পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের ৬১টি জেলায় কাজ করছে সেনাবাহিনী। মানুষকে অযথা রাস্তায় ঘুরাফেরা না করে বাসায় অবস্থান করাসহ নানা ধরনের সচেতনামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে তারা। এছাড়া পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। তাদের এমন তৎপরতা এবং করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রাজধানীর বাসিন্দরা বাসায় সময় পাড় করেন। অতি জরুরি কাজ ছাড়া কেউ বাসা থেকে বের হননি। তাই চিরচেনা ব্যস্ত শহররে নেমে আসে সুনশান নিরবতা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা যায়।
জানা যায়, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম ওই ভাইরাস শনাক্তা করা হয়। এরপর থেকে সরকার নড়েচড়ে বসেন। এছাড়া সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। তবে ওই ভাইরাস মোবাকেলায় সরকারি ও বেসরাকারিভাবে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্কুল-কলেজ বন্ধের পাশাপাশি বন্ধ দেয়া হয় অফিস আদালতও। এমনকি সব ধরনের সভা-সমাবেশও করা হয় নিষিদ্ধ। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন বন্ধ রাখার জন্য আদেশ দেয়া হয়। তাই রাজধানী ঢাকাকে ফাঁকা করে গ্রামে চলে গেছেন অনেকই। আর যানা ঢাকায় আছেন তারাও সরকারের আদেশ মেনে বাসায় অবস্থান করছেন।
গতকাল রাজধানীর কাওরান বাজার, পান্থপথ, ফার্মগেট, বাংলামটর, শাহবাগ, কাকরাইল, পল্টন, মতিঝিল, পশ্চিম তেজতুরি বাজার, পূর্ব তেজতুরি বাজার, আরামবাগ, মালিবাগ, মানিকনগর, ফকিরাপুল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ওইসব এলাকার সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। মানুষের আনাগুনাও নেই। এমনটি ওইসব এলাকার অলিগলির দোকানগুলোও রয়েছে বন্ধ। রাস্তা ঘটেও দুই একটি রিকশা, গণমাধ্যম ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি ছাড়া আর কোনো গাড়ি চলাচল করতে দেখা যায়নি।
গতকাল দুপুর ১২টায় পশ্চিম তেজতুরী বাজার এলাকার গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশে একজন নিরাপত্তা কর্মী বসে আছেন। এসময় তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আজ (গতকাল) সকাল থেকে আমি ডিউটি করছি। তবে বাসার লোকজন কেউ বের হচ্ছেন না। এছাড়াও সকালে এলাকায় পুলিশ ও সেনা সদস্যরা টহল দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
মতিঝিল শাপলা চত্বর মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা আবুল হোসেন নামের এক রিকশা চালক দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, তিনি গতকাল সকাল থেকে রিকশা নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরেন। কিন্তু বিকেল তিনটা পর্যন্ত মাত্র একজন মাত্র যাত্রী পেয়েছেন। এছাড়াও নগরীর প্রতিটি এলাকা সুনসান নিরব বলেও জানা তিনি।
এদিকে, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকাসহ ৬১টি জেলায় সেনাবাহিনী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। গতকাল আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতররের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের বর্তমানে বাংলাদেশের সংক্রমণ এবং বিস্তৃতির ঝুঁকি বিবেচনায় গত বুধবার থেকে সেনাবাহিনী কাজ করছে। এ ধারাবাহিকতায় গতকাল সেনাবাহিনীর ২৯০ টি দল দেশের ৬১ টি জেলায় করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে একযোগে কাজ করেছে। বাহিরে কোন ক্যাম্প স্থাপন না করে স্থানীয় সেনানিবাস সমূহ থেকেই এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে সেনাবাহিনীর আড়াই হাজারের বেশি সেনাসদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর সমন্বয়ে সেনাবাহিনী বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাধারণ জনগণকে উৎসাহিত করে। পাশাপাশি বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের বাধ্যতামূলক কোয়ারান্টিনের বিষয়টিও পর্যবেক্ষণ করা হয়।
এদিকে, গতকাল রাজধানীতে সেনাবাহিনী সদস্যরা টহলের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করতেও দেখা গেছে। এ সময় তারা বলছেন, ‘বিদেশ থেকে এসেছি যারা, তারা নিজ ঘরে অবস্থান করুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন জীবন-যাপন করুন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারে সহযোগিতা করুন।’ শুধু তাই নয়, তাদের টহলগাড়িগুলোতে লেখা আছে, ‘অপ্রয়োজনে কেউ নিজ ঘরের বাহিরে যাবেন না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবন যাপন করুন, বিদেশ ফেরত সকলে নিজ ঘরে অবস্থান করুন।’ এছাড়াও সচেতনতা সুষ্টিতে পায়ে হেঁটে প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানুষের ঘরে ঘরে ছুটে যাচ্ছে তারা। প্ল্যাকার্ড নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করছে সেনাবাহিনী। সেখানে কারো হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘ঘনঘন হাত ধুই, করোনা থেকে নিরাপদ রই’, ‘বিদেশ থেকে এসেছি যারা, কোয়ারেন্টাইনে থাকব তারা’। এছাড়া করোনা নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি না করার আহŸান জানিয়ে প্ল্যাকার্ডে লেখা আছে, ‘আতঙ্ক না ছড়াই, সতর্ক থাকি সাহায্য করি’।
শুধু তাই নয়, রাজধানীর অলিতে-গলিতে দুই জন এক সাথে হাঁটা চলা করলেও তাদের আলাদা করে দিচ্ছে এবং বাসায় পাঠিয়ে দিচ্ছে। আর কেন বাসা থেকে বের হয়েছে সেই কারণও জিজ্ঞাসা করা হয়। কাওরান বাজারের বাসিন্দা রমজান আলী জানান, তাদের এলাকায় দুই ব্যক্তি এক সাথে জরুরি কাজে রাস্তায় বের হন। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে রাস্তায় হাঁটার পরমর্শ দেন। এমন পরামর্শে স্থানীরাও খুশি বলে জানান তিনি।
যশোর ব্যুরো জানায়, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে যশোরে সেনাবাহিনী, সিভিল প্রশাসন ও পুলিষ প্রশাসনের ব্যাপক তৎপরতা চলছে। সকাল থেকে যশোর শহর, কেশবপুর, মণিরামপুর ও চৌগাছাসহ সবখানে রয়েছে ফাঁকা। দোকাটপাট বন্ধ. যাসবাহন চলচাল বন্ধ থাকায় চারিদিকে সুনশান নীরবতা রয়েছে। কোন কোন স্থানে একটু লোকসমাগম হলেই প্রশাসন সেখানে ছুটে গিয়ে মানুষকে ঘরে ঢোকানোর চেষ্টা করছে। শহর গ্রামে যারা চলাচল করছেন তারা মাস্ক পের। সে এক ভিন্ন দৃশ্য। চিরচেনা শহরকে অচেনা মনে হচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রামক প্রতিরোধে সরকারের আদেশ না মানায় যশোরের মণিরামপুরে দুই ব্যবসায়ীকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফী আদালত পরিচালনা করেন।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, করোনা সতর্কতায় চলছে সরকার ঘোষিত ছুটি। প্রথমদিনে জনশূন্য হয়ে পড়েছে রাজশাহীর পথঘাট। সকাল থেকে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে মাইকিংও করছেন সেনাসদস্যরা। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট, নিউমার্কেট, শিরোইল বাসস্ট্যান্ড, শহীদ কামারুজ্জামান চত্ত¡র, বর্ণালী মোড়, ল²ীপুর মোড়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘুরে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি একেবারেই কম দেখা যায়। গণপরিবহন বন্ধ। সিটি কর্পোরেশন এর তরফ থেকে নগরীর রাস্তায় জীবানুনাশক তরল গাড়ির মাধ্যমে ছিটানো হচ্ছে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়ে টহল দেয় সেনাবাহিনীর কয়েকটি গাড়ি। এসময় জনসচেতনতা তৈরি মাইকিং করেন তারা। বিশেষ করে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর হতে বের না হতে ও একজনের থেকে আরেকজনের নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখার আহŸান জানান। একইসাথে করোনা সতর্কতায় স্বাস্থ্যবিধি সকলকে মেনে চলারও পরামর্শ দেয়া হয়। রয়েছে পুলিশী টহল।
খুলনা ব্যুরো জানায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জেলা প্রশাসনকে সহায়তার জন্য খুলনায় মাঠে নেমেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মহানগর ও জেলার সড়ক এবং অলি-গলিতে টহল দিচ্ছেন তারা। খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সেনাবাহিনীর ৬ প্লাটুন সদস্য মাঠে নেমেছেন। পরে প্রয়োজন হলে আরও নামানো হবে।
নোয়াখালী ব্যুরো জানায়, বুধবার সন্ধ্যা থেকে সেনাবাহিনী নোয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে টহল শুরু করেছে। মূলত: এখন সড়ক মহাসড়ক জনশূন্য। প্রয়োজন ব্যতীত কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেনা। ওষুধ ও বাজারের কিছু দোকান খোলা রয়েছে। সকালে চৌমুহনী বাজারে থেকে লোকজনকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রধান ব্যবসা বাণিজ্য নগরী চৌমুহনী বাজার অনেকটা ফাঁকা রয়েছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
জেলা সদরের সাথে মেঘনা বেষ্ঠিত হাতিয়া উপজেলার যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে। নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সিলেট ব্যুরো জানায়, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইর হচ্ছে না, নগরীতে গাড়ি চলাচল হাতেগোনা। জনশূন্য ভূমি, ঘরে-বাইরে সবখানে আতঙ্ক। সিলেট নগরীসহ সকল উপজেলায় টহলে নেমেছে সেনাবাহিনী। সিলেট নগরীর বন্দর, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা ও সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বিশ্বনাথসহ অন্যান্য উপজেলায় সেনাবাহিনীকে টহল দিতে ও বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে ঘর থেকে বের না হতে পরামর্শ দিতে দেখা যায়। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সামাজিক সঙ্গ নিরোধ এবং হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী।
বিশেষ সংবাদদাতা কক্সবাজার, থেকে জানান, কক্সবাজারে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সহযোগিতায় মাঠে নেমেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের সদস্যরা। সকালে রামু সেনানিবাস (১৪ বীরের) টুআইসি মেজর আরিফ এবং জেলা প্রশাসনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সারের যৌথ নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একাধিক গাড়ি শহরের প্রধান সড়কসহ প্রতিটি এলাকাতে টহল দিতে দেখাগেছে। এসময় সেনাসদস্যরা মাইকিং করে, লিফলেট বিতরণ করে এবং বাহিরে অবস্থানরত লোকদের ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য তাগিদ দেন। এ ছাড়া রাস্তাঘাটসহ যে কোনো জায়গায় বেশি লোকজন যেন সমবেত হতে না পারে তারা সেদিকে নজর রাখছেন। সেনাবাহিনী মাঠে নামার পর থেকেই সাধারণ মানুষের বাহিরে আসার প্রবণতা কমে এসেছে। রাস্তাঘাটে খুব কম সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। অনেক এলাকা প্রায় জনমানবশূন্য। গোটা জেলায় রাস্তাঘাট ফাঁকা জনমানব শূন্য হয়ে পড়েছে।
বগুড়া ব্যুরো জানায়, পুরোদমে সেনাবাহিনীর টহল শুরু হওয়ায় বগুড়া শহরের রাস্তা ঘাট ফাঁকা হয়ে পড়েছে। বাজারেও ক্রেতার সমাগম ছিল কম। সাধারণ মানুষ সেনাবাহিনীর টহলকে ইতিবাচক চোখে দেখছে। তারা মনে করেন, সরকার ঘোষিত ছুটির সময়টা ঘরে বসে কাটালে করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারবেনা।
দিনাজপুর অফিস জানায়, করোনাভাইরাস সংক্রোমন ঠেকাতে সারাদেশের ন্যায় সকাল থেকে দিনাজপুরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে। শহরে তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে সেনাবাহিনী মাইকে প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাহিরে না আসা এবং একসাথে একের অধিক ব্যাক্তির চলাচল ও সমাগমের ব্যাপারে জনগনকে সচেতন করছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর উদ্যোগে জীবানু নাশক স্প্রে করা হচ্ছে।
স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা থেকে জানান, কুমিল্লা নগরীতে কমেছে জনসমাগম। সেনা টহল শুরু ও দোকানপাট, মার্কেট, শপিংমল বন্ধ ঘোষণার পর থেকে নগরীতে মানুষের চলাচল একেবারে সীমিত হয়ে পড়েছে। কেবল নগরীই নয়, সকল পাড়া মহল্লায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া অন্যসব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। দু’দিন ধরে সরকারি নির্দেশনার প্রতি কুমিল্লার আপামর জনসাধারণের সমর্থন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘর ছেড়ে বাইরে আসছেনা।
কুমিল্লা সেনানিবাসের ৩১ বীর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্নেল মাহবুব আলম জানান, সামাজিক দূরত্ব সৃষ্টির জন্য সেনা সদস্যরা যে সব যায়গায় জনসমাগম হয় সেসব জায়গায় টহল জারি রেখেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত সেনা টহল কার্যক্রম বহাল থাকবে।
কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, কুষ্টিয়া জেলার ছয়টি উপজেলায় সেনা টহল দেয়ায় মানুষের মধ্যে আস্থা ও স্বস্তিবোধ পরিলক্ষিত হচ্ছে। গত মঙ্গলবারে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আসাদুল জামান তাপসের নেতৃত্বে ছয়জন মেজর ও ২৫০ সেনা সদস্য করোনা ভাইরাস রোধে জেলা প্রশাসন, র্যাব, পুলিশের সহায়তার লক্ষে কু্ষ্িটয়ায় আগমন করেন। পরদিন লেফটেন্যান্ট কর্নেল আসাদুল জামান তাপস কুষ্টিয়া ডেপুটি কমিশনার (ডি.সি.) মো. আসলাম হোসেনের সাথে বৈঠক করেন। সাধারণ মানুষ সেনাবাহিনীর টহলকে ইতিবাচক চোখে দেখছে। তারা মনে করেন, সরকার ঘোষিত ছুটির সময়টা ঘরে বসে কাটালে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারবেনা।
রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেনা, র্যাব ও পুলিশের তৎপরতায় রংপুর মহানগরী একেবারেই ফাঁকা হয়ে গেছে। দু’ চারটি রিক্সা-অটোরিক্সা ছাড়া সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ আছে। ফলে রাস্তাগুলো প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে। দিনভর মাইক যোগে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে নগরবাসীকে অবহিত করা হচ্ছে। শুধু রংপুর মহানগরীতে নয়, জেলার প্রতিটি উপজেলা ও গ্রাম পর্যায়ে এধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা জানান, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারনে ঝালকাঠিতে রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া সকল প্রকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, জরুরি সেবাপ্রদানকারী দপ্তর ছাড়া সকল সরকারি-বেসরকারি অফিস এবং যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এদিকে জনসাধারণকে বাসায় থাকার আহŸান জানিয়ে প্রচারণা শুরু করেছে সেনাবাহিনীর টহলদল।
শহরে সিএনজিতে ৫ এর অধিক যাত্রী পরিবহন ও পথচারীদের দল বেধে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দুপুর ১২ টার দিকে র্যাব ও পুলিশের টহল দল বাহাদুরবাজারসহ বিভিন্ন মৃদু লাঠিচার্জ করে সাধারন মানুষকে ঘরমুখী করার চেষ্টা চালিয়েছে
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামেসেনা টহল শুরু ও দোকানপাট, মার্কেট, শপিংমল বন্ধ ঘোষণার পর থেকে নগরীতে মানুষের চলাচল একেবারে সীমিত হয়ে পড়েছে। গতকাল বিভিন্ন স্থানে বিøচিং পাউটার স্পে করা হয়। এ সময় নেতেত্ব দেন কাশিনগরের চেয়ারম্যান মোশাররেফ হোসেন, চৌদ্দগ্রাম থানার এস আই আরিজংর রহমান সহ আরো অনেক। এছাড়াও উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নে নকডাইন করতে চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি আবদুল্লা আল মাহাফুজের নেত্বেতে পুলিশ ঢহল জোরদার করা হয়েছে।
কেশবপুর উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কেশবপুর শহরে মুদি ওষুধের দোকান ছাড়া সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। প্রশাসনের সহয়াতায় সেনাবাহিনী রাস্তায় নেমে জনসাধারনকে মাস্ক ব্যবহারে তদারকি করেন ও শহরে ফায়ার সার্ভিস জীবানুনাশক ছিটিয়েছে। বেলা সাড়ে এগারোটাই শহরের গাজির মোড়ে ক্যাপ্টেন সাইফুলের নেতৃতে একদল সেনা সদস্য রাজপথে চলাচলকারি জনসাধারনে মধ্যে যাদের মাস্ক ছাড়া বাহির হয়েছেন তাদের কে মাস্ক না থাকলে বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন। এসময় আবার অনেক অসহায় গরীব পথচারী বা বৃদ্ধ ভ্যান চালকদের সেনাবাহিনী থেকে বিনা মূল্যে মাস্ক সরবারহ করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।