Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শুরু মাজেদের দন্ডাদেশ কার্যকরের প্রক্রিয়া

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০০ এএম

কয়েকটি আইনি ধাপ সম্পন্ন হলেই কার্যকর করা যাবে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদের দন্ডাদেশ। তবে এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে চান না অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। গতকাল মঙ্গলবার তিনি বলেন, আমি রাষ্ট্র্রপক্ষের প্রসিকিউটর। তাই এ মুহূর্তে আমার কোনোরূপ মন্তব্য করা যথার্থ হবে না। তবে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আসামিপক্ষে আইনি লড়াইকারী সুপ্রিম কোর্ট বারের একজন আইনজীবী জানান, আবদুল মাজেদের দন্ডাদেশ কার্যকর করতে হলে বেশ কয়েকটি ধাপ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জেল আপিল, রিভিউ এবং মার্সি পিটিশন। এ তিনটি ধাপ সম্পন্ন করে কার্যকর করতে হবে মাজেদের বিরুদ্ধে দেয়া মৃত্যু দন্ডাদেশ।
এদিকে গ্রেফতার হওয়া ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদের দন্ডাদেশ কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুলশানস্থ কার্যালয় থেকে এক ভিডিও বার্তায় জানান, বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্র এবং হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন কাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদ। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বিচারিক আদালত এবং আপিল আদালত তাকে মৃত্যুদন্ডের দন্ডিত করেছেন। মাজেদ দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আজ (মঙ্গলবার) ৭ এপ্রিল ভোর সাড়ে ৩টায় মিরপুর সাড়ে ১১ এলাকা থেকে তাকে আটক করে। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাকে কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছেন। আমার কাছে প্রশ্ন এসেছে-বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী কারাগারে কেন? তিনি তো করোনা ঝুঁকিতে আছেন। অন্য কয়েদীদের মাঝে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দিতে পারেন। আমার কাছে তথ্য হলো, তাকে কারাগারে আলাদা ভাবে রাখা হয়েছে যাতে করোনা ছড়াতে না পারে।
এর আগে গতকাল দুপুরে ঢাকা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেট আদালতের আদেশে গ্রেফতার হওয়া ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদকে কারাগারে পাঠানো হয়। দীর্ঘদিন ভারতে আত্মগোপন করে থাকার পর সম্প্রতি তিনি দেশে ফেরেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন সরকার পক্ষের কৌঁসুলি হেমায়েত উদ্দিন খান (হিরণ)। তার বিরুদ্ধে দেয়া দন্ডাদেশ কার্যকর করতে হলে তাকে কারা বিধি অনুযায়ী তিনি জেল আপিলের সুযোগ পাবেন। কারাগারে থেকেই তিনি এ সুযোগ পাবেন। আপিলের তিনি আপিলের বিলম্ব মার্জনা এবং কি কারণে এতোদিন পলাতক ছিলেন সেই ব্যাখা তাকে দিতে হবে। জেল আপিল খারিজ হলে তিনি রিভিউ করতে পারবেন। সেটির ওপর শুনানি সম্পন্ন হলে কারা বিধি অনুযায়ী তিনি মহামান্য প্রেসিডেন্টের কাছে অপরাধ স্বীকার করে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন বলেও জানান ফৌজদারি মামলায় অভিজ্ঞ এই আইনজীবী।
এর আগে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি একেএম মহিউদ্দিন আহম্মেদকে (ল্যান্সার মহিউদ্দিন) ২০০৭ সালের ১৬ জুন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়। দেশে আসার পর বিমান বন্দর থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। ল্যান্সার মহিউদ্দিনের দন্ডাদেশ কার্যকর করার ক্ষেত্রে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয় আবদুল মাজেদের ক্ষেত্রেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে বলে জানা গেছে। ল্যান্সার মহিউদ্দিনের পক্ষে তখন আইনি লড়াই করেন ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন।


প্রসঙ্গত: বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আবদুল মাজেদসহ ১২ আসামিকে ২০০৯ সালে মৃত্যুদÐাদেশ দেয়া হয়। এদের মধ্যে সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ ও মুহিউদ্দিন আহমেদের (আর্টিলারি) ফাঁসি ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি কার্যকর হয়। এর আগেই ২০০২ সালে পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা যান আরেক আসামি আজিজ পাশা। আবদুল মাজেদ গ্রেফতার হওয়ায় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় এখন পলাতক আছেন পাঁচজন। তারা হলেন, মৃত্যুদÐ প্রাপ্ত খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, এ এম রাশেদ চৌধুরী ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মামলা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ