পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার বিস্তার রোধে সতর্ক দেশ। সরকার ঘোষিত টানা ১০ দিন সাধারণ ছুটির পঞ্চম দিনে গতকাল সোমবার দেশজুড়ে জনসমাগম বেড়েই চলেছে। রাজধানী থেকে শুরু করে শহর গ্রামের পাড়া মহল্লায় মানুষজনকে অবাধে বিচরণ করতে দেখা গেছে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের ছিল ঢিলেঢালা ভাব।
করোনা সংক্রমণ রোধে জনমাগম বন্ধ করতে সবাইকে যখন নিজ দায়িত্বে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘরে থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ঠিক তখনই রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায় জনসমাগম বেড়েই চলেছে। নিষেধাজ্ঞার অর্ধেক সময় শেষ না হতেই ঘর ছেড়ে রাস্তায় জনসমাগম দেখা গেছে।
সরেজমিনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, খিলগাঁও, বাসাবো, মুগদা, মান্ডা, মানিকনগর, গোপীবাগ রেলওয়ে বস্তিসহ বেশিকিছু জায়গায় অস্বাভাবিক জনসমাগম দেখা গেছে। বিশ্বজুড়ে করোনা কালোছায়া যখন ঘনীভূত হয়ে আসছে, তখনই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিশেষজ্ঞদের সতর্কবাণী কানেই তুলছেন না এসব এলাকার বাসিন্দারা।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে নাগরিক চলাচলে কিছুটা শিথিলতা ঘোষণার পর গতকাল রাজধানীতে সাধারণ মানুষের বাইরে বের হওয়ার প্রবণতা বেশি লক্ষ করা গেছে। কেউ বের হয়েছেন খাবার কিনতে, কেউবা বাজার করতে; সীমিত পরিসরে কয়েকটি খাবারের দোকানও খোলা রাখতে দেখা গেছে। কাঁচা বাজারগুলো মানুষের ভিড় ছিল অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে রাজধানীর পাড়া মহল্লাতে যুবকদের আড্ডা লেগেই আছে সন্ধ্যার পর। পুরান ঢাকার লালবাগে রাস্তায় শিশুদের ক্রিকেট খেলার দৃশ্যও দেখা গেছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার উপকরণ। সেগুলো কিনতেও মানুষের ভিড় দেকা গেছে।
মান্ডা হায়াদার আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে কাঁচাবাজারে ভিড় ঠেলে বাজার করার কারণ জানতে চাইলে এক গৃহীনি বলেন, এই এলাকায় এর চেয়ে কম মানুষ কেমনে পাইবেন? মানুষ ভয়ে ঘর থেকে বাইর হয় না, তাই কম ভিড়। আর কি করুম, ঘরে থাকলে বাজার সদাই করমু কেমনে? এইডাতো গুলশান বনানী না।
মদিনাবাগ বাজারের এক কোণে সবজি বিক্রি করেন জসিম। এতো ভিড়ের মধ্যে করোনাভাইরাসের ভয় করে না- এমন প্রশ্নে এই বিক্রেতা বলেন, ভাই বেচা বিক্রি না করলে খামু কি? ভয়তো করে। কিন্তু দোকানতো বন্ধ করতে পারি না। মুগদার বাসার টাওয়ার সংলগ্ন মদিনাবাগ বাজারের মতো একই অবস্থা মানকিনগর, খিঁলগাও গোপীবাগের। এসব বাজারে সকাল বিকাল দুই বেলায় ক্রেতার উপচেপড়া ভিড় থাকে। অথচ প্রতিটি বাজারের পাশেই কোনো না কোনো থানা বা পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। শৃঙ্খলা ফেরাতে আইন প্রশাসনের তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় সচেতন মানুষ।
আলী আহাসন নামের এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বলেন, করোনায় রীতিমতো চমকে যাচ্ছি। সাড়ে সাতলাখ মানুষ আক্রান্ত চৌত্রিশ হাজার মানুষ মারা গেছে প্রতিদিন দেড় থেকে দশ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। আমাদের দেশে করোন প্রকট হয়ে উঠলে অন্তত ঢাকাকে রক্ষা করা যাবে না। এমন বিপদেও মুগদা এলাকার মানুষ রাস্তায় ঘোরফেরা করছে, এরা নিজেরা বিপদে যতটা না পড়বে তারচেয়ে বেশি বিপদে ফেলবে আমাদের। মানুষের অবাধে বিচরণে করোনার সামাজিক সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা আছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর সড়কগুলোয় গত কয়েক দিনের তুলনায় পরিবহন বেড়েছে। অনেকেই ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে রাস্তা নামেন। জীবিকার তাগিদে শ্রমজীবী মানুষও রাস্তায় নেমেছে। বেড়েছে অবৈধ ব্যাটারিটচালিত রিকশা, ইজিবাইকের সংখ্যাও। পুলিশের সামনেই সড়ক-মহাসড়কে অবাধে যাত্রী পরিবহন করছে এসব যান। পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, মূল সড়কগুলোয় মানুষের উপস্থিতি না থাকলেও অলিগলিতে বিভিন্ন বাসার নিচে আড্ডা দিচ্ছেন অনেকেই। লালবাগ এলাকার শহীদনগর ৮ নম্বর গলির এক মুদি দোকানের সামনে কয়েকজনকে আড্ডা দিতে দেখে যায়। চকবাজার এলাকার প্রায় সব দোকান বন্ধ থাকলেও সড়কে মানুষের উপস্থিতি তুলনামূলক বেশি দেখা গেছে। বুড়িগঙ্গার পার ঘেঁষে বেড়িবাঁধ এলাকার সড়কে মানুষ কম থাকলেও পাশের মৌলভীবাজার, মিডফোর্ড এলাকার অলিগলিতেও ছিল একই চিত্র। লালবাগ এলাকার জে এন শাহা রোড, শহীদনগরের ৯টি গলি, বালুর মাঠসহ বিভিন্ন স্থানে মানুষের উপস্থিতি ছিল বেশি। লালবাগ থানার ওসি কে এম আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমরা সারাক্ষণ মানুষকে সচেতন করছি। বারবার বলছি বাসায় থাকার জন্য। কিন্তু সবাই বলছে জরুরি প্রয়োজনে বের হয়েছে। মাইকিং করছি, লিখে জানাচ্ছি; কিন্তু মানুষ মানতে চায় না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।