পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরো দুইজন মারা গেছেন। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা আট। আক্রান্ত আরো নয় জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৭০ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া, সুস্থ হয়েছেন আরো চারজন। এখন পর্যন্ত মোট ৩০ জন সুস্থ হয়েছেন।
গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক প্রফেসর ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
প্রফেসর ফ্লোরা বলেন, বর্তমানে সর্বমোট রোগীর সংখ্যা ৭০, এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন মোট আটজন এবং ৩০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এর বাইরে যে ৩২ জন থাকে, তাদের মধ্যে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১২ জন এবং ২০ জন হাসপাতালে রয়েছেন উল্লেখ করেন তিনি।
ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৫৫৩টি। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৩৪টি নমুনা। ১৩৬টি আইইডিসিআরের ল্যাবে এবং বাকিগুলো অন্যান্য ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। শনাক্ত ৯ জনের মধ্যে ৮ জনের পরীক্ষা আইইডিসিআরে এবং একজনের পরীক্ষা ঢাকার বাইরে করা হয়। ইতোমধ্যে আপনারা জানেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রোটোকল অনুযায়ী, রেফারেন্স ল্যাবরেটরি হিসেবে অন্যান্যা ল্যাবেরটরিতে যে নমুনা পরীক্ষা করা হবে, যখন সেখানে পজিটিভ পাওয়া যাবে, সেই নমুনাগুলো আমাদের আইইডিসিআরে এনে রি-কনফার্ম করার একটা বাধ্যবাধকতা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিক থেকে রয়েছে। তাই এই একজনের নমুনা আবার পরীক্ষা করা হবে। কিন্তু আমরা এই একজনকে পজিটিভ ধরে নিয়েই নয়জনকে আমাদের যে কার্যক্রম কন্টাক্ট ট্রেসিং এবং এদেরকে কোয়ারেন্টাইন করা, তাদের যারা কন্টাক্ট আছে, তাদের কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে যাওয়া, সে কাযক্রমগুলো শুরু করেছি। তবে ঢাকার বাইরেরটা আবারও পরীক্ষা করা হবে।
ডা. ফ্লোরা বলেন, নতুন নয় জনের মধ্যে দু’জন শিশু, যাদের বয়স ১০ বছরের নিচে। তিনজনের বয়স ২০-৩০ বছরের মধ্যে, দু’জনের বয়স ৫০-৬০ এর মধ্যে, একজনের বয়স ৬০-৭০ এবং একজনের বয়স ৯০ বছর। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দু’জন মারা গেছেন। যার মধ্যে একজন যারা গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যকার। আরেকজন আগেই শনাক্ত হয়েছিলেন। তাদের এক জনের বয়স ৯০ বছর এবং আরেকজনের বয়স ৬৮ বছর। এদের মধ্যে একজন ঢাকার বাইরে, আরেকজন ঢাকায়। এদের মধ্যে একজনের হৃদরোগ ছিল, আরেকজনের স্ট্রোকের ইতিহাস ছিল।
ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, নতুন আক্রান্ত নয়জনের মধ্যে পাঁচজনের কন্টাক্ট ইতিহাস রয়েছে। এরা ইতোমধ্যে সংক্রমণ হয়েছে এরকম শনাক্তকৃত রোগীর সংস্পর্শে বা পরিবারের সদস্য। দুইজন যারা বিদেশ থেকে এসেছিলেন এ রকম তাদের সংস্পর্শে এসেছেন। আর বাকি দুইজনের ক্ষেত্রে আমরা এখনো তথ্য সংগ্রহ করছি উল্লেখ করেন তিনি।
কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হচ্ছে কি না সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, মাদারীপুরের শিবচরে দেখেছি এক জায়গায় ১০ জন সংক্রমিত হয়েছেন। সেটা কিন্তু একটা ক্লাস্টার। তবে এ রকম বাংলাদেশের অন্য জায়গায় আমরা পাইনি। তিনি বলেন, পরীক্ষার সংখ্যা এখনও খুব বেশি নয়। সে কারণে মোট কতজন আক্রান্ত সে ব্যাপারটি এখনো নিশ্চিত নয়। আমরা পরীক্ষা আরো বাড়িয়ে দেব এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এ বিষয়ে আরো বেঠক করব। আমাদের কি করণীয় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
মহাপরিচালক বলেন, যারা বিদেশ থেকে এসেছেন তাদের মাধ্যমে প্রথমে তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। আমরা দেখেছি যে ওই সদস্যদের সাথেও যারা উঠাবসা করেন তারাও সংক্রমিত হয়েছেন। যেমন- মিরপুরের একটি ঘটনা। সেখানে উনি একসাথে নামাজ পড়তে যেতেন এবং একসাথে হাঁটাহাঁটি করতেন। আক্রান্ত ব্যক্তি কিন্তু তার পরিবারের সদস্য ছিল না তার সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। তার সংস্পর্শে এসে তিনিও আক্রান্ত হয়েছেন। তাই বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে অবশ্যই কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বলা যায়। তবে আমাদের পরীক্ষার ব্যবস্থা কিন্তু এখনো অনেক বেশি নয়। আমরা পরিস্থিতি এখনো বুঝি নাই। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা অবশ্যই বলতে পারি কমিউনিটি ট্রান্সমিশন, তবে এটা সীমিত আকারে।
মহাপরিচালক জানান, আইসোলেশনে নতুন করে পাঠানো হয়েছে ১৮ জনকে। বর্তমানে মোট ১০০ জন আইসোলেশনে রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ২৫৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট ১৬ হাজার ৯১০ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা আরো বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া, পর্যাপ্ত পিপিই এবং ৭১ হাজার কিটের মজুদ আছে। কোভিড-১৯ এর জন্য ১২ হাজার ৭৮৯ জন চিকিৎসককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত করোনার বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে এই ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। অফিস-আদালত থেকে শুরু করে গণপরিবহন সবই বন্ধ রয়েছে। তবে কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতালসহ জরুরিসেবা এই বন্ধের বাইরে রয়েছে। আর, সামাজিক দূরত্ব ও হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে সক্রিয় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।