Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে ৫ জনের বেশি শরীক হতে পারবেন না

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০০ এএম

মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে ৫ জনের বেশি শরীক হতে পারবেন না। আর, জুমার নামাজে সর্বোচ্চ ১০ জন অংশ নিতে পারবেন বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনার কথা জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে খতিব, ইমাম, মুুয়াজ্জিন ও খাদেমগণ অংশ নিতে পারবেন। আর জুমার নামাজের সময় বাইরের মুসল্লি মসজিদের ভিতরে জামায়াতে অংশ নিতে পারবেন না।
ধর্মমন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. সাখাওয়াৎ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস ভয়াবহ মহামারি আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশে যথাযথভাবে সুরক্ষা নিশ্চিত করা না হলে ব্যাপক সংক্রমণ এবং বিপুল প্রাণহানির আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করোনাভাইরাস মানুষের হাঁচি-কাশি, নিঃশ্বাস ও সংস্পর্শের মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে সংক্রমিত হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সংক্রমিত ব্যক্তির দেহে রোগের উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগেই তার মাধ্যমে অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ ঘটতে পারে। অনেকের মধ্যে ভাইরাসটি সুপ্ত অবস্থায় বিদ্যমান থাকে যার লক্ষণ দৃশ্যমান হয় না। পূর্ব থেকে সতর্কতা অবলম্বন না করলে এর বিস্তাররোধ অসম্ভব হয়ে পড়বে। এরকম হতে থাকলে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ব্যাপক সংক্রমণ ও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। বিশ্বে এ পর্যন্ত এ রোগের কোনো প্রতিষেধক বা চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়নি। যে কারণে সরকার সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে এবং সামাজিক দূরত্ব বজার রাখার লক্ষ্যে দেশের সব নাগরিককে ঘরে থাকার কঠোর নির্দেশ প্রদান করেছে।
এতে বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে জনসমাগমের মাধ্যমে এ রোগের বিস্তার ঘটছে। পাশ্ববর্তী দেশগুলোতেও এ ধরনের বিস্তার ও প্রাণহানীর ঘটনার উদাহরণ বিদ্যমান। ইতোমধ্যে মুসলিম স্কলারদের অভিমতের ভিত্তিতে পবিত্র মক্কা মোকাররমা ও মদিনা মোনাওয়ারাসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশের মসজিদে মুসল্লিদের আগমন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ এ রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সর্বসাধারণের আগমন বন্ধ রাখার জোর পরামর্শ দিয়েছেন। গত ২৯ মার্চ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আহ্বানে এ বিষয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমরা মিলিত হয়ে মসজিদে মুসল্লিদের উপস্থিতি সীমিত রাখার ব্যাপারে সর্বসম্মতভাবে আহ্বান জানিয়েছিলেন। এর পর পরিস্থিতি দ্রুত ভয়ঙ্কর অবনতির দিকে যাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সকলের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নিন্মোক্ত নির্দেশনা প্রদান করা হলো-
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধকল্পে মসজিদের ক্ষেত্রে খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেম ব্যতীত অন্য সব মুসল্লিকে সরকারের পক্ষ থেকে নিজ নিজ বাসস্থানে নামা আদায় এবং জুমার জামাতে অংশগ্রহণের পরিবর্তে ঘরে জোহরের নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, মসজিদে জামাত চালু রাখার প্রয়োজনে খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেম মিলে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজে অনধিক ৫ জন এবং জুমার জামাতে অনধিক ১০ জন শরিক হতে পারবেন। জনস্বার্থে বাইরের মুসল্লিরা মসজিদের ভেতরে জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
একই সঙ্গে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদেরকেও উপাসনালয়ে সমবেত না হয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে উপাসনা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে।
এ সময় দেশের কোথাও ওয়াজ মাহফিল, তাফসির মাহফিল, তাবলিগি তালিম বা মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা যাবে না। সবাই ব্যক্তিগতভাবে কোরআন তেলাওয়াত, জিকির ও দোয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহর রহমত ও বিপদ মুক্তির প্রার্থনা করবেন। অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরাও এ সময়ে কোনো ধর্মীয় বা সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানের জন্য সমবেত হতে পারবেন না।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সকল ধর্মের মূলনীতির আলোকে এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে এই নির্দেশনা জারি করা হলো। উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালনা কমিটিকে অনুরোধ জানানা হয়েছে এতে। কোনো প্রতিষ্ঠানে সরকারি এই নির্দেশ লংঘিত হলে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ