পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের প্রভাবে পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো একের পর এক লকডাউন ঘোষণা করছে। বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করছে পোশাকের ব্র্যান্ডগুলো। এ পরিস্থিতিতে ভোক্তা চাহিদায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। কিন্তু বাজার চাহিদার এ পরিস্থিতিতে নতুন ক্রয়াদেশ দিচ্ছে না ক্রেতারা। এরই মধ্যে দেয়া ক্রয়াদেশগুলোর পরিমাণ কমাচ্ছে। চলমান ক্রয়াদেশগুলোর উৎপাদন থেকে বিরত থাকতে বলছে ক্রেতারা। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স এ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) তথ্যমতে, ১ হাজার ৮২ কারখানায় প্রায় ২ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার বা ২৯৫ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় যা ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। এদিকে করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত রফতানি খাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের বিষয়ে কিছু গাইডলাইন দিয়ে নীতিমালা প্রস্তুত করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে বলা হয়েছে। উৎপাদিত পণ্যের অন্তত ৮০ শতাংশ রফতানি হয় এসব প্রতিষ্ঠান এ তহবিল থেকে অর্থ নেওয়ার যোগ্য হবে। পাশাপাশি সংকট চলাকালীন সময় তথা এপ্রিল, মে ও জুন এ তিন মাসের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা এ তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে হবে। এ জন্য শিল্প উদ্যোক্তাদের দুই শতাংশ সুদ পরিশোধ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত মালিক ঋণের এই অর্থ পরিশোধের জন্য দুই বছর সময় পাবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এমন কিছু গাইডলাইন দেয়া হয়েছে। এসব গাইডলাইন দিয়ে গত মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে তহবিল গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও তহবিল থেকে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি মানতে পারছেন না পোশাক রপ্তানিকারকরা। বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে এক ধরনের অনুদানের কথা বলা হয়েছিল। আমরাও ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিলকে বেলআউট বা অনুদান হিসেবে চাই। এটি যদি ঋণ হয় এবং তা যদি ২ শতাংশ সুদসহ ফেরত দিতে হয়, তা হবে খুবই কষ্টকর। তিনি বলেন, আমরা অনুদান চাই, ঋণ নিয়ে পরিশোধ করার সামর্থ্য অনেক কারখানারই নেই। পারভেজ বলেন, শুধু এ তহবিলই নয়, আগামী কোরবানির ঈদ পর্যন্ত পোশাক খাতে খারাপ অবস্থা যাবে। ওই সময় পর্যন্ত শ্রমিকদের বেতনভাতার বাইরে অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বিজিএমইএ ব্যাংক থেকে বিনাসুদে ঋণ পাওয়ার চেষ্টা করছে। সেই সময় সরকারের তহবিলে ২ শতাংশ সুদ আরোপ করা হলে ব্যাংকগুলো তখন আর বিনাসুদে ঋণ দিতে আগ্রহী হবে না। তাতে পোশাক খাত সংকটে পড়বে।
জানা গেছে, করোনার প্রভাবে প্রথমে কাঁচামাল সরবরাহ সঙ্কটে পড়তে হয়েছিল পোশাক খাতকে। চীন নির্ভর কাঁচামালগুলো আসতে পারছিল না। কারণ করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ধীরগতিতে হলেও কাঁচামাল সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও এখন চাহিদা সঙ্কটে পড়েছে দেশের পোশাক খাত। পশ্চিমা দেশগুলোর ক্রেতারা একের পর এক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় ভোক্তা চাহিদা কমে বিক্রি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে একের পর এক ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিতাদেশ দিচ্ছে ক্রেতারা। বিরূপ পরিস্থিতিতে ক্রেতাদের ক্রয়াদেশ বাতিলের তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে বিজিএমইএ। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে, বিজিএমইএর সদস্য ১ হাজার ৮২ কারখানার ২ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার বা ২৯৫ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় যা প্রায় ২৫ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। এসব ক্রয়াদেশের আওতায় ছিল ৯৩ কোটি ২৬ লাখ পিস পোশাক। এসব প্রতিষ্ঠানের আওতায় আছে ২১ লক্ষাধিক শ্রমিক। ক্রয়াদেশ বাতিল-স্থগিত করা ক্রেতাদের মধ্যে প্রাইমার্কের মতো বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানও আছে। আয়ারল্যান্ডভিত্তিক প্রাইমার্কের পাশাপাশি ক্রয়াদেশ বাতিল-স্থগিত করেছে ইউরোপের ছোট-মাঝারি-বড় সব ধরনের ক্রেতাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, করোনার কারণে ক্রেতারা ২ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারের অর্ডার বাতিল করেছেন। তিনি জানান, আগামী এপ্রিল, মে ও জুন মাসের অর্ডারও বাতিল করছেন ক্রেতারা। রুবানা হক বলেন, তবে পরিস্থিতি যাই হোক, পোশাক শ্রমিকেরা সময় মতো মজুরি পাবেন। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, সরকার পোশাক শিল্পের পাশে আছে। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে কেউ সাময়িকভাবে গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ কিংবা শ্রমিক-কর্মচারীদের ছুটি দিতে চাইলে সংশ্লিষ্ট আইনের বিধিবিধান মেনে করতে হবে। তিনি বলেন, কোনো মালিক যদি তার কারখানার শ্রমিকদের ছুটিতে পাঠানো কিংবা সাময়িকভাবে কারখানা বন্ধ রাখতে চান, তাহলে তাকে অবশ্যই সব বিধিবিধান অনুসরণ করতে হবে। বিশেষ করে চলতি মাসের বেতন পরিশোধ করাসহ নিয়মানুযায়ী প্রতি মাসের বেতন পরবর্তী মাসের ৭ কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।