Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মসজিদে আসবেন না বাসায় নামাজ পড়ুন

মাইকে মোয়াজ্জিনের আহ্বান

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০০ এএম

প্রাণঘাতী করোনার সংক্রমণ রোধে জনসমাগম এড়াতে মসজিদে না এসে ঘরে নামাজ আদায় করার জন্য সারাদেশে মসজিদে মসজিদে মাইকিং করে মুসল্লিদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। গতকাল রাজধানীতে আসর এবং মাগরিবের আজানের পর প্রতিটি মসজিদের মোয়াজ্জিন মাইকে মুসল্লিদের প্রতি এই আহ্বান জানান। এ ছাড়া যে সকল মসজিদে কলাপসিবল গেট আছে সে সব মসজিদের গেটেও তালা লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন আর বাইরের লোক মসজিদে ঢুকতে পারছেন না।
আসর নামাজের আজানের পর রাজধানীর বঙ্গভবন মসজিদ, গোপীবাগ মসজিদ, পুরান ঢাকার চাঁদ মসজিদসহ আরও অন্যান্য এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা করা হয়, প্রিয় এলাকাবাসী, আগামী কয়েকদিন আপনারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঘরে আদায় করুন। মসজিদে নিয়মিত জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তবে আপনারা বাসায় নামাজ আদায় করুন।
যাত্রাবাড়ীর উত্তর রায়েরবাগের বাইতুর রহমত জামে মসজিদ ও মাতুয়াইলের চান বানু জামে মসজিদ থেকে ঘোষণা করা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে মসজিদে জনসমাগম এড়াতে আপনারা সবাই বাসায় নামাজ আদায় করে নেবেন। মসজিদে আসার প্রয়োজন নেই। ফার্মগেটের পশ্চিম তেজতুরী বাজার মসজিদ ও বাড্ডা এলাকার মসজিদে দয়া করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বাসায় আদায় করার অনুরোধ জানানো হয়। বংশালের পেয়ালাওয়ালা জামে মসজিদে আসর নামাজে দেয়া এক ঘোষণায়, মাগরিবের ওয়াক্ত থেকে নামাজ ঘরে আদায়ের অনুরোধ জানানো হয়। এরপর মাগরিবের নামাজের আজানের পরও রাজধানীর প্রায় সব মসজিদের মাইক থেকে মোয়াজ্জিনরা মুসল্লিদের প্রতি মসজিদে না আসার অনুরোধ করেন।
এর আগে গণমাধ্যমে পাঠানো এ-সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ইতিমধ্যে মুসলিম স্কলারদের অভিমতের ভিত্তিতে পবিত্র মক্কা মুকাররমা ও মদিনা মুনাওয়ারাসহ বিশ্বের প্রায় সবদেশের মসজিদে মুসল্লিদের আগমন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এ রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডাসহ ধর্মীয়প্রতিষ্ঠানে সর্বসাধারণের আগমন বন্ধ রাখার জোর পরামর্শ দিয়েছেন।
তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশে তারা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ‘মসজিদে জামায়াত চালু রাখার প্রয়োজনে সম্মানিত খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেম মিলে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজে অনধিক পাঁচজন এবং জুমার জামায়াতে অনধিক ১০ জন শরিক হতে পারবেন। জনস্বার্থে এর বাইরে মুসল্লি মসজিদের ভেতরে জামায়াতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এছাড়াও শুক্রবার জুমার জামাতে অংশগ্রহণের পরিবর্তে ঘরে জোহরের নামায আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও সারাদেশে ওয়াজ মাহফিলসহ অন্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা এবং অন্য ধর্মের অনুসারীদেরও উপাসনালয়ে সমবেত না হয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে উপাসনা করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামে মসজিদে জামাত বন্ধ ঘরে ঘরে নামাজ আদায়
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার সাথে সাথে চট্টগ্রামের মসজিদগুলোতে জামাত আয়োজন বন্ধ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার আছর এবং মাগরিবের আজানের আগে পরে মসজিদ থেকে মুয়াজ্জিনগণ এ ঘোষণা দেন। তারা মুসল্লিদের উদ্দেশে বলেন, আজান হলে নিজ নিজ বাসায় নামাজ আদায় করুন। কেউ মসজিদমুখী হবেন না। নগরীর আগ্রাবাদ, পাঠানটুলি, কদমতলী, ষোলশহর, নাসিরাবাদ, আন্দরকিল্লাসহ বিভিন্ন এলাকায় মসজিদ থেকে এমন ঘোষণা দেয়া হয়। ঘোষণায় বলা হয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সবাইকে ঘরে থাকারও আহ্বান জানান মুয়াজ্জিনগণ। ঘোষণার পরপর নগরীর এনায়েত বাজার শাহী জামে মসজিদসহ মসজিদগুলোর প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়। ঘোষণা শুনে মুসল্লিরা ঘরে ঘরে নামাজ আদায় করেন।
সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যরা নজরদারি শুরু করেন। তবে কয়েকটি মসজিদে আছর এবং মাগরিবের নামাজেও যথারীতি আগের মত মুসল্লিদের উপস্থিতি দেখা গেছে। সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং খাদেমসহ সর্বোচ্চ ৫ জন জামাতে অংশ নেবেন। বাইরের কোনো মুসল্লি মসজিদে প্রবেশ করতে পারবেন না। শুক্রবার জুমার দিনে ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমসহ সর্বোচ্চ ১০ জন নামাজ আদায় করতে পারবেন। তবে ওইদিনও মুসল্লিরা মসজিদে যেতে পারবেন না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ