পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ঢাকা-চট্টগ্রামের কাঁচাবাজার
কমেছে পেঁয়াজ, ডিম-মুরগির দাম
ইনকিলাব ডেস্ক : চলতি সপ্তাহে পেঁয়াজ, আলু, ডিম, মুরগিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম কমেছে। করোনাভাইরাস আতঙ্কে গত সপ্তাহে পেঁয়াজসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম ছিল। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, খিলগাঁও, মালিবাগ ও রমপুরা এলাকার বিভিন্ন বাজার সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
বাজার ও মানভেদে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭৫-৮০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমে অর্ধেকে নেমেছে। পেঁয়াজের পাশাপাশি দাম কমেছে দেশি রসুনের। তবে আদা ও আমদানি করা রসুনের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা কেজি। আমদানি করা রসুন আগের মতো ১৭০-১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদা বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা কেজি। পেঁয়াজের দাম কমার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী রুবেল বলেন, করোনা আতঙ্কে গত সপ্তাহে মানুষ অনেক বেশি বেশি পেঁয়াজ কেনে। এতে দাম বেড়ে যায়। তবে ভোক্তা অধিদফতর ও র্যাবের অভিযানের পর পেঁয়াজের দাম কমতে থাকে। এখন দাম কমে গেলেও আগের মতো ক্রেতা নেই।
পেঁয়াজের পাশাপাশি দাম কমেছে গোল আলুর। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, মানভেদে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮-২০ টাকা। গত সপ্তাহে যা ছিল ২৫-২৮ টাকা। রামপুরার ব্যবসায়ী মিলন বলেন, করোনা আতঙ্কে পেঁয়াজের মতো আলু কিনেও অনেকে মজুদ করেছে। গত সপ্তাহে আলু কেনার এক ধরনের হিড়িক পড়ে যায়। যে কারণে ১৮ টাকার আলুর দাম ২৫ টাকা ওঠে। তবে এখন কেনার পরিমাণ কমায় দামও কমেছে। সামনে হয় আলুর দাম আরও কমতে পারে।
এদিকে করোনা আতঙ্ককে পুঁজি করে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী পেঁয়াজ ও আলুর পাশাপাশি ডিম ও মুরগির দাম বড়িয়ে দিয়েছিল। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিম ও মুরগি উভয়ের দাম কমেছে। বাজারে ফার্মের মুরগির লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০ টাকা। আর সাদা ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১১০ টাকা। বয়লার মুরগি বাজার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০-১৩৫ টাকা।
এদিকে বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম স্থির রয়েছে। বাজারে এখন সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে নতুন আসা সজনের ডাটা। এই সবজিটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা। করলা আগের সপ্তাহের মতো ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারের লাউ আগের মত বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা পিস। বরবটির কেজি ৪০-৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০-৭০ টাকা।
এছাড়া শসা ২০-৩০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, পাকা টমেটো ২০-৪০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, ফুলকপি-বাঁধাকপি পিস ৩০-৩৫ টাকা, গাজর ২০-৩০ টাকা, শালগম ২৫-৩০ টাকা, মুলা ১৫-২০ টাকা, বেগুন ৩০-৪০ টাকা, পটল ৪০-৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর কাঁচা মরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) আগের মতোই ১৫-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, করোনা আতঙ্কে গত সপ্তাহে অনেকেই বেশি করে পেঁয়াজ, আলু, মাছ, গোশত কিনে রেখেছেন। আমার পাশের বাসায় যারা থাকেন তারও বেশি বেশি কিনে রেখেছেন। কিন্তু আমি কোনো কিছুই মজুদ করিনি। এখন বাজারে প্রায় সবকিছুর দাম স্বাভাবিক আছে। এটা দেখে স্বস্তি পাচ্ছি। তবে নতুন করে যাতে কোনো কিছুর দাম না বাড়ে সে জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
দরে অসঙ্গতি
চট্টগ্রাম ব্যুরো : অঘোষিত লকডাউনের মধ্যে চট্টগ্রামে বাজার দরে চলছে অসঙ্গতি। করোনাভাইরাস আতঙ্কে গত সপ্তাহে ভোগ্যপণ্য মজুদের হিড়িক পড়ায় বাজারে সবকিছুর দাম বেড়ে গেলেও এখন তা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। শাক-সবজিসহ কিছু পণ্যের দাম কমেছে। আবার কিছু কিছু পণ্য আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে কাঁচা বাজারগুলো এখন প্রায় ফাঁকা। বাজারে শাক-সবজিসহ ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ ও যোগান স্বাভাবিক থাকলেও ক্রেতা কম। ফলে বাজারে দর পতনের আশা করছেন ক্রেতারা। গতকাল শুক্রবার বাজার ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতা হাতে গোনা। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাসা-বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। রাস্তায় নেমে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কায় অনেকে ঘর থেকে বের হননি। নগরীর বিভিন্ন অলিগলিতে রিকশা ভ্যান আর ঠেলা গাড়িতে ফেরি করে শাক-সবজি বিক্রি করতে দেখা যায়। সেখান থেকেই অনেকে কেনাকাটা সেরেছেন। সবজি বিক্রেতাদের হাতে গ্লাভস আর মুখে মাস্ক পরতে দেখা যায়।
বাজারে পেঁয়াজ, আদা, রসুনের দাম কমতে শুরু করেছে। শাক-সবজির দামও পড়তি। তবে মাছ এবং গোশতের দাম আগের মতো চড়া। প্রতিকেজি পটল ৫০ টাকা, মূলা ২০ টাকা, লাউ ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা, টমেটো ১৫-২০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, বেগুন ৩০-৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের দামও গত সপ্তাহের মতো চড়া। রুই ২৫০-২৮০ টাকা, কাতাল ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০-১৪০ টাকা, পাবদা ৪৫০-৫০০ টাকা, ছোট ইলিশ ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৫০০-৬৫০ টাকা, শিং ৪০০-৫০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা, পোয়া ৩৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুরগির দাম কমেছে ফার্মের মুরগি ১১০ টাকা, সোনালিকা ২২০-২৩০ টাকা, দেশি মুরগি ৩৫০-৪০০ টাকা, গরুর গোশত হাড়সহ ৬৫০ টাকা, হাড়ছাড়া ৭০০ টাকা, খাসির গোশত বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকা, আদা ১২০-১৪০ টাকা, রসুন ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম আগের মতো চড়া, প্রতিডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।