Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অর্থনীতিতে সঙ্কটের আশঙ্কা

করোনার প্রভাব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস এখন এক বাস্তব হুমকি। করোনাভাইরাসের কারণে বাধাগ্রস্ত দেশের রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ। বড় সঙ্কটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। মানবিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি এখনই অর্থনৈতিক ধস এড়ানোর কৌশল ঠিক না করলে বাংলাদেশের জন্য সামনে আরও কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিক অচলাবস্থার ক্ষত দ্রুত সারিয়ে উঠতে এখনই প্রস্তুতি শুরুর তাগিদ দিয়েছেন দেশের ব্যবসায়ী ও ব্যাংকাররা। তাদের মতে, চীনের অভিজ্ঞতা অনুসরণ করে মানবিক বিপর্যয় ঠেকানোর পাশাপাশি অর্থনৈতিক ধস ঠেকানোও জরুরি। আর তা না করতে পারলে করোনা পরবর্তী সময়ে আরও বড় সংকট সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে ইতোমধ্যে ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ডের (আইএমএফ) প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা হুঁশিয়ারি দিযেছেন। তিনি বলেছেন, বিশ্বজুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে মন্দা। যে দিকে অর্থনীতি এগোচ্ছে, তাতে বিশাল আর্থিক সাহায্য ছাড়া উন্নয়নশীল দেশগুলি পুরোপুরি মুখ থুবড়ে পড়বে।

সূত্র মতে, জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি করোনাভাইরাসের প্রকোপ মহামারি আকার ধারণ করলে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীনে। যার প্রভাবে শুধু চীন নয়, থমকে যায় সারা বিশ্বের রপ্তানি ও আমদানি বাণিজ্য। তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও। প্রায় তিন মাস পর করোনা সংক্রমণের কারণে এখন সরাসরি বিপাকে বাংলাদেশ। সংক্রমণ ঠেকাতে সীমিত হয়েছে মানুষের চলাচল। বন্ধ রয়েছে অভ্যন্তরীণ কেনাবেচা, আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য।

বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা বলেন, আমরা চীন থেকে প্রধান যে কাঁচামাল আমদানি করে থাকি তার অনেকগুলোই আসা শুরু হয়ে গেছে। চীনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া শুরু করলেও কঠিন সময় পার করছে বাংলাদেশ। ব্যাংকাররা বলছেন, সারা বিশ্বে করোনার সংক্রমণ বাড়ায় এর মাশুল গুণতে হচ্ছে রপ্তানি বাণিজ্য ও রেমিট্যান্স প্রবাহে। এ অবস্থায় করোনা পরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনীতিকে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়তে হবে।

জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম আজাদ বলেন, দেশের রেমিট্যান্স খাতে বড় ধরনের ধাক্কা আসছে। আমরা যেখানে রপ্তানি করতাম সেখানেও চাহিদা কমে যাচ্ছে, কারণ তারা লকডাউন হয়ে আছে। অনেক দেশ আমদানি আদেশ বাতিল করে দিচ্ছে। আমরা এখানেই বিপদে পড়ে যাচ্ছি। কতটা বিপদ হবে আমরা ঠিক ভেবে পাচ্ছি না। সঙ্কট যেমন আছে তা উত্তরণের উপায়ও আছে। তবে, তার জন্য চাই চীনের মতই আগাম প্রস্তুতি উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা জানান, চীন বলছে লকডাউন থাকাকালীন যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে তা ওভারকাম করতে যদি দুই বা তিন শিফটে কাজ করতে হয় বা ২৪ ঘন্টাও কাজ করতে হয় তারা তাই করবে। তারা সম্মিলিতভাবে এই ঘাটতি পুষিয়ে নিয়ে কাজ করছে। তাই এত দ্রুত চায়না এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছে। যখন করোনাভাইরাসের প্রভাব থাকবে না তখন আমাদেরও একটা সম্মিলিত প্রয়াস দরকার। তবে, তার পরিকল্পনা আগে থেকেই হতে হবে।

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, করোনাভাইরাস একটা বৈশ্বিক মহামারির নাম। এটা যখন চীনে শুরু হলো, তখন ভাবা হয়েছিল যে আমাদের সরবরাহ ব্যবস্থায় (সাপ্লাই চেইন) একটা বিঘ্ন ঘটবে। এর ফলে আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদার জন্য উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে, রপ্তানি পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। কারণ, অনেক উপাদান আমাদের চীন থেকে আমদানি করতে হয়। এ রকম সাময়িক বিঘ্ন আশঙ্কা করা হয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে চীনে করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে যাচ্ছে, সেখানে কিছু কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে চীন থেকে সরবরাহ চেইনে বিঘ্নটা হয়তো খুব দীর্ঘায়িত হবে না। কিন্তু এখন তো তার চেয়েও বড় সমস্যা করোনা ইউরোপ এবং আমেরিকায় মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের দুটো বড় বাজার ইউরোপ এবং আমেরিকা। ইতোমধ্যে বিশ্বের সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। তাই বিশ্ব অর্থনীতি একটা বড় মন্দার মুখে পড়তে যাচ্ছে। আর এর প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবশ্যই পড়বে। তবে এ থেকে উত্তোরনে এখনই কৌশল নির্ধারণ করতে হবে বলে উল্লেখ করেন ড. জাহিদ হোসেন।#



 

Show all comments
  • Abu Talukder ৩০ মার্চ, ২০২০, ১২:৫৫ এএম says : 0
    ক্ষুদ্রব্যাবসাহী যাবে কোথায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Ashis C ৩০ মার্চ, ২০২০, ১২:৫৬ এএম says : 0
    আমার কথা টা হচছে মধ্য ভিত্য মানুষ জাদের লোন আছে তাদের তিন মাশের কিস্তি মুকুব করা হোগ
    Total Reply(0) Reply
  • Anil Paul ৩০ মার্চ, ২০২০, ১২:৫৬ এএম says : 0
    সেই সব লোকেদের কি হবে য়ারা সিনিয়র সিটিজেন পেনশন পায় না সামান্য কিছু টাকা পোস্ট অফিস ব্যাংকে রেখে সুদের পয়সায় জীবনযাপন করে । তাদের কি সরকার সুদের হার তিন মাসে ডবল করে দেবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Papai Mallick ৩০ মার্চ, ২০২০, ১২:৫৭ এএম says : 0
    আচ্ছা ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছে আমার এই প্রশ্ন যে ব্যাংকের কাজ কবে থেকে শুরু হবে এবং সঠিক হবে এবং যাবতীয় কার্যকলাপ এর সঙ্গে loan approval এইসব কবে থেকে শুরু হবে ? একটু বলবেন plsssss
    Total Reply(0) Reply
  • Mahmud Hussain ৩০ মার্চ, ২০২০, ১২:৫৯ এএম says : 0
    ব্যক্তির আর্থিক সঙ্কট পারিবারিক সঙ্কট রাষ্ট্রীয় সঙ্কট বৈশ্বিক সঙ্কট সবই সত্য --- কিন্তু সেটা সারাক্ষণ তুলে ধরার সঙ্কট আর যাই হোক সঙ্কট মুক্ত করে না --- করবে না ---- শুধুই আতঙ্ক ছড়ায় --- সমাজকে এলোমেলো করে --- ভুল পথেও চালিত করে --
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ