পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যানজট নেই। একেবারে ফাঁকা রাস্তা। শা শা করে ছোটে চলে গাড়ি। নগরীর এমন রূপ কেবলমাত্র দুই ঈদে উপভোগ করেন ঢাকাবাসী। তবে এবার তার চেয়েও ফাঁকা, একেবারে সুনসান নীরব-নিস্তব্ধ ঢাকা। এই নীরবতা রাজধানীবাসীর এক যুদ্ধের নাম। এই যুদ্ধ বেঁচে থাকার যুদ্ধ।
যে শত্রচর আক্রমণে আজ নাস্তানাবুদ গোটা বিশ্ব। অচেনা সেই নতুন শত্রচর নাম করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। নীরব ঘাতক এই শত্রচর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হবার প্রধান অস্ত্র ঘরে অবস্থান। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ।
রাজধানীবাসীসহ গোটা দেশবাসীর ঘরে অবস্থান নিশ্চিত করতে গতকাল থেকে টানা ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গতকাল থেকে ঢাকার রাস্তায় চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ। তাদের সহায়তা করছে সেনাবাহিনী। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ রাস্তায় বের হচ্ছে না। বের হলেই পড়তে হচ্ছে পুলিশের জেরার মুখে। তবে এই কড়াকড়ির আওতামুক্ত রয়েছে জরুরি সেবা।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। লোকজন যাতে রাস্তায় বের না হতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে বলেছেন তিনি। আর গতকাল থেকেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে কাজ শুরু করেছে সশস্ত্র বাহিনী।
প্রায় দুই কোটি লোকের ব্যস্তনগরী তার যানজটের চেনারূপ হারিয়ে এ নীরব-নিস্তব্ধ শহরে পরিণত হয়েছে। সড়কে যানবাহন নেই, মোড়ে-মোড়ে নেই ভিড়, নেই কোনো জটলা। খালি সড়কে পথ চলতে গিয়ে মাঝে মাঝে দেখা মেলে রিকশার। মাঝে মাঝে দুয়েকটি প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেলও খালি সড়কে শা শা করে ছুটে যেতে দেখা যায়। চিরচেনা যানজট, কোলাহলও নেই। গাড়ির শব্দ নেই, হুইসেল নেই, মানুষের হাঁকডাক কিছুই নেই। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকারের ঘোষিত ১০ দিনের সাধারণ ছুটির প্রথম দিনে এমনই জনমানব শূন্য নিস্তব্ধ দেখা গেছে রাজধানী ঢাকাকে।
প্রায় দুই কোটি লোকের ব্যস্ততম এই শহর অনেকেই ছেড়ে চলে গেছেন গ্রামে। আর যারা আছেন তারা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি হয়ে আছেন। কেউ কেউ জীবিকার তাগিদে বের হলেও তাদের সংখ্যা খুবই কম। নিস্তব্ধ শহরের মূল সড়কগুলোতে পুলিশ-সেনাবাহিনীর টহল চলছে। কোথাও কোথাও অলিগলিতে পুলিশ ঢুকে সবাইকে ঘরে থাকার জন্য নির্দেশ দিচ্ছেন।
গতকাল সকাল ১০টার দিকে নগরীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি এলাকায় রাস্তার পাশে ফুটপাথে এক চায়ের দোকান খুলে বসেন এক দোকানী। কিছুক্ষণ পরই পুলিশ এসে তা বন্ধ করে দেয় এবং সবাই ঘরে থাকার জন্য বলে যায়। এ নির্দেশ অমান্য করলে পরবর্তীতে শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলেও জানিয়ে যায়।
রাজধানীর সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা মতিঝিল, পল্টন, ফার্মগেট, মৌচাক এসব এলাকার রাস্তা ছিল একেবারেই ফাঁকা। এসব রাস্তায় মাঝে মাঝে রিকশা এবং দু’একটি প্রাইভেট কার চলতে দেখা গেছে। খিলগাঁও রেল গেইট বাজার এবং শান্তিনগর কাঁচা বাজারে বেশ কিছু দোকান খোলা থাকলেও তাতে ক্রেতা খুব একটা ছিল না।
দুপুর ১২টায় রাজধানীর পল্টন এলাকা ছিল কার্যত ফাঁকা। পল্টন মোড়ে রিকশার ওপর পা ছড়িয়ে বসে বিড়ি টানছিলেন রিকশা চালক জামাল। তিনি বলেন, ফজরের নামাজ পড়ে বের হয়েছি। এখন বাজে ১২টার বেশি। মাত্র দেড়শ’ টাকার মতো ভাড়া মারছি। অন্যদিন এ সময়ে ছয় সাতশ’ টাকা হয়। আজকে তো খাওয়ার টাকা, জমার টাকাই আইবো না। তার মতো এমন শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে হঠাৎ আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তাটাই বেশি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।