পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকার বাইরে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) রয়েছে ১৪টি। এর মধ্যে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ১০টি। পাবনা জেলা সদর হাসপাতালে ৪টি। কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নোয়াখালী, পটুয়াখালী, জামালপুর, রাঙামাটি, নেত্রকোনা, নওগাঁ, মাগুরা, চাঁদপুর এবং হবিগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ-সিসিইউ বেড স্থাপনের কাজ এখনো প্রক্রিয়াধীন। গতবছর ২৯ জুলাই হাইকোর্টে এ তথ্য দাখিল করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। নানা অজুহাতে কালক্ষেপণের গেড়াটোপে আটকে রাখা হয়েছে ৬৪ জেলার সরকারি হাসপাতালে ৩০ বেডের আইসিইউ-সিসিইউ স্থাপন প্রকল্প। করোনা-প্রকোপে দেশে আইসিইউ-সিসিইউ সংকট দেখা দিলেও হাইকোর্টের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে আইসিইউ-সিসিইউ স্থাপনে তেমন কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি স্বাস্থ্য অধিদফতর। বরং নানা অজুহাতে কালক্ষেপনে কাটিয়ে দিয়েছে একবছর। আইসিইউ-সিসিইউ স্থাপনের ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে হাইকোর্টের কাছে একাধিকার ক্ষমাও প্রার্থনা করেছেন প্রতিষ্ঠান প্রধান। ফলে করোনা প্রকোপের এই ক্রান্তিকালেও নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারছেনা স্বাস্থ্য অধিদফতর। আদালত সূত্র জানায়, ‘হিউম্যান রাইটস ল’ ইয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশ’ একটি রিট করে। রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ড. বশির আহমেদ। সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল নুর উস সাদিক। রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে গতবছর ২৮ আগস্ট বিচারপতি জেবিএম হাসান এবং বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের ডিভিশন বেঞ্চ সকল জেলায় সরকারি হাসপাতালে ৩০ বেডের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) এবং করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) স্থাপনের নির্দেশ দেন। নির্দেশের পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়নে কত জনবল, অর্থ প্রয়োজন-সেবিষয়ে প্রজেক্ট প্রোফাইল তৈরি করে গতবছর ২৩ অক্টোবরের মধ্যে আদালতকে জানাতে নির্দেশ দেন। কিন্তু হাইকোর্টের এ নির্দেশ যথাযথ প্রতিপালন করেনি স্বাস্থ্য অধিদফতর। বরং দাখিল করে একটি অসঙ্গতিপূর্ণ অসম্পূর্ণ প্রতিবেদন। জেলা সদরের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ৩০ বেডের ওঈট / ঈঈট স্থাপনে বিলম্ব করার দায়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং পরিচালক (হাসপাতাল) তলব করেন আদালত। চলতিবছর ৮ জানুয়ারি তারা সশরীরে হাজির হয়ে হাইকোর্টের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আদালত পরবর্তী নির্দেশনা হিসেবে ১২ ফেব্রæয়ারি প্রজেক্ট প্রোফাইল দাখিলের তারিখ ধার্য করেন। কিন্তু ওইদিনও ত্রæটিপূর্ণ প্রকল্প প্রোফাইল দাখিল করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আদালত ৬৪টি জেলার সরকারি হাসপাতালে ৩০ বেডের আইসিইউ-সিসিইউ স্থাপনের প্রকল্প প্রণয়ন করতে বললেও স্বাস্থ্য অধিদফতর কেবল ৩০টি জেলার প্রজেক্ট প্রোফাইল দাখিল করে। এভাবে বার বার কালক্ষেপণ করায় আদালত স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আদালত বলেন, একজন আইনজীবী (ড. বশির আহমেদ) বিনা স্বার্র্থে বিনা ফি’তে দিনের পর দিন মামলা চালাচ্ছেন। অথচ আপনারা (স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা) কেবল কালক্ষেপণ করছেন! পরবর্তীতে হাইকোর্ট দেশের ৬৪টি জেলা সরকারি হাসপাতালে ৩০ বেডের আইসিইউ-সিসিইউ স্থাপনের প্রকল্প প্রণয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। আগামি ৫ এপ্রিল আদালতে প্রজেক্ট প্রোফাইল সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বারের আইনজীবী ড. বশির আহমেদ গতকাল বৃহস্পতিবার ‘ইনকিলাব’কে বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে সরকারি কর্মকর্তাগণ মনে করেন দেশ তাদের মন মতো চলবে। রোগী মারা যাবে। অন্যরা তাদের কথা শুনে চুপ করে থাকবে। কিন্তু ১৯৮২ সালের মেডিক্যাল প্রাকটিস এবং প্রাইভেট ক্লিনিক এবং ল্যাবরেটরিস অর্ডিন্যান্স ধারা ১৪ এবং ১৬ গত ৩৬ বছরের পুরোনো চিকিৎসা ব্যায় সিডিউল রিভাইজ করার বিধান থাকলেও অদ্যবধি সেটি করা হয়নি। ফলে কিছু মাফিয়া হাসপাতাল ব্যবসায়ী মুমূর্ষু মৃত্যু যন্ত্রণাকে পুঁজি করে মনোপলি ব্যবসা করছে। করোনা প্রকোপের আজকের রূঢ় বাস্তবতাকে ঘিরেও এই মাফিয়া অমানবিক ব্যবসা করতে তৎপর। স্বাস্থ্য অধিদফতর হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে যথারীতি ব্যবস্থা গ্রহণ করলে হয়তো করোনা প্রকোপ মোকাবেলায় আমাদের এই কঠিন দুঃসময় সামনে আসতো না। বশির আহমেদ আরও বলেন, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে রোগী মারা যাওয়ার পরে লাশ জিম্মি করে রাখে। এমনকি রোগী মারা গেলেও টাকা আদায়ের জন্য আদালতে মামলা করার নজির স্থাপন করেছি। বর্তমানে চীনের ভাষ্য মতে করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর শেষ চিকিৎসা হচ্ছে আইসিইউ-সিসিইউতে। আর আমাদের দেশের করোনার মহা ছোবলের মুখে উদ্বিগ্ন জাতিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক টিভিতে ছবক দিয়ে যাচ্ছেন। এর চেয়ে বড় প্রহসন আর কি হতে পারে ?
প্রসঙ্গত: হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে স্বাস্থ্য অধিদফতর সারাদেশের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) এবং করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)র একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। তাতে উল্লেখ করা হয়, দেশের ৪৭টি জেলা সদর হাসপাতালে ৩০ বেডের আইসিইউ-সিসিইউ স্থাপনের কাজ চলছে। ১৭টি হাসপাতালে আইসিইউ-সিসিইউ স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন। প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে আইসিইউ ও সিসিইউ স্থাপনের মত জায়গা আছে কিনা এবং প্রয়োজনীয় জনবল আছে কিনা সেই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তার ভিত্তিতে স্থান সংকুলান এবং জনবলের সঙ্কট থাকাতে প্রয়োজনীয় জায়গা তৈরি ও জনবল পদায়নের উদ্যেগ নেয়া হচ্ছে। প্রয়োজন এবং অপ্রাধিকার মূল্যায়ন করে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহের পদক্ষেপ নেয়া হবে। যেসব জেলা সদর হাসপাতালে আইসিইউ-সিসিইউ’র কার্যক্রম চালু রয়েছে গতবছর ২৯ জুলাই তারও একটি তালিকা দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। সেই অনুযায়ী, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ ও ৩০টি সিসিইউ বেড রয়েছে। নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে আইসিইউ বেড না থাকলেও সিসিইউ বেড আছে ২টি। কুষ্টিয়ায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ বেড নেই, ১৫টি সিসিইউ বেড আছে। পাবনা জেলা সদর হাসপতালে ৪টি আইসিইউ ও ৮টি সিসিইউ বেড আছে। ভোলা সদর হাসপাতালে সিসিইউ বেড আছে ৪টি। এছাড়া কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নোয়াখালী, পটুয়াখালী, জামালপুর, রাঙামাটি, নেত্রকোনা, নওগাঁ, মাগুরা, চাঁদপুর এবং হবিগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ-সিসিইউ বেড স্থাপনের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।