পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, করোনার প্রভাবে অর্থনীতি যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, তা বাস্তবায়িত হলে অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াবে। করোনা সংকটের মধ্যে বাংলাদেশ সবার ওপরে রয়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে গত এক বছর ধরে টানাপড়েন চলছিল। তার মাঝেও আমরা সবার ওপরে ছিলাম। এখনও সবার ওপরে আছি। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, তার সুবিধা সব শ্রেণি-পেশার মানুষ পাবে। কৃষক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতীসহ সব পেশার মানুষকে এর আওতায় আনা হবে। এ ছাড়া মিডিয়া, শিল্প কারখানাও এর পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে। কেননা ঘোষিত প্যাকেজের মাধ্যমে দেশের সব খাতকেই সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে।
গতকাল গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-এর বক্তব্যের পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, করোনা মহামারিতে সারা বিশ্ব আক্রান্ত। এটি কতো দিন থাকে আমরা জানি না। শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বের অর্থনীতির ওপর এর প্রভাব রয়েছে। তাছাড়া এখন বিশ্বের এক প্রান্তে কিছু ঘটলে তা অপর প্রান্তের মানুষের ওপর প্রভাব ফেলে। তাই বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপরও এটি প্রভাব ফেলবে। তবে এই পরিস্থিতিতে আমরা প্রত্যেক মানুষের পাশে আছি। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, আশা করি, তা দ্রæত কেটে যাবে। এবং দুর্যোগ পরবর্তী অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে দেশের অর্থনীতি আবার গতিশীল অবস্থায় ফিরে আসবে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, গত মাসেও আমাদের ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল। রপ্তানি খাত বিশেষ করে রেমিট্যান্স থেকে আমাদের প্রবৃদ্ধির একটি বড় অংশ আসে। এবার করোনার কারণে কিছুটা কমলেও অপরাপর দেশের থেকে আমরা ভালো অবস্থানে থাকবো। অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে নিজের লক্ষ থেকে সরবেন না বলেও দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বিশ্বের সেরা এ অর্থমন্ত্রী।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে বিভিন্ন সময় নানা দুর্যোগ নেমে এসেছে। ১৯৯৭ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক খাতে বিপর্যয় দেখা দেয়। যদিও সে বিপর্যয় গোটা বিশ্ব অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করেনি। কিন্তু এ অঞ্চলের অর্থনীতিকে আক্রান্ত করেছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-ই তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তখনও আমরা দেখেছিলাম তিনি (শেখ হাসিনা) প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর হাত ধরেই আমরা এই অঞ্চলের মানুষ ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছিলাম। এরপর ২০০১ থেকে ২০০৮ সালে পর্যন্ত আরেকটি দুর্যোগ এসে বিশ্ব অর্থনীতিকে লন্ডভন্ড করে দেয়। পৃথিবীর একটি বড় ব্যাংক পর্যন্ত তখন দেউলিয়া হয়ে যায়। ঠিক এমন সময় প্রধানমন্ত্রীই দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সারা বিশ্বে অর্থনীতিকে যেভাবে গুছিয়ে আনার চেষ্টা চলছিল। শেখ হাসিনাও সেটি অনুসরণ করে আবারো আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, গত পরশু দিন সর্বশেষ চিত্র তুলে ধরেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির মতে, গত ৮ মাসে আমাদের যে অর্জন, তার ভিত্তিতে আমাদের জিডিপির আকার এই মুহূর্তে ৭ দশমিক ৮ ভাগ। তারা বলেছে, যদি স্বাভাবিকভাবে সবকিছু চলে তাহলে এ বছর আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮-এর কাছাকাছি থাকবে।
এডিবি প্রসঙ্গ তোলার আগে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী, আপনি জানেন আমরা খুব ভালোভাবেই এগোচ্ছিলাম। শুধু কয়েকটি উদাহরণ দিই যেগুলো খুব বেশি কাজ করে আমাদের প্রবৃদ্ধিতে। যেমন, রাজস্ব। সারাবিশ্বে গত এক বছর ধরে টানাপড়েন চলছিল। তার মাঝেও আমরা সবার ওপরে ছিলাম। এখনও সবার ওপরে আছি।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, রাজস্ব আহরণ করেছিলাম গত ৮ মাসে (চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) ৮ দশমিক ১৫ ভাগ। রেমিট্যান্সে আমাদের ৮ মাসে প্রবৃদ্ধি ছিল ২০ দশমিক ০৫ ভাগ। এটাই প্রথম- আমরা এত রেমিট্যান্স অর্জন করতে পেরেছিলাম। গত অর্থবছরে আমাদের ৮ মাসে রেমিট্যান্স অর্জন ছিল ১০ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার। সেখানে এ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে রেমিট্যান্স অর্জন হয়েছে ১২ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রথম ৮ মাসে আমাদের শুধু একটি মাত্র খাতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছিল। সেটা হলো রফতানি খাত, (এই খাতে) নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এখানে একটি কথা বলে রাখা উচিত যে, রফতানি বাণিজ্যের সিংহভাগ হলো তৈরি পোশাক শিল্প। ১০০ ভাগে সাড়ে ৬ ভাগ খুবই নেগলিজিবল (নগণ্য) মনে করি। তারপরও রেমিট্যান্স দিয়ে আমরা সেটা কাভার করে ফেলেছি। সুতরাং রেমিট্যান্স থেকে সেটা কাভার করার কারণে স্থানীয় চাহিদা কমবে না।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমার ব্যক্তিগত মত হলো, সকল বিপদ কেটে যায়। এ বিপদও কেটে যাবে। বিপদ কেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদেরকে সময় বেশি না নিয়ে যাতে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারি, যাতে আমরা আবার যে জায়গাতে ছিলাম সেখানে চলে যেতে পারি, সেখান থেকে কাজ শুরু করে আমাদের যে কাঙ্খিত লক্ষ্য, তা অর্জনে আমরা যেন না পিছিয়ে পড়ি-সেজন্যই প্রধানমন্ত্রী ঘোাষিত এই প্যাকেজগুলো ঘোষণা দিয়েছেন। তার কাছে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব, কারণ তিনি দেরি করেন নাই। করোনা ঘটে যাওয়ার পরে করেন নাই। আগেভাগেই সেই ব্যবস্থা নিয়ে নিয়েছেন উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।