Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বদলেছে কেনাকাটার ধরণ

ফোন করলেই বাসায় পৌঁছে যাচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে গত ১৬ দিন ধরে বাসাবোতে নিজের বাসায় কোয়ারেন্টিনে আছেন ব্যবসায়ী মাঈনুল ইসলাম। এই সময়ে একবারের জন্য বের হননি বাইরে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের প্রয়োজন হলে ফোন দিচ্ছেন দোকানে। নির্দিষ্ট সময় নিয়ে বাসার গেইটে পৌঁছে দিচ্ছেন দোকানদাররা। 

লকডাউনের কারণে সবকিছুই বন্ধ নারায়ণগঞ্জে। নগরীর পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম ও বাড়ৈপাড়ার সঞ্জিব চৌধুরী বের হতে পারছেন না বাসা থেকে। পুলিশের পক্ষ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য দোকানদারের মোবাইল ফোন নম্বর টানিয়ে দেয়া হয়েছে। যাদের প্রয়োজন একদিন আগে ফোনে অর্ডার করলেই পরদিন পৌঁছে যাচ্ছে যার যার ঘরে। বাসা থেকে বের না হয়ে হোমসার্ভিসের মাধ্যমে কেনাকাটা করছেন নাটোর পৌরসভার বাসিন্দারাও। একইভাবে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, খুলনা, কক্সবাজার এলাকাতেও চলছে কেনাকাটা। অনলাইনের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে শুরু হয়েছে কেনাকাটার নতুন এই মাধ্যম।
করোনাভাইরাসের কারণে রাজধানীসহ সারাদেশই স্থবির। দেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে লকডাউন। সচেতন মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। কিন্তু প্রয়োজন তো আর থেমে থাকে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা পণ্যের চাহিদা লেগেই থাকে। আর এই চাহিদা মেটাতে গিয়ে অভিনব কেনাবেচা শুরু হয়েছে রাজধানীসহ সারাদেশে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধু রাজধানী নয়, দেশের লকডাউন হওয়া এলাকা এবং জেলা থেকে উপজেলা শহর পর্যন্তও চলছে অভিনব পদ্ধতিতে কেনাবেচার পদ্ধতি। লকডাউন এলাকাগুলোর কোথাও কোথাও পুলিশের পক্ষ থেকে টানিয়ে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন দোকানের ফোন নম্বর। যাদের প্রয়োজন হচ্ছে তারা ফোন করে এসব দোকানে পণ্যের অর্ডার করছেন। দোকানদাররাও সর্বনিম্ন পরিমাণ পণ্যের অর্ডার নিয়ে জানিয়ে দিচ্ছেন কতক্ষণ পর তা পৌঁছে দিতে পারবেন।
বাসাবোর মুদি দোকানদার শফিকুল ইসলাম বলেন, এলাকার অনেকেই পরিচিত আগে থেকেই, তাদের কাছে আমার নম্বর আছে। আবার অনেকেই এর মধ্যে সংগ্রহ করেছেন। তারা ফোন করে অর্ডার করছেন। তবে বলে দিয়েছি কমপক্ষে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মূল্যের পণ্য কিনতে হবে। না হলে বাসায় পৌঁছে দেয়া পোষাবে না। ক্রেতারাও সেভাবেই অর্ডার করছেন।
নারায়ণগঞ্জের ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ জানান, তার এলাকা শহীদনগরে পুলিশ দোকানীদের নম্বর টানিয়ে দিয়েছে। যাদের প্রয়োজন হবে ফোন করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারবেন। ফোন দিলে তারা পণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তা সবুজ বলেন, করোনভাইরাসের ভয়ে ঘর থেকে কেউ বের হচ্ছি না। যেটা প্রয়োজন বাবা দোকানদারকে ফোন করে দিচ্ছে, ফোন পেয়ে বাসার সামনে পণ্য দিয়ে যাচ্ছে।
করোনাভাইরাসের কারণে হাটবাজার বন্ধ থাকায় মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা পূরণে নাটোরের সিংড়া পৌরসভা কচালু করেছে ‘হোম সার্ভিস’। এ সার্ভিসের আওতায় লোকজন তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসের কথা ফোনে জানালে পৌরসভার স্বেচ্ছাসেবকেরা ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন। সিংড়া পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, সংক্রমণ ঠেকাতে পৌরসভাবাসীকে ঘরে থাকার জন্য বলা হয়েছে, কিন্তু লোকজন জরুরি পণ্য সংগ্রহের কথা বলে ঘর থেকে বের হচ্ছেন। এতে অনেক সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় এমপি ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদের পরামর্শ চেয়েছিল। তার পরামর্শে গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে শহরবাসীর জন্য ‘হোম সার্ভিস’ চালু করা হয়েছে।
শুধু ব্যক্তি উদ্যোগেই নয়, বিভিন্ন অনলাইন শপও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছে। স¤প্রতি ই-কমার্সভিত্তিক মার্কেটপ্লেস ইভ্যালি জানিয়েছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য গ্রাহকরা যেন ঘরে বসেই পেতে পারেন সেজন্য ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপ নামে নতুন একটি ক্যাম্পেইন শুরু করছে। তবে এই শপে পাওয়া যাবে না মাছ ও গোশতের মতো পণ্য। প্রতিষ্ঠানটি রাজধানীতে ৮টি এবং সারাদেশে ৫০টি এক্সপ্রেস শপ চালু করেছে।
ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল বলেন, আমাদের প্ল্যাটফর্মে ১৮ লাখের ওপরে গ্রাহক ও প্রায় ২০ হাজার বিক্রেতা আছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিক্রেতা মুদি আইটেম বা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করেন। আবার এ ধরনের পণ্য উৎপাদন ও খুচরা বাজারে সরবরাহ করে এমন করপোরেট প্রতিষ্ঠানও আছে।



 

Show all comments
  • Hridoy Tuhin Kasto ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩২ এএম says : 0
    Alhamdulillah valo decision
    Total Reply(0) Reply
  • Nasir Uddin Haider ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩৩ এএম says : 0
    খুব ভালো রিপোর্ট। তবে ঠিকমতো কাজ চলছে না কি না সেটাও একটু নজরে রাখতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mofijul Islam ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩৩ এএম says : 0
    ভালো উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • SD Singha ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩৪ এএম says : 0
    স্যার আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ আমরা কারও কাছে কিছু চাইতেও পারিনা সংসার কি ভাবে পরিচালনা করবো ভাবতেও পারছিনা একমাত্র আয়ের উৎস সেটিও বন্ধ ঘরে বসে আছি কোন ত্রানও পায়নি স্যার আমাদেরকে সাহায্য করেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Minar Mahir ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩৪ এএম says : 0
    আমাদের উত্তর সিটি, খন্দকার বাড়ির মোড়,খাবার পৌঁছে দেওয়া যাবে,প্রায় ২৫-৪০পরিবার উপকৃত হবে, ভাটারা থানা,যদি আমাদের প্রতি আপনাদের দয়া হয়,
    Total Reply(0) Reply
  • Mahmudul Bashar ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩৪ এএম says : 0
    আমারা কি খাবার পাবো মনে হয় না কারন আমরাতো আর দল করিনা
    Total Reply(0) Reply
  • Md Oliur Rahman ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩৫ এএম says : 0
    ভাই, আমি ছোট্ট একটা বেসরকারি চাকরি করি বেতন কম,কোন রকমে সংসারটা চলে,গ্রামে বাবা ও মার সংসার ও ঢাকায় আমার পরিবারের সংসার,আমার ঠিকানা হলো খিলগাও প্রভাতি বাগ সিটি কপো'রেশনের গলি,আপনারা আমাকে কিছু এান দিলে খুবই ভাল হয়,সেই সাথে আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব।
    Total Reply(0) Reply
  • Melody Talukder ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩৫ এএম says : 0
    এটাই হল অরিজিনাল উদ্যোগ। সব জায়গায় এই ব্যবস্থা করা হক।লিষ্ঠ করে করে খাবার পিছিয়ে দেওয়া হক।
    Total Reply(0) Reply
  • এসো ইসলামের পথে ফিরুজ হোছাইন ১১ এপ্রিল, ২০২০, ৩:১৮ এএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ ভাল খবর
    Total Reply(0) Reply
  • si sharif ১১ এপ্রিল, ২০২০, ৭:৪১ এএম says : 0
    আমরা নিম্ন মধ্যবিত্তরা কি করবো? আমাদের কেউ তো একটু হেল্প করেনা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ