Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দীর্ঘ যানজট রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে

নিষেধাজ্ঞার পরও অনেকেই যানবাহন নিয়ে প্রবেশ করছেন

সাখাওয়াত হোসেন | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০০ এএম

ঢাকার বাইরে থেকে মানুষ ও অত্যাবশ্যক যানবাহন ছাড়া সকল ধরনের যানবাহন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সরকারি এ আদেশ লঙ্ঘিত হচ্ছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ তথা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার স্বার্থে পুলিশ প্রশাসন থেকে এ নির্দেশনা জারি করা হলেও নানা অজুহাতে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথে দিয়ে অসংখ্য মানুষ ও যানবাহন প্রবেশ করছে। এমনকি রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হতেও দেখা গেছে।
গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিমানবন্দর সড়কে গিয়ে দেখা যায়, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন বলাকা ভবনের অদূরে মূল সড়কে ক্রমাগত সাইরেন বাজিয়ে চলেছে রোগীবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু সামনে প্রাইভেটকার, জিপগাড়ি, মাইক্রোবাস, বড় লরি, পিকআপ ভ্যান ও মোটরসাইকেলসহ অসংখ্য যানবাহন থাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি এক ইঞ্চিও যেতে পারছে না।
ট্রাফিক পুলিশের একজন কর্মকর্তাকে অ্যাম্বুলেন্সকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য জায়গা করে দিতে পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে আসার জন্য অন্যান্য গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়। কিন্তু সামনের গাড়ি নড়াচড়া না করায় অ্যাম্বুলেন্সটি আগের জায়গায় থেকেই সাইরেন বাজাতে দেখা যায়। ততক্ষণে সামনে ও পেছনে শতাধিক গাড়ির জট লেগে যায়।
ঢাকার বাইরে থেকে যানবাহন প্রবেশ ঠেকাতে বিমানবন্দরের মূল সড়কে পুলিশ টহল বসালে এ দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা একটি প্রাইভেটকারের মালিককে উদ্দেশ্যে করে বলছিলেন, ঢাকার বাইরে থেকে যানবাহন প্রবেশ নিষেধ- এ সরকারি নির্দেশ কি আপনি জানেন না? ব্যাক-ডালাভর্তি বাজার-সদাই। আর বলছেন, উত্তরা থেকে আসছি। গাড়ি সাইড করেন, দেখছি আপনি কোথা থেকে এসেছেন?
অবাধ প্রবেশ ঠেকাতে পুলিশ সংক্রিয় হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথে টহল বসিয়েছে। কিন্তু মানুষ স্বপ্রণোদিত হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকছে না। শুধু ঢাকার বাইরে থেকেই নয়, রাজধানীতে যারা রয়েছেন তারাও নানা অজুহাতে যানবাহন নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন। বিভিন্ন টহল পয়েন্টে পুলিশ যানবাহনের মালিকের কাছ থেকে বাইরে বের হওয়ার সস্তোষজনক জবাব না পেলে মামলাও করতে দেখা গেছে।
গতকাল সকালে উত্তরা রাজউক মোড় থেকে আজমপুর পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তায় অসংখ্য যানবাহন চলাচল করছে। কেউ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কেউ বাজার আবার কেউবা হাসপাতালে রোগী দেখতে যাওয়াসহ নানা অজুহাতে ছোটবড় যানবাহন নিয়ে বাইরে বের হচ্ছেন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় হয়ে টহল বসিয়ে জেরা করতে দেখা গেছে। সন্তোষজনক জবাব না পেলে মামলা দায়ের করতেও দেখা গেছে। কোথাও কোথাও রিকশা আটকে উল্টে রাখতে দেখা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উত্তরা এলাকার একজন কর্মকর্তা বলেন, ঢাকায় যানবাহন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অনেকেই তা মানছেন না। এক্ষেত্রে অনেকে প্রয়োজনেই বাইরে গিয়ে আটকা পড়েছেন এবং না ফিরে আসলে আর্থিকসহ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে জানাচ্ছেন।
শুধু বিমানবন্দর সড়কেই নয়, রাজধানীর মিরপুর, গাবতলী, কল্যাণপুর, যাত্রাবাড়ি, মালিবাগ, খিলক্ষেত, খিলগাঁও, পুরান ঢাকা, মতিঝিল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ চেক পোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করছে। তবে সেইসব এলাকায়ও বাইরে থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে লোকজন ঢাকায় আসছেন। আবার অনেকেই অ্যাম্বুলেন্সে করেই ঢাকা ছাড়ছেন। এছাড়াও পিকআপ ও মাইক্রোবাসে করেও যাত্রী নেয়া হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে যান চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। গাড়ি চলাচল বেড়ে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে মানুষের যাতায়াত বেড়ে গেছে। এতে ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কাও বেড়েছে। যে উদ্দেশ্যে সরকারি অফিস-আদালত বন্ধ করা হয়েছে; গণপরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, সেই উদ্দেশ্য ব্যাহত হতে পারে। তারা বলেন, আওতামুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্যগুলো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে মেনে চলা উচিত।



 

Show all comments
  • Shan Ferdous Shan Ferdous ৭ এপ্রিল, ২০২০, ১:১৭ এএম says : 0
    সড়কের পুলিশ সম্ভবতঃ করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে, তাই আটকায়নি.....................।
    Total Reply(0) Reply
  • সত্য রায় ৭ এপ্রিল, ২০২০, ১:১৮ এএম says : 0
    আমি ভবিষ্যতে শুধু অন্ধকার দেখতেছি,স্বজন হারানোর বেদনায় ছল ছল চোখ দেখতেছি। ক্রমে ক্রমে আমরা অন্ধকার থেকে থেকে আরও গভীর অন্ধকারে চলে যাচ্ছি,গিয়েছি। এর জন্য ব্যক্তি থেকে শুরু করে সরকার সবাই দায়ী।
    Total Reply(0) Reply
  • Ninad Ul Haque ৭ এপ্রিল, ২০২০, ১:১৮ এএম says : 0
    ইতালি প্রথমে কোন গুরুত্ব দেয় নাই, চরম ফল ভোগ করেছে এখন আমাদের পালা। আল্লাহ আমাদের যদি নিতে আসেন ই তবে যাব কিন্তু সাথে কিছু নীতিনির্ধারক গন দেরও নিয়ে জাবার তৌফিক দান করেন,যাতে ভবিষ্যতে এমন গা ছাড়া ভাব করার সাহস না হয় তাদের।
    Total Reply(0) Reply
  • Reyana Habiba ৭ এপ্রিল, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 0
    শুরু হয়ে গেছে মৃত্যুর আনাগোনা, আর সময় নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • Pramanik Jalal Uddin ৭ এপ্রিল, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 0
    শহর-বন্দর, পাড়া-গ্রাম সব জায়গায় দেখছি কিছু মানুষ বিনা প্রয়োজনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এরা করনার ভয়াবহতা সম্পর্কে জ্ঞান থাকলেও মানছেন না। এরাই বাংলাদেশকে আরো বেশি ভয়ংকর করে তুলছে। এখনই কার্ফু জারি করে সকলকে ঘরে রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।
    Total Reply(0) Reply
  • আলা উদ্দিন শুভ ৭ এপ্রিল, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 0
    মহামারি আশঙ্কায় আছি আমরা, যারযার অবস্থান থেকে সাবধান ও সচেতন থাকুন। সচেতনতা হোক করোনা মুক্তির একমাত্র হাতিয়ার। -ভালো থাকুক মানুষ, ভালো থাকুক বাংলাদেশ
    Total Reply(0) Reply
  • Md Zarif Hasan ৭ এপ্রিল, ২০২০, ১:২০ এএম says : 0
    বাসায় থাকতে থাকতে যাদের বিরক্ত লাগছে, তাদের বলছি ৩০ পারা কুরআন শরীফ পরে নিন, সময়টা কাজে লাগান.!
    Total Reply(0) Reply
  • asad ৭ এপ্রিল, ২০২০, ৭:১৭ এএম says : 0
    দেশের জন্য দশের জন্য সবাই আন্তরিক হই। এখনও যদি আন্তরিক না হতে পারি, তবে আর কবে কখন?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ