Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ওএমএসের পণ্য কেনার জন্য দীর্ঘ লাইন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০১ এএম

সমাজের বিত্তবানরা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনছেন সুপারশপগুলোতে অন্যদিকে অসহায়, দুঃস্থরা তাকিয়ে থাকছেন ত্রাণ সমগ্রীর দিকে। তবে মধ্যবিত্তরা ভিড় করছেন নায্যমূল্যের পণ্য বিক্রির ট্রাকে। ন্যায্যমূল্যের এসব ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন তারা। দুপুর থেকে সন্ধ্যা অবধি থাকছে লম্বা লাইন। গতকাল রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, মুগদা, টিকাটুলি, পল্টন এলাকা ঘুরে দেখা যায় ন্যায্যমূল্যের ট্রাকগুলোকে কেন্দ্র করে ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন। এসব ট্রাকে মিনিকেট চাল ৫০ টাকা, ডাল ৮০ টাকা, চিনি ৫০টাকা, পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকা কেজি, সয়াবিন তেল ৮০ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বাজার ও দোকানগুলোতে এসব পণ্যের দাম মিনিকেট চাল ৫৮-৬০ টাকা, ডাল ১৩০ টাকা, চিনি ৬০-৭০, পেঁয়াজ ৫০টাকা, সয়াবিন তেল ১০৫-১১০ টাকা লিটার। এজন্য প্রতিদিন বিভিন্ন স্পটে ওএমএসের ন্যায্যমূল্যের টাকা আসার সাথে সাথে পণ্য কেনার জন্য ক্রেতাদের দীর্ঘলাইন তৈরি হয়। এসব ট্রাকের পাশে কোথাও গোল চিহ্ন একে বা দাগ টেনে এক মিটার দূরত্বে ক্রেতাদের দাঁড়ানোর জন্য বলা হচ্ছে। তবে কোথাও কোথাও এসব না মেনেই একজন আরেক জনের গাঁ ঘেষে কিংবা নিরাপদ দূরত্ব না মেনেই লাইনে দাঁড়াচ্ছেন।

টিকাটুলির ইত্তেফাক মোড়ে ওএমএসের ন্যায্যমূল্যে ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে আসা ইকবাল হাসান বলেন, এমনিতেই কাজ-কর্ম বন্ধ, তার ওপর বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। ওএমএসের ট্রাক থেকে কিছুটা কম মূল্যে পণ্য কিনতে পারি এজন্য সময় লাগলেও এখান থেকে কিনছি। রামপুরা বাজারের পাশে ওএমএসের ট্রাক থেকে পণ্য কেনা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী জব্বার আলী বলেন, দোকানে সয়াবিন তেল ১০৫-১১০ টাকা লিটার নিচ্ছে, আর এখান থেকে ৮০ টাকা লিটার পাচ্ছি। মালিবাগ রেলগেইটের বাজারের সামনে ওএমএসের ট্রাক থেকে পণ্য কেনার জন্য লাইনে দাঁড়ানো রফিকুল ইসলাম বলেন, সয়াবিন তেল কেনার জন্য কয়েকদিন ধরে চেষ্টা করছি। ট্রাকে যা নিয়ে আসে আগে আগেই শেষ হয়ে যায়। দোকানের চেয়ে কম মূল্যে পাওয়া যায় বলে আমাদের মত মধ্যবিত্তদের ওএমএসের ট্রাকের ওপরই ভরসা রাখতে হচ্ছে।

পুরান ঢাকার কোর্ট কাচারি এলাকায় লাইনে দাঁড়ানো বেসরকারি হাসপাতালের চাকরিজীবী সাবিত্রী রানী দাস বলেন, দশদিন গেছে লকডাউনের। ছোট চাকরি করি। বেতন পামু কিনা ঠিক নাই। ঘরে চাল ডাল শেষ। খামু কি? লজ্জা কইরা লাভ নাই। তাই বাধ্য হয়ে ন্যায্যমূল্যের লাইনে দাঁড়াইছি।

সদরঘাটে লঞ্চে যাত্রী টানার কাজ করেন সূত্রাপুরের বারেক আলী। একই সুরে কথা বললেন তিনিও। লকডাউনে লঞ্চ বন্ধ। দৈনিক মজুরিতে কাজ করতেন। এখন কাজ নেই, আয়ও নেই। কি আর করা। পাঁচজনের পরিবার। চলার আর অন্য কোন উপায় তো নেই। ন্যায্যমূল্যের পণ্য কিনে কিছুদিন চলবেন। তাও না পারলে ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়াবেন।
ইত্তেফাক মোড়ে ওএমএসের ট্রাকের বিক্রয়কর্মী রাশেদ, আজাদ, হৃদয় জানান, এখন প্রতিদিনই লাইন বড় হচ্ছে। পণ্য যা নিয়ে আসছেন তার সবই শেষ হয়ে যাচ্ছে। যদিও লাইনে দাঁড়ানো অনেকেই আশঙ্কা করছেন পণ্য পাবেন কিনা এ নিয়ে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ