পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গভীর রাতে সাংবাদিককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের পর জেল-জরিমানার ঘটনায় ওএসডি হওয়া কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোছা. সুলতানা পারভীনসহ ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২৩ মার্চ এ মামলা দায়ের করা হয়। অপর তিন কর্মকর্তা হলেন সহকারী সচিব নাজিম উদ্দিন, রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এস এম রাহাতুল ইসলাম। এছাড়াও তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার বিভাগীয় মামলা দায়ের প্রসঙ্গে বলেন, ডিসিসহ চারজনকে জনপ্রশাসনে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করা হয়েছে। ওএসডি থাকাকালে তাদের বেতন বন্ধ থাকবে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। ওখান (কুড়িগ্রাম) থেকেও একটি মামলা হবে।
ফরহাদ হোসেন বলেন, জামালপুরের জেলা প্রশাসকের (নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা) মতো এরপর তাদের শুনানির সম্মুখীন হতে হবে। দোষের মাত্রা ও সার্ভিস রুলস অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জনপ্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, গত ২৩ মার্চ চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। গত ১৩ মার্চ মধ্যরাতে কুড়িগ্রামের স্থানীয় সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে বাড়ির দরজা ভেঙে তুলে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক বছরের জেল দেয়ার ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়। অতঃপর ডিসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সারাদেশের সাংবাদিকরা মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে হাইকোর্টেও রিট করা হয়। আদালত ভ্রাম্যমান আদালতের সাজা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং বিচারিক কাজের যাবতীয় নথি তলব করেন। অতঃপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১৫ মার্চ ডিসি সুলতানা পারভীনসহ চারজনকে জনপ্রশাসনে ওএসডি করা হয়।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, মামলা শুনানি শেষে তাদের ব্যবস্থা নেয়া হবে। মোছা. সুলতানা পারভীন, নাজিমুদ্দিনসহ দুই-তিন জনের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমাদের তদন্ত শেষে দুদককেও বলবো তাদের দুর্নীতি তদন্ত করার জন্য। তিনি বলেন, নাজিম উদ্দিন উখিয়াতেও ঝামেলা করেছিল। একজন ছোট অফিসার জয়েন করে কোটি টাকা কামাই করেছে, এটা মানা যায় না। তাদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা থাকবে। এটা উদাহরণ হবে সবার জন্য। তাদেরকে শাস্তি দিয়ে অন্যকে শেখানো যে দুর্নীতিকে এই সরকার টলারেন্স করবে না। আমরা জনমুখী ও জনবান্ধব প্রশাসন গড়বো।
সাজার নথির অসঙ্গতি সংশোধনের সুযোগ বন্ধ
এদিকে কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে ভ্রাম্যমান আদালতের দেয়া সাজার রেকর্ডপত্র সংশোধনের সুযোগ বন্ধ করলেন হাইকোর্ট। ফলে ওই সাজা প্রদানের ক্ষেত্রে যেসব অসঙ্গতি ছিলো তা হুবহু নথিতে থেকে যাচ্ছে। আর এর ভিত্তিতেই রিটের শুনানি, রায় প্রদান এবং নিষ্পত্তি হবে। ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের দেয়া আদেশের সত্যায়িত অনুলিপি প্রকাশের কথা জানিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রিটের অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। গতকাল বৃহস্পতিবার টেলিফোনে তিনি বলেন, আদেশ দানকারী বিচারপতিদের স্বাক্ষরের পর গত ২৫ মার্চ এ রিট মামলার আদেশের সত্যায়িত অনুলিপি হাতে পেয়েছি। আদালত তার আদেশে বলেছেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, কুড়িগ্রামের মোবাইল কোর্ট মামলার মূল নথি তলবকৃত নথি হিসেবে অত্র (এ রিট মামলার) রুলের সাথে (শুনানির জন্য) সংযুক্ত থাকবে। এর ফলে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে সাজা দেয়ার ঘটনায় ইতোমধ্যে হাইকোর্টে যেসব অঙ্গতিপূর্ণ নথি পাঠানো হয়েছে তা আর অদল-বদলের সুযোগ থাকছে না। হাইকোর্ট তার আদেশে বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে শাস্তি দেয়ার পুরো প্রক্রিয়া কেন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না, এই আদালত কর্তৃক সঠিক এবং যথাযথ মনে করলে অন্যান্য বা অতিরিক্ত আদেশগুলো কেন প্রদান করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হলো। রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কুড়িগ্রামের মোবাইল কোর্ট মামলা নং-০৬/২০২০ এ প্রদত্ত গত ১৪ মার্চের ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদÐ ও ৫০ হাজার টাকার অর্থদÐ প্রদান এবং অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদÐাদেশ স্থগিত করা হলো। আদালত আরও বলেন, কুড়িগ্রামের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সম্মুখে বিচারাধীন আপিল মামলা নং-০৯/২০২০ এর সকল কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হলো। সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে নির্যাতনের ঘটনায় কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসিসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ এজাহার হিসাবে গ্রহণ করতে কুড়িগ্রামের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ প্রদান করা হলো। একইসঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে দেয়ার সাজার কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কড়িগ্রামের মোবাইল কোর্ট মামলা নং- ০৬/২০২০ এর মূল নথি তলবকৃত নথি হিসেবে অত্র (এ রিট মামলার) রুলের সাথে (শুনানির জন্য) সংযুক্ত থাকবে। আগামি ৪ সপ্তাহের মধ্যে ওইসব রুলের জবাব দিতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।