রজ্ঞাপনে এই ছুটির সময় যেসব নির্দেশাবলী কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে তাও উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রশমনে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। অতীব জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত ঘরের বাইরে বের না হলে সবাইকে অনুরোধ করা হলো। সন্ধ্যা ৬টার পর কেউ ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন না। এ নির্দেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে সীমিত করা হলো। বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত সকল কর্মকর্তাকে দায়িত্ব পালনের লক্ষে নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়েছে, জরুরি পরিষেবার (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট ইত্যাদি) ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে না। কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, জ্বালানি, সংবাদপত্র, খাদ্য, শিল্প পণ্য, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি, জরুরি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন এবং কাঁচা বাজার, খাবার, ওষুধের দোকান ও হাসপাতাল এ ছুটির আওতার বাইরে থাকবে।
জরুরি প্রয়োজনে অফিস খোলা রাখা যাবে জানিয়ে ছুটির বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে ওষুধশিল্প, উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা চালু রাখতে পারবে। মানুষের জীবন জীবিকার স্বার্থে রিকশা-ভ্যানসহ যানবাহন, রেল, বাস সার্ভিস পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে। জনগণের প্রয়োজন বিবেচনায় ছুটিকালীন বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
করোনাভাইরাসের কারণে প্রথম দফায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল সরকার। এরপর ছুটি বাড়িয়ে তা ১১ এপ্রিল করা হয়। তৃতীয় দফায় বাড়ানো হয় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। পরিস্থিতি বিবেচনায় আরও এক দফা ছুটি বাড়ানো হলো। সময়ের সঙ্গে দেশে বেড়ে চলছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২৪ জন, আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের।
২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে সরকারি ছুটির পাশাপাশি দফায় দফায় বাড়ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরও ছুটি। নতুন করে আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গতকাল শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সরকার ঘোষিত ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি অনুযায়ী সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
এর আগে গত ১৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত প্রথম দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে সেই ছুটি আরও দুই দফা- ৯ এপ্রিল এবং ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সরকারের সাধারণ ছুটির সাথে সামঞ্জস্য রেখেই এই ছুটিগুলো বাড়ানো হচ্ছে। তবে ছুটির কারণে শিক্ষার্থীদেও শিক্ষা কার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য গত ২৯ মার্চ ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির এবং ৭ এপ্রিল তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস সংসদ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হচ্ছে। এসব ক্লাসে শিক্ষার্থীদের দেয়া হচ্ছে বাড়ির কাজ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে এই পাঠদানের ভিত্তিতে পরীক্ষা ও মূল্যায়ন করা হবে বলে জানানো হয়।
২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ শপিং মল
মহামারী করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চার দফায় ২৬ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এ সময় সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের সব শপিং মল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতি।
গতকাল ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান টিপু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
সমিতির সভাপতি তৌফিক এহসান বলেন, ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতির পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের সকল বাণিজ্য বিতান ও শপিং মল বন্ধ রাখার যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তার সময়সীমা ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
সরকার সাধারণ ছুটি ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়ায় নির্দেশনা অনুযায়ী মালিকদের দোকান বন্ধ রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
করোনা মহামারীর এ সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে সবাইকে ধৈর্য্য ধারণে আহ্বান জানিয়ে তৌফিক এহসান সকল দোকান মালিক, ব্যবসায়ী ও মার্কেট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বন্ধকালীন সময়ে দুর্ঘটনা এড়াতে প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ লাইন, ওয়াসা ও ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রাংশ বন্ধ রাখা এবং ময়লা-আবর্জনা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি।
ছুটির সঙ্গে বাড়বে শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধের সময়
করোনাভাইরাসের কারণে সরকার যতদিন সাধারণ ছুটি দেবে, ততোদিন শেয়ারবাজারেও লেনদেন হবে না। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) পরিচালনা পরিষদের একাধিক সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল চতুর্থ দফায় আবারও সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি থাকবে।
করোনার সংক্রমণ যেন ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সরকার প্রথমে ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত শেয়ারবাজারে প্রথম দফায় লেনদেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এরপর সরকার দ্বিতীয় দফায় সাধারণ ছুটি বাড়ালে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে তৃতীয় দফায় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বাড়ায় সরকার। একই সঙ্গে শেয়ারবাজারের লেনদেনও ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।