Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘এলাকায় এসে কি তোমার বোন বিয়ে করব?’

সুলতান মনসুর এমপির ফোনলাপে তোলপাড়

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০০ এএম

সারাবিশ্ব করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এর মধ্যেই বাংলাদেশে ২১৮ জন আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত ৩৩ জন ভাল হয়ে ঘরে ফিরলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ২০ জন। দেশের অনেক এলাকা লকডাউন চলছে। সব কাজকর্ম বন্ধ। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫টি সেক্টরে প্রণোদনাসহ নিম্ন আয়ের মানুষকে সহায়তার জন্য ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তিনি প্রশাসনের লোকজন ছাড়াও মন্ত্রী-এমপি-উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে সব ধরণের জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ত্রাণ বিতরণের কার্যক্রম ঘোষণা করেছেন।

সারা দেশের মতো করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে মৌলভীবাজারেও বন্ধ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। এই মানুষদের বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করতে সরকার, সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দে এগিয়ে এলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নেই জনগণের পাশে। দরিদ্রদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের মতো কার্যক্রমে দেখা নেই মৌলভীবজার-২ আসনের এমপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদের। তাকে এলাকায় (কুলাউড়া ও কমলগঞ্জের একাংশ) গিয়ে বিপন্ন মানুষের খোঁজখবর নেয়ার জন্য ফোন করে বিপাকে পড়েন এক কর্মী। উল্টো ওই কর্মীকে একসময়ের ডাকসাইটে ছাত্রনেতা সুলতান মনসুর ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘এসে কি করবো? তোমার বোন বিয়ে করবো, নাকি আমার বোন বিয়ে দিবো?’

এমপি সুলতান মনসুর ও কুলাউড়া এলাকার জনৈক ভোটার কাম রাজনৈতিক কর্মীর টেলিফোনে কথোপকথন ভাইরাল হয়েছে। ফোনালাপটি গত মঙ্গলবার ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। একজন জনপ্রতিনিধির মুখের ভাষা নিয়ে মৌলভীবাজার এবং সিলেটে চলছে তোলপাড়। দুর্যোগময় মুহুর্তে একজন কর্মীর সঙ্গে একজন জনপ্রতিনিধির আলাপচারিতা শুনে অনেক রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধির আক্কেলগুরুম।

ইনকিলাবের পাঠকদের জন্য সেই কতোপকথন তুলে ধরা হলো। এই কথোপকথা একজন জনপ্রতিনিধির কল রেকর্ড থেকে ভাইরাল হয়। (তিনি কে জানতে চাইয়া লজ্জা দেবেন না, তবে একটু মাথা খাটালেই বুঝে যাবেন আশা করি)

নির্বাচনী কর্মী : ভাই এলাকায় আসবেন কি না?
সুলতান মনসুর : এসে কি করবো? তোমার বোন বিয়ে করবো, নাকি আমার বোন বিয়ে দিবো?
নির্বাচনী কর্মী : না, সেরকম কিছু না। আমাদের কিছু অনুদান দিতেন, আমরা বড় বিপদে পড়ছি। কাজ নাই, ঘরে খাবার নাই।

সুলতান মনসুর : আমি কি মক্কা থেকে খাবার এনে দিবো? আমার পকেট থেকে দিবো? মেম্বার, চেয়ারম্যানরে বলো।
নির্বাচনী কর্মী : না মানে, উনারা তো যতটুকু পারছেন সহযোগীতা করছেন, আপনি আসলে আমাদের জন্য আরও উপকার হতো।

সুলতান মনসুর : মেম্বার, চেয়ারম্যান কি তাদের বাপের অনুদান দিচ্ছে? কি আবুল তাবুল বকছো? এই সময় ঘরে থাকাই কাজ, ঘরে থাকো।

নির্বাচনী কর্মী : ঘরে তো থাকছি। কিন্তু খাবার জুটছে না। এভাবে চললে, না খেয়ে মরতে হবে। আপনি এলাকায় এসে আমাদের জন্য কিছু করেন।
সুলতান মনসুর : ঘরে থেকে না খেয়ে মরবে কেন? গলায় দড়ি দিয়া হাওরের পানিতে গিয়া মরো। যত্তসব, শেখ হাসিনা, এমপি কি ঘরে খাবার নিয়ে যাবে নাকি? ফোন রাখো, ফোন রাখো।

নির্বাচনী কর্মী : হ্যা, হ্যা, হ্যা শেখ হাসিনা আমরা বানাইছি, এমপি আমরা বানাইছি, চেয়ারম্যান, মেম্বার আমরা বানাইছি। আমাদের খেয়াল করার জন্য। আমাদের জনগনের মুখে খাবার তুলে দেয়ার জন্য।
এমন সময় ফোন কলটি কেটে যায়। এ ব্যাপারে সুলতান মনসুরের বক্তব্য জানতে চাইলে একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমি এ সবের কিছুই জানিনা’। ##



 

Show all comments
  • Nuruddin Jahangir ৯ এপ্রিল, ২০২০, ১১:২৭ পিএম says : 0
    MP এবং সরকার কোনটাই জনগন নির্বাচিত করেন নাই তাই তারাও জনগনের ধার ধারেনা
    Total Reply(0) Reply
  • Nuruddin Jahangir ৯ এপ্রিল, ২০২০, ১১:২৭ পিএম says : 0
    MP এবং সরকার কোনটাই জনগন নির্বাচিত করেন নাই তাই তারাও জনগনের ধার ধারেনা
    Total Reply(0) Reply
  • Jamil ১৮ এপ্রিল, ২০২০, ১:১২ এএম says : 0
    It is not good at all . He is a mp and a leader . He should reply in nice way .
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ