পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
খাদ্য অধিদফতরের সিলযুক্ত ৩০ কেজি চালভর্তি বস্তায় লেখা ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’। সরকারি সেই চাল শুধু বস্তা পাল্টিয়ে ‘নুরজাহান’ নামের ৫০ কেজির বস্তায় ভরে খোলা বাজারে বিক্রয় হচ্ছিল। সরকারি গুদামে মজুত চাল লোপাট করে সরিয়ে আনা হয় খাদ্যশস্য ঠিকাদার ও ব্যবসায়ীর গুদামে। এমনকি কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করেই চলছে বস্তা পাল্টানো আর বিক্রির অপকান্ড। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে হাতেনাতে ধরা পড়লো এভাবে করোনায় সরকারি ত্রাণের চাল চুরি-দুর্নীতি ও লোপাটের ঘটনা। ঘটনাস্থল চট্টগ্রাম মহানগরীর ব্যস্ত এলাকা ডিটি রোডের লাগোয়া ঈদগাঁ।
এ ব্যাপারে মামলাও হয়েছে ডবলমুরিং থানায়। অবৈধ একটি গুদাম সিল করে দেয়া হয়েছে। দু’জন কর্মচারী গ্রেফতার হলেও গতকাল এই প্রতিবেদন লেখা অবধি রাঘব-বোয়ালরা এখনো ধরা পড়েনি কেউ।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন এ বিষয়ে সরকারের শক্ত অবস্থানের কথা জানিয়ে ইনকিলাবকে বলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। জড়িত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।
স্থানীয় অনুসন্ধান ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গোপন সংবাদ পেয়ে ডিটি রোডে প্রথম অভিযানটি চালায়। অভিযানের নেতৃত্বে থাকা সিএমপির উপ-কমিশনার (পশ্চিম ) মোহাম্মদ ফারুকুল হক বলেন, সরকারি খাদ্য অধিদফতরের এসব চাল গুদাম থেকে কীভাবে ঈদগাঁ এলাকায় প্রাইভেট গোডাউনে গেলো তাতে অবাক হয়েছি। এ নিয়ে তদন্ত চলছে। এতে হিসাব করে দেখা গেছে, মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই অন্তত ৩ কোটি টাকার ত্রাণের চাল বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। শুধু একটি গুদামে তল্লাশি চালিয়ে বিক্রয় নিষিদ্ধ ১৬ মণ চাল উদ্ধার করা হয়। ২১ বস্তায় ভর্তি এসব চাল বিক্রির জন্য ছিল প্রস্তুত। তাছাড়া গুদাম থেকে খাদ্য বিভাগের সিলযুক্ত ১৫শ’ খালি বস্তা উদ্ধার করে। যেগুলো থেকে সরকারি চাল সরিয়ে নেয়া হয় অসৎ ব্যবসায়ীর ‘নুরজাহান’ নামের বস্তাগুলোতে।
হাতেনাতে পুলিশ আরাফাত হোসেন ও আবদুল আজিজ নামে দু’জন কর্মচারীকে গ্রেফতার করে। তারা পুলিশের কাছে স্বীকার করে, গত এক সপ্তাহে এ ধরনের বিশ হাজার সরকারি বস্তার চাল খালি করে ‘নুরজাহান’ বস্তায় ভর্তি করেই বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। ডবলমুরিং থানার ঝর্ণাপাড়া এলাকায় মুনমুন কমিউনিটি সেন্টারের গলিতে বিসিকের ভাড়া দেয়া এক গুদামে চলছিল এভাবে বস্তা পাল্টানোর কান্ড। বিসিক থেকে ভাড়া নিয়ে পাহাড়তলীর চাল ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ফারুক গুদামটি ব্যবহার করেন। খাদ্য অধিদফতরের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার ফারুকের প্রতিষ্ঠানের নাম ফারুক ট্রেডার্স। এ গুদাম থেকেই উদ্ধার হয় উক্ত চাল। খাদ্য বিভাগের প্রতিবস্তা চালে থাকে ৩০ কেজি। আর পাল্টানো ‘নুরজাহান’র বস্তায় ভর্তি হচ্ছিল ৫০ কেজি করে। ওখান থেকে সরাসরি জোগান যাচ্ছিল চালের বাজারে।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, ডিও ব্যবসার নামে সরকারি খাদ্য গুদামের চাল এভাবে লোপাট হচ্ছে দীর্ঘদিন। খাদ্য বিভাগ ও খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসূত্রেই তা হচ্ছে। অনেকেই সরকারি খাদ্য গুদামকে নিজেদের মতো করে ব্যবহার করছে। পুরো চট্টগ্রাম বিভাগের ডিও কন্ট্রোল করছে সিন্ডিকেট। নেপথ্যে যুবলীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় জনাকয়েক নেতা। তারা নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল অঙ্কের টাকার ভাগ পকেটে তুলছেন খাদ্যশস্য ব্যবসায়ী, গুদাম মালিক, পরিবহন ও হ্যান্ডলিং ঠিকাদারদের কাছ থেকে। অভিযানে ওরা এখন সটকে পড়েছে। করোনা আতঙ্কে চালের দাম বৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে সরকারি চাল বস্তা পাল্টানো ও বিভিন্ন অপকৌশলে বাজারে লোপাট করে ডজন সংখ্যক অসৎ ব্যবসায়ী এবং চক্রটি মিলে গত মাত্র এক সপ্তাহে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা হরিলুট করেছে।
ঈদগাঁর অবৈধ গুদামে সরকারি চালের বস্তা পাল্টানো ও বাজারে বিক্রির ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার ডবলমুরিং থানায় মামলা দায়ের করে পুলিশ। বাদী ডবলমুরিং থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) সুজিত বড়–য়া। দু’জন গ্রেফতারকৃত আসামি আরাফাত হোসেন ও আবদুল আজিজকে গতকাল কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার আসামি গুদাম মালিক ফারুক পলাতক। অজ্ঞাত অনেকেই আসামি। মামলায় ২১ বস্তা সরকারি ত্রাণের চাল এবং ২ হাজার খালি বস্তা জব্দ দেখানো হয়েছে। ডবলমুরিং থানা পুলিশ জানায় এ ব্যাপারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।