পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের ক্ষতি মোকাবিলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তাকে দায়িত্ব ও কান্ডজ্ঞানহীন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সারা বিশ্বে সব মানুষ যখন একযোগে এই সংকট মোকাবিলায় এক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছে, তখন অর্বাচীনের মতো মির্জা ফখরুলের বক্তব্য জাতিকে বিভ্রান্ত করে। গতকাল শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে করোনা সংকট মোকাবিলায় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তিন ভাগ অর্থাৎ ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ প্রণোদনা ঘোষণা করার প্রস্তাব দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই দুর্যোগ পরিস্থিতিতে দম্ভ, অহংকার ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরিহার করে সরকারকেই ঐক্যমত প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা এই মহাদুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হব।
ফখরুলের প্রস্তাবের জবাব ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল যে প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন, তা আমাদের অর্থনীতির ঊর্ধ্বগামী সম্ভাবনার বিপরীত। এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য জনগণকে শুধু হতাশই করতে পারে। এডিবির (এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক) এক অর্থনীতিবিদ যেখানে বলেছেন, এই সংকটের মধ্যেও এশিয়ায় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছরে সর্বোচ্চ হবে, সেখানে অর্থনীতির এই সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার এই প্রস্তাব সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে। তিনি বলেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকটের এই সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মতো দায়িত্বশীল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যখন দায়িত্ব ও কান্ডজ্ঞানহীনভাবে বক্তব্য দেন তখন জাতি হতাশ হয়। তার বক্তব্য আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ হওয়া একজন দিশেহারা রাজনীতিকের অসংলগ্ন প্রলাপ ও ব্যর্থতার বেসামাল বহিঃপ্রকাশ। তাদের এই বালখিল্যতার কারণে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দলের নেতা-কর্মীরা জাতীয় এই দুর্যোগে যখন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, সাধারণ জনগণের পাশে থেকে জনগণকে আশ্বস্ত করে চলেছেন ঠিক তখনই মির্জা ফখরুলরা ভুল তথ্য উপস্থাপন করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। দুর্যোগের এই মুহূর্তে বিভেদ নয়-এটা তাদের বোধগম্য নয়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই সময়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জনগণকে সতর্ক, সচেতন ও দায়িত্বশীল করার কাজ করে চলেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার শুরু থেকেই একটি গাইডলাইন প্রস্তুত করে রেখেছে এবং এই ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতন ও দায়িত্বশীল জনগণকে প্রধান নিয়ামক ধরে সম্মিলিত প্রয়াস গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা আপদকালীন সময়ে জাতির অভিভাবক হিসেবে গত ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি ও কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। এর বাইরেও সামাজিক সুরক্ষার পাশাপাশি অপ্রত্যাশিত ব্যয় বরাদ্দসহ দীর্ঘমেয়াদী সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে রেখেছেন।
কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গৃহীত এই সকল কর্মসূচিকে ভিত্তি ধরে কোনো প্রস্তাব দিতেন আমরা মনে করি সেটা জাতির জন্য আশাব্যঞ্জক হতো। কিন্তু তারা সেটা না করে সরকারের বিরুদ্ধাচারের নামে বিপরীত প্রস্তাব জাতির সামনে তুলে ধরে জাতিকে বিভ্রান্ত ও উদ্বিগ্ন করেছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, ভারতে এই দুর্যোগের সময়ে বিজেপি সরকার কর্তৃক গৃহীত কর্মসূচি কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সোনিয়া গান্ধী লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে সমর্থন জানিয়েছেন। সারা বিশ্বের নেতৃবৃন্দ করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে দোষারোপের রাজনীতি পরিহার করার সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেখানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা ও তাদের দল এই সংকটকে ঘনীভূত করে, জনমনে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে জনগণের ঐক্যের দুর্গকে নস্যাৎ করতে চায়।
সেতুমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিন সারাদেশে কমপক্ষে ১০০০ এবং প্রতিটি উপজেলায় দুটি করে নমুনা পরীক্ষার সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণে অন্য দেশের তুলনায় নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হওয়ায় বিএনপি ব্যথিত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে হয়তো তারা খুশি হতো। মৃত্যুর হার নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে মন্তব্য করেছেন সেটা থেকে প্রমাণিত হয় উনি গণিতের সাধারণ সূত্রই জানেন না। আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম বলেই সেখানে মৃত্যুর হার বেশি হওয়াটা স্বাভাবিক।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই সংকট, আমাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও সম্ভাবনা বিচার বিশ্লেষণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের জন্য জনগণের কল্যাণে কর্মসূচি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত পরিকল্পনায় সারা বিশ্ব যেখানে সম্ভাবনার নতুন সূর্যোদয় দেখে সেখানে বিএনপি বরাবরে মতো মুখ ঘুরিয়ে রাখেন অন্ধকারের দিকে। জনগণ থেকে প্রত্যাখ্যাত বিএনপি কখনই আলোর পথে আসতে চায় না। আওয়ামী লীগ জনগণকে সচেতন করে গড়ে তোলার মাধ্যমে জনগণের সম্মিলিত প্রয়াস নিয়েই এই সংকট মোকাবেলা করবে, ইনশাল্লাহ।
এসময় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাওয়া ডাক্তার-নার্স ও স্বাস্থ্য সেবাকর্মীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন ওবায়দুল কাদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।