পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তখন দুপুর ১২টা বাজে। চৈত্রের খরতাপ, ফেনী শহরের ট্রাংক রোড এলাকায় জনসমাগম তেমন নেই। একপাশে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের জটলা। সড়কে দাঁড়িয়ে করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতামূলক কাজ করছিলেন সেনা সদস্যরা। শহরের ট্রাংক রোডের খেঁজুর চত্বর থেকে দোয়েল চত্বর এলাকা দিয়ে রিকশা চালিয়ে আসছিলেন বয়স ৮০ ছুইঁ ছুইঁ এক রিকশাচালক। সেনা সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে ভয়ে তিনি যেন থমকে দাঁড়িয়ে যেতে চাইলেন। দোয়েলের ভাস্কর্যটির নিচে দাঁড়িয়ে কুমিল্লা সেনানিবাস ২৮ মিডিয়াম রেজিমেন্ট আর্টিলারি অধিনায়ক লে. কর্নেল আসিফ আজমিন রিকশাচালককে ডাকলেন, এরপর নিজেই কাছে গেলেন। গিয়ে ‘বললেন, ‘বাবা-জানেনতো দেশে করোনার সংক্রমণের বিস্তার নিয়ে সবাই শঙ্কিত, মাস্ক ছাড়া কেন বের হয়েছেন। জবাবে রিকশাচালক বললেন, বাবা পেটে ভাত নাই খামু (খাব) কি? পেটের দায়ে বের হয়েছি। আসিফ আজমিন রিকশাচালককে একটি মাস্ক এবং একটি স্যাভলন সাবান দিলেন, আর বললেন, বাবা- মাস্কটা মুখে লাগাবেন, আর সাবান দিয়ে হাত ধোবেন।
সেনাবাহিনীর এমন নম্র আচরন দেখে বৃদ্ধ রিকশাচালকটি মুগ্ধ হয়ে যায়। মুগ্ধ হয়ে যায় সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকরাও। দেশে করোনা পরিস্থিতি বিস্তার রোধে গত কয়েকদিন মাঠে কাজ করছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা হরহামেশাই দেখছি সেনাবাহিনীর কাজের চিত্র। রাজধানীসহ সারাদেশে মাঠ প্রশাসনকে সাথে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান, সরকার ঘোষিত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটিতে হোম কোয়ারেন্টিন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য আমরা সেনা টহল পরিচালনা করেছি। এ সিদ্ধান্ত মানতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করছি, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। পাশাপাশি হতদরিদ্র মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষকে মাস্ক বিতরণ করেছি, হাত ধোয়ার জন্য সাবান দিয়েছি। একইসঙ্গে রাস্তায় ও যানবাহনে জীবাণুনাশক ছিটিয়েছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে হোম কোয়ারেন্টিইনে রাখা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং মানুষকে সতর্কভাবে চলতে উদ্বুদ্ধ করা।
বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা জানান, বাগেরহাটে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টহল দিয়েছে সেনাবাহিনী। এছাড়াও সেনা সদস্যরা মাইকিং করেছে। সেনাবাহিনীর সদস্যদের দেখে লোকজন দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। রিকশা ও অটো চালকদের যাত্রী নামিয়ে দ্রুত কেটে পড়তে দেখা যায়।
ফেনী জেলা সংবাদদাতা জানান, সেনাবাহিনীর ১০টি টহল টিম দিনরাত জনগনের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে। তারা গতকাল দুপুরে ফেনী শহরে জীবানুনাশক স্প্রে ছিটানো সহ মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও লিফলেট বিতরন করেন। ফেনীতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কুমিল্লা সেনানিবাস ২৮ মিডিয়াম রেজিমেন্ট আর্টিলারি অধিনায়ক লে. কর্নেল আসিফ আজমিন বলেন, জনগনকে সচেতন করতে মাইকিং করা হচ্ছে। হতদরিদ্র ও দিনমজুরদের মাস্ক ও গ্লাভস বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা বিভিন্ন হাট-বাজারে নেমেছে সেনাবাহিনী। গতকাল দুপুরে কালকিনি উপজেলার ভূরঘাটা বাসস্ট্যান্ড এলাকা, গোপালপুর হাটসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টিন আসিফের নেতৃত্বে একটি দল মাইকিং করে জনগনকে সচেতন করতে দেখা গেছে।
গোদাগাড়ী উপজেলা সংবাদদাতা জানান, পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী এ সচেতনতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এরই ধারবাহিকতায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার জনগণকে সচেতনা করতে মাঠ পর্যায়ে কাজে নেমে পড়েছে সেনাবাহিনী। সকালে সেনাবাহিনীর একটি দল গোদাগাড়ীর দায়িত্বে থাকা ওয়ারেন্ট অফিসার শামসুল হকের নেতৃত্বে একটি দল উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল ইসলাম সরকারের সাথে দেখা করে তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন।
শিবচর (মাদারীপুর) সংবাদদাতা জানান, দুপুর থেকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন এড়াতে শিবচরেও মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।