পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এর চেয়ে বড় বিপর্যয় আর ঘটেনি। মানুষ একরকম স্বেচ্ছা গৃহবন্দি। এ অবস্থাটি কিছুটা স্বস্তিকর হতো যদি মানুষ প্রাণঘাতী ভাইরাসের আতঙ্কে না থাকতো। পাশাপাশি সব মানুষের যদি ঘরে বসে জীবন ধারণের জরুরি প্রস্তুতি থাকতো। উন্নত দেশগুলো যেমন তেমন আমাদের তৃতীয় বিশ্বে এ ধারণা কল্পনা মাত্র। বাংলাদেশে লকডাউন যেন নতুন এক মুক্তিযুদ্ধ। বলা হচ্ছে, ভারতে তের কোটি লোক চাকরি হারাবে। পাকিস্তান বহু ভাবনা চিন্তার পরও ফুল লকডাউনের সাহস পাচ্ছে না। খোদ যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর মিছিল সত্তে¡ও নিউইয়র্কে লকডাউন বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ও স্থানীয় সরকার গভীর টানাপোড়েনে ছিলেন। বাংলাদেশে এমন বিপদের দিনে অপেক্ষাকৃত অভাবী মানুষেরাই প্রতিবেশীর খবর নিচ্ছে। চারপাশের খোঁজ-খবর রাখছে তারাই যারা মাটি ও মানুষের কাছাকাছি থাকে। গত উনপঞ্চাশ বছরের ক্ষমতাসীন বা সাবেক নেতা মন্ত্রী এমপি শিল্পপতি পুঁজিপতি সমাজপতি বিত্তবানরা তেমন কোনো নড়চড়া করছেন বলে মানুষ দেখছে না। অনেককেই শোনা গেছে তারা বিদেশের তুলনায় এখনো দেশ দৃশ্যত নিরাপদ আছে বলে এবং বাইরে যাওয়ার পথ খোলা নেই বলে দেশেই আছেন। তবে হোম কোয়ারেনটাইনের সুবাদে কঠিন গৃহবন্দি আছেন। সরকারি পরীক্ষা-নিরীক্ষার অন্যায় সুযোগ-সুবিধা ঘরে বসে নিচ্ছেন। যে বিষয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে বিরক্তি প্রকাশ করতে হয়েছে। তিনি বলেছেন, যারা ঘরে বসে কিংবা রাস্তা-ঘাটে পিপিই ব্যবহার করে তাদের ধরে ধরে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিন। ডাক্তার ও নার্সদের সাথে থেকে রোগীর সেবা করুক।
মিডিয়ায় অল্প কিছু সাহায্যের সংবাদ আসছে। তবে এসবই চুনো-পুঁটি পর্যায়ের। এখনো রথি-মহারথিদের কাউকে স্বাস্থ্যসুরক্ষা ও সামাজিক দূরত্ব নীতি বজায় রেখেও দুঃস্থদের মাঝে আসতে দেখা যায়নি। ঘরে থাকার এ নিয়ম তারা এত পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পালন করছেন যা দেশের আর কোনো আইনের বেলা তারা করেন বলে মনে হয় না। এক বড় আলেম বলেছেন, মৃত্যুর ভয়ে মানুষ যে পরিমাণ সতর্কতা ও ত্যাগ অবলম্বন করছে যদি তারা জাহান্নামের ভয়ে এর একাংশও করত তাহলে আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দিতেন।
আমরা আশা করি, দেশের সব সামর্থ্যবান এই বিপদের দিনে আরো মানবিক হয়ে উঠবেন। মানবতার এই দুর্যোগলগ্নে তারা তাদের জীবনের সর্বোচ্চ উত্তম ভূমিকা রাখবেন। প্রতিটি নাগরিকের উচিৎ এ চিন্তা রাখা যে আমি খেলে আমার অন্য ভাইটিও খাবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা অসংখ্য মানুষকে এমন দেখছি যারা অসহায় মানুষকে সহায়তা করছেন। কিছু দুর্নীতির সংবাদও আসছে। ১০ টাকা কেজির চাল দেওয়া শুরু হলে এ দুর্নীতি হয়তো আরো বাড়বে। টিসিবির খোলা বাজার নিয়ে কিংবা চেয়ারম্যান মেম্বারের জিম্মায় দেওয়া সাহায্যের বিষয়ে কথা উঠবে। এসব যেন না হয়। মানুষকে সচেতন থাকতে হবে। সংশ্লিষ্টদের মনেও আল্লাহর ভয় ও মানবতার প্রেম জাগ্রত করতে হবে। বিবেককে কাজে লাগাতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ সময়ে আমি যা দিব, তা নিয়ে কেউ বিত্তশালী হওয়ার চেষ্টা করলে আমি কিন্তু সহ্য করব না। আমরা দেশের ৩৫০ এমপি ও মন্ত্রীবর্গ এবং অসংখ্য অগণিত শাসক ও বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতাদের চেহারা সুরত এবং মানুষের প্রতি তাদের দুঃসময়ে করণীয় দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় দেখতে চাই। দূরত্ব ও সতর্কতা বজায় রেখেও প্রচুর নেতা ও বিশিষ্টজন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। সাধারণ মানুষ কল্পনাতীত সেবা ও সাহায্য দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আশা করি, এ সময় দেশের সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে যেটুকু সামর্থ্য আছে আমরা অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসব। বিপদ চির দিন থাকে না। ইনশাআল্লাহ এ দুঃসময়ও থাকবে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, তাদের আমি যে জীবনোপকরণ দিয়েছি তা থেকে তারা ব্যয় করে। (আল কোরআন: বাক্বারাহ-৩)। আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন, তোমরা যাবতীয় কল্যাণ কাজ সম্পাদন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (আল-কোরআন: হজ-৭৭)
হাদীস শরীফে আছে, আল্লাহ তার বান্দার সাহায্যে লেগে থাকেন যতক্ষণ সে তার অপর ভাইয়ের সাহায্যে লেগে থাকে। (সহীহ মুসলিম)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।