পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেও করোনাভাইরাসের আতঙ্কের কারণে বিনা চিকিৎসায় মৃতুবরণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমন চাকমা। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা ও গবেষণা অনুষদের (আইইআর) শিক্ষার্থী সুমন। ২০১৮ সালের জুন মাসে তার ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে। সমাজের নানা শ্রেণির বিত্তবানদের সহায়তায় চিকিৎসাও নিতে থাকেন তিনি। বেঁচে থাকার সাহস নিয়ে ভারতের বেশকিছু হাসপাতালেও চিকিৎসা নিতে যান তিনি। ক্যান্সারের কারণে ঘাড়ে ও পিঠে প্রচন্ড ব্যথা শুরু হলে ভারতে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায় তার। এরপর ওষুধের জন্য ভারতের চিকিৎসা সম্পর্কিত বিভিন্ন ফেসবুক গ্রæপে পোস্ট দিতে দেখা যায় তাকে।
এর মধ্যে বাংলাদেশ-ভারতসহ বিশ্বজুড়ে থাবা বসায় করোনাভাইরাস। দেশেই চিকিৎসা পাওয়া আরও কঠিন পড়ে সুমনের। হাসপাতাল আর চিকিৎসকদের ফিরিয়ে দেয়ার দুঃখ প্রকাশ করে তিনি গত ২৬ মার্চ সকালে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ‘আমার করোনা হয়নি অথচ পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে করোনার জন্যই আমাকে মারা যেতে হবে।’ সুমনের সেই শঙ্কা বাস্তবে পরিণত হলো ১১ দিন পার না হতেই। চিকিৎসাবঞ্চিত হয়ে প্রাণ হারাতে হলো এই মেধাবী শিক্ষার্থীকে। বিষয়টি নিশ্চিত করে তার বাবা সুপেন চাকমা জানান, গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় সুমন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তার ঘনিষ্ঠ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আসিফ আলম ফেসবুকে সুমনকে নিয়ে দেয়া এক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘কদিন আগেই শেষ কথা হয়েছিল সুমনের সাথে। অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছিল সুমন। ফুসফুসে টিউমার নিয়েও জীবন যুদ্ধে হাল ছাড়েনি। ঢাকা ও ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আবার আইইআরে ফিরেছিল হাসিমাখা ওই মুখটা। আইইআরের প্রতিটা শিক্ষক-শিক্ষার্থী সুমনের এই লড়াইয়ের ইতিহাসের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সাক্ষী।
করোনায় আর দশজনের মতো সুমনও উৎকণ্ঠায় ছিল। কিন্তু এই করোনা নিয়ে ওর সর্বশেষ আশঙ্কাই সত্যি হলো। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা পায়নি। গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ফুসফুসের ব্যাধি নিয়ে হার মানে সুমন। বিনা চিকিৎসায় এভাবে সুমন চলে যাবে, কে ভেবেছিল! কাউকে কিছু না জানিয়ে এমন নিশ্চুপ প্রস্থান, মেনে নিতেই কষ্ট হচ্ছে। ক্ষমা চাইবেন? কোন মুখে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালিয়ের সহপাঠী ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের অভিযোগ- সুমন চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে গেলেও করোনা ভাইরাসের ভয়ে তাকে চিকিৎসা দেয়নি কোনো হাসপাতাল। ফলে বিনা চিকিৎসাতেই মৃত্যু হলো তার।
বাবা সুপেন চাকমা জানান, তৃতীয় বর্ষের মিড পরীক্ষা দেয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়। সে ছুটিতে বাড়ি চলে আসে। তারপর সে বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসা করানোর জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার পাঁচ-ছয়টি হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু তারা কেউ করোনার ভয়ে তার চিকিৎসা দেয়নি। ঢাকা থেকে ডাক্তার না দেখিয়েই বাড়ি চলে আসতে হলো। পরে চট্টগ্রামে এক হোমিও চিকিৎসকের কাছ থেকে ২৪ দিনের ওষুধ নিয়েছি। কয়েক দিনের ওষুধ নিয়ে আসছিলাম। পরে ওষুধ শেষ হওয়ার পর আর আনা যাচ্ছিল না। গাড়ি বন্ধ ছিল। ভালো চিকিৎসা ও ওষুধের অভাবে ছেলেটাকে হারিয়ে ফেললাম।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।